ভারতের অর্থনীতি: ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধ, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাজারের অনিশ্চয়তার মাঝেও ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার নিয়ে আশাবাদী কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন। তাঁর মতে, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি ৭ শতাংশ ছুঁতে পারে। পাশাপাশি তিনি সতর্ক করেছেন নতুন সাইবার অপরাধ ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর বিরুদ্ধে, যা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার স্থিতি নাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রকের সচিব এম নাগারাজু জানিয়েছেন, দেশের ব্যাঙ্কিং খাত এখন ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

শুল্ক যুদ্ধেও আশাবাদী ভারতীয় অর্থনীতি
ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রভাব পড়লেও, ভারত তার আর্থিক গতিপথে দৃঢ়ভাবে এগোচ্ছে। ভি অনন্ত নাগেশ্বরনের মতে, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি হার ৭ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির তুলনায় যথেষ্ট ইতিবাচক।তিনি জানান, ভারতীয় অর্থনীতির শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক ব্যবস্থাই এই বৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি।
ব্যাঙ্কিং সেক্টর এখন ইতিহাসে ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’
অর্থ মন্ত্রকের সচিব এম নাগারাজু বলেন, “ভারতের ব্যাঙ্কিং খাত এখন ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থায়।”গত দুই অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির রেকর্ড লাভ প্রমাণ করেছে যে, দেশের আর্থিক কাঠামো এখন অনেক বেশি স্থিতিশীল। এসবিআই চেয়ারম্যান সি এস শেট্টির মতে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (MSME) এবং কৃষি ঋণক্ষেত্রে ১৬–১৭ শতাংশ বৃদ্ধি হচ্ছে, যা অর্থনীতিকে নিচু স্তর থেকে শক্তি জোগাচ্ছে।

কর্পোরেট ঋণ কমলেও নগদে ভরপুর সংস্থা
এসবিআই চেয়ারম্যান জানান, কর্পোরেট ঋণ কিছুটা হ্রাস পেলেও সংস্থাগুলির হাতে নগদের পরিমাণ যথেষ্ট। এতে আর্থিক ঝুঁকি কমেছে। তাঁর মতে, আগামী দিনে প্রাইভেট ক্যাপেক্স বা বেসরকারি বিনিয়োগ আবারও চাঙা হবে, কারণ অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ছে।অন্যদিকে, জিও ফিনান্সিয়ালের কেভি কামাথ জানান, প্রযুক্তি আজ সাধারণ মানুষকে ব্যাংক থেকে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের পথে নিয়ে যাচ্ছে— যা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির নতুন যুগ সূচিত করছে।
ডিজিটাল অ্যারেস্ট নিয়ে সতর্কবার্তা
ভি অনন্ত নাগেশ্বরন বলেন, সাম্প্রতিক কালে বেড়ে চলা ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ নামের সাইবার অপরাধ ব্যাঙ্কিং খাতের জন্য বড় বিপদ। এই প্রতারণার মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা ভুয়ো কলে নিজেকে পুলিশ বা আর্থিক সংস্থার প্রতিনিধি বলে পরিচয় দিয়ে গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। তিনি সতর্ক করেন, এটি ব্যাংকিং ব্যবস্থার মূল কাঠামোকেই দুর্বল করতে পারে, তাই গ্রাহকদের সচেতন থাকা জরুরি।
জিডিপি বাড়ানোর রূপরেখা ও লক্ষ্য
আরবিআই-এর ডেপুটি গভর্নর পুনম গুপ্তার মতে, “৬.৫ থেকে ৬.৮ শতাংশ জিডিপি আমাদের শেষ লক্ষ্য নয়।”তিনি জানান, ভারতকে আগামী দশকে টেকসই ৮ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধির পথে আনতে হলে বিনিয়োগ, উৎপাদন ও প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থানের ওপর জোর দিতে হবে। সরকারও আগামী বাজেটে সেই লক্ষ্যে নতুন নীতি আনতে পারে।

মার্কিন শুল্ক যুদ্ধ ও বৈশ্বিক অস্থিরতার মধ্যেও ভারতের অর্থনীতি ছন্দে। কেন্দ্রীয় প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরনের মতে, চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধি ৭ শতাংশে পৌঁছতে পারে। অন্যদিকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি। অর্থ মন্ত্রকের সচিব জানালেন, ব্যাঙ্কিং খাত এখন ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী পর্যায়ে।












