মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক স্টার্টআপ সংস্থা 'ম্যারাথন ফিউশন' দাবি করেছে, তারা পারদ (Mercury) থেকে সোনা তৈরি করতে পারবে। তাদের লক্ষ্য বছরে ৫,০০০ কেজি সোনা উৎপাদন করা। এই চাঞ্চল্যকর দাবি সোনার বাজারে তীব্র আলোড়ন ফেলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
১ লাখে পৌঁছেছে ১০ গ্রাম! হুড়মুড়িয়ে বেড়েছে সোনার দাম
সীমিত সোনার জোগানে দাম ছুঁয়েছে আকাশ পৃথিবীতে সোনা খুব সীমিত পরিমাণে পাওয়া যায়। সেই কারণেই এই ধাতুর কদর সর্বত্র। চলতি বছরে সোনার দাম এক লাফে পৌঁছে গিয়েছে ১০ গ্রামে ১ লাখ টাকায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উল্লম্ফনের পেছনে রয়েছে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, মার্কিন মুদ্রার দোলাচল ও বিনিয়োগে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার প্রবণতা।
নিউক্লিয়ার ফিউশনেই সোনার চাবিকাঠি ম্যারাথনের নতুন প্রযুক্তির হদিশ
সান ফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক ম্যারাথন ফিউশন জানিয়েছে, তারা নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রযুক্তির মাধ্যমে পারদকে সোনায় রূপান্তরিত করার একটি পদ্ধতি তৈরি করেছে। এই প্রক্রিয়া অনুযায়ী, প্রতি বছর অন্তত ৫,০০০ কেজি সোনা উৎপাদন সম্ভব। তবে এই প্রযুক্তি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে।
Mercury-197 থেকে Gold-197!
রসায়নের ছকে বিপ্লবের ইঙ্গিত ম্যারাথনের দাবি, ফিউশন রিঅ্যাক্টরে পারদকে রেডিওঅ্যাক্টিভ রূপে রূপান্তর করে Mercury-197 তৈরি করা যায়, যা পরবর্তীতে পরিণত হয় Gold-197-এ। এই সোনা উৎপাদন কোনও মূল ফিউশন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত না করে ‘বাই-প্রোডাক্ট’ হিসেবে তৈরি হতে পারে।
তেজস্ক্রিয় হবে কি এই সোনা?
ব্যবহারের আগে সতর্কতা অপরিহার্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন প্রক্রিয়ায় তৈরি সোনায় থাকতে পারে কিছু অস্থির আইসোটোপ, যা একে তেজস্ক্রিয় করে তুলতে পারে। অর্থাৎ, সাধারণ গয়না বা শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহারের আগে এই সোনার তেজস্ক্রিয়তা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক হতে পারে।
১৪-১৮ বছর লাগবে তেজস্ক্রিয়তা কাটাতে
স্টোরেজ ছাড়া কোনও উপায় নেই ম্যারাথন ফিউশনের চিফ টেকনোলজি অফিসার অ্যাডাম রুটকভস্কি জানিয়েছেন, এই সোনাকে radiation-free করতে হলে কমপক্ষে ১৪ থেকে ১৮ বছর সংরক্ষণে রাখতে হবে। তার আগে এই সোনাকে ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি থেকে যাবে।
১০০ লক্ষ ডলারের তহবিল! কিন্তু এখনও স্বপ্নের পর্যায়ে
আশা-ভরসার মাঝেও বাস্তব অনেক দূরে ম্যারাথন ফিউশন ইতিমধ্যেই ৬০ লক্ষ ডলার ব্যক্তিগত বিনিয়োগ এবং ৪০ লক্ষ ডলার সরকারি অনুদান সংগ্রহ করেছে। এই অর্থে তারা একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ফিউশন রিঅ্যাক্টর তৈরি করছে। তবে, এখনও পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তাই সাধারণ মানুষের কাছে এই সোনা আসতে এখনও বহু পথ বাকি।