ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) টিম ইন্ডিয়ার খেলোয়াড়দের ফিটনেস এবং অ্যারোবিক ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ব্রঙ্কো টেস্ট শুরু করেছে। এই টেস্ট বিশেষভাবে খেলোয়াড়দের শারীরিক ক্ষমতা, স্ট্যামিনা এবং গতি পরিমাপের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
স্পোর্টস নিউজ: ভারতীয় ক্রিকেট দলের ফিটনেসকে নতুন স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিসিসিআই রাগবি কেন্দ্রিক ব্রঙ্কো টেস্ট চালু করেছে। এই টেস্টের মূল উদ্দেশ্য খেলোয়াড়দের অ্যারোবিক ক্ষমতা এবং স্ট্যামিনা বাড়ানো। এই প্রক্রিয়ায় খেলোয়াড়দের ক্রমাগত ২০, ৪০ এবং ৬০ মিটারের শাটল রান করতে হয়, যার ফলে তাদের রানিং ক্ষমতা, সহনশীলতা এবং শারীরিক ফিটনেসের উন্নতি হয়।
বিসিসিআই এই পদক্ষেপ নিয়েছে কারণ আধুনিক ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের শারীরিক ফিট থাকা এখন লম্বা সময় ধরে ভালো ফর্মে খেলার জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। টিম ইন্ডিয়ার স্ট্রেন্থ এবং কন্ডিশনিং কোচ এড্রিয়ান লে রু এই টেস্ট নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁর বিশ্বাস, ফাস্ট বোলারদের শুধু জিমের ওপর মনোযোগ না দিয়ে রানিং এবং কার্ডিও ওয়ার্কআউটের ওপর বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত, যাতে ম্যাচের সময় তাদের স্ট্যামিনা এবং সহনশীলতা বাড়ে।
ব্রঙ্কো টেস্ট: কী এবং কীভাবে হয়
ব্রঙ্কো টেস্টকে রাগবি-সেন্ট্রিক পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে। এতে খেলোয়াড়কে ক্রমাগত ২০, ৪০ এবং ৬০ মিটারের শাটল রান করতে হয়। এই তিনটি দূরত্ব মিলে একটি সেট তৈরি হয় এবং খেলোয়াড়কে ৫টি সেট ক্রমাগত পুরো করতে হয়। সব মিলিয়ে খেলোয়াড়কে ৬ মিনিটের মধ্যে পুরো টেস্ট শেষ করতে হয়। বিসিসিআইয়ের স্ট্রেন্থ এবং কন্ডিশনিং কোচ এড্রিয়ান লে রু এই টেস্টের প্রস্তাব দিয়েছেন।
তাঁর বক্তব্য, এই টেস্টের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের অ্যারোবিক ক্ষমতা এবং দীর্ঘ সময় ধরে দৌড়ানোর ক্ষমতা বাড়ে। এড্রিয়ান চান, ফাস্ট বোলাররা শুধু জিমে ওয়ার্কআউট করার ওপর মনোযোগ না দিয়ে, বরং ফিল্ডে ক্রমাগত দৌড়ানোর ক্ষমতার ওপর ফোকাস করুক।
ব্রঙ্কো টেস্ট এবং ইয়ো-ইয়ো টেস্টের মধ্যে পার্থক্য
ব্রঙ্কো টেস্টের শুরু মূলত টিম ইন্ডিয়া এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া টেস্ট সিরিজের পর হয়েছে। এই সিরিজে ভারতীয় ফাস্ট বোলারদের ফিটনেস টপ লেভেলে ছিল না। উদাহরণস্বরূপ, মহম্মদ সিরাজ ছাড়া আর কোনো ফাস্ট বোলার পাঁচটি টেস্ট খেলেননি। ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীরও এই টেস্টের পক্ষে।
তাঁর বক্তব্য, দীর্ঘ সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে হলে খেলোয়াড়দের শারীরিকভাবে ফিট এবং স্ট্যামিনায় শক্তিশালী হওয়া জরুরি। বিসিসিআই আগে থেকেই ইয়ো-ইয়ো টেস্ট এবং ২ কিলোমিটার টাইম ট্রায়াল ফিটনেস টেস্ট রাখে। তবে ব্রঙ্কো টেস্ট, ইয়ো-ইয়ো টেস্ট থেকে আলাদা।
- ব্রঙ্কো টেস্ট: এতে খেলোয়াড়কে ২০, ৪০ এবং ৬০ মিটারের শাটল রান ক্রমাগত করতে হয়। এই টেস্ট অ্যারোবিক ক্ষমতা এবং স্পিড স্ট্যামিনার ওপর ফোকাস করে।
- ইয়ো-ইয়ো টেস্ট: এতে খেলোয়াড়কে সার্কুলার রানিং করতে হয়। এতে একটি মূল লাইন এবং দুটি সাইডলাইন থাকে, এবং যত লেভেল বাড়ে, কঠিনতাও বাড়তে থাকে। ইয়ো-ইয়ো টেস্ট এন্ডুরেন্স এবং রেসপন্স টাইম মাপে।
দুটোই টেস্ট খেলোয়াড়দের ফিটনেস বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে ব্রঙ্কো টেস্ট স্পিড এবং শাটল রান ক্ষমতার ওপর বেশি মনোযোগ দেয়। বিসিসিআইয়ের বিশ্বাস, ব্রঙ্কো টেস্টের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের কন্ডিশনিং এবং অ্যারোবিক ক্ষমতা আরও ভালো হবে। ফাস্ট বোলাররা দীর্ঘ সময় ধরে খেলতে পারবে এবং বোলিংয়ে ক্রমাগত উচ্চ পারফর্মেন্স করতে পারবে।