মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের মহিলা আইপিএস অফিসারের সঙ্গে বিতর্কিত ভিডিও ভাইরাল। বিরোধীরা পদত্যাগের দাবি করছে। পওয়ার বলেছেন, আমার উদ্দেশ্য কোনও অফিসারের কাজে হস্তক্ষেপ করা ছিল না।
মুম্বাই: মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে অজিত পওয়ার এক মহিলা আইপিএস অফিসারের সঙ্গে কথা বলছেন, যা বিরোধী দল এবং সমাজকর্মীরা গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। এই ঘটনার পর রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক কর্মীরা অজিত পওয়ারের পদত্যাগের দাবি করছেন।
ভিডিওতে উপমুখ্যমন্ত্রীকে অফিসারকে ব্যবস্থা বন্ধ করার নির্দেশ দিতে দেখা গেছে, যা এই বিষয়টি আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অজিত পওয়ার পরে স্পষ্ট করেছেন যে তাঁর উদ্দেশ্য কোনও অফিসারের কাজে হস্তক্ষেপ করা ছিল না এবং তাঁর উদ্দেশ্য কেবল শান্তি বজায় রাখা ছিল।
ঘটনার সম্পূর্ণ বিবরণ
ঘটনাটি ৪ সেপ্টেম্বর সোলারপুর জেলার কুড়দু গ্রামে ঘটে। পুলিশ অফিসার অঞ্জনা কৃষ্ণা খবর পান যে গ্রামের কিছু লোক অবৈধভাবে বালি-নুড়ি তুলছে। এরপর তিনি তাঁর দল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ নেন।
গ্রামবাসীদের মধ্যে একজন এই ঘটনার পর সরাসরি উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারকে ফোন করে তথ্য দেন। এরপর অজিত পওয়ার এবং আইপিএস অফিসার অঞ্জনা কৃষ্ণা-র মধ্যে কথা হয়। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে অজিত পওয়ার অফিসারকে বলছেন, "তোমার এত সাহস যে তুমি আমাকে চিনতে পারছ না। আমি তোমার ওপর ব্যবস্থা নেব।" এরপর তিনি অফিসারকে তাঁর নম্বর নিয়ে ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলেন।
বিরোধী এবং সমাজকর্মীদের প্রতিক্রিয়া

ভাইরাল ভিডিওর পরে বিরোধী দল এবং সমাজকর্মীরা অজিত পওয়ারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। শিবসেনা (ইউবিটি)-র মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেছেন যে ভাইরাল ভিডিও থেকে স্পষ্ট যে উপমুখ্যমন্ত্রী কোনও চোর বা অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত ব্যক্তিদের রক্ষা করেছেন। তিনি অজিত পওয়ারের পদ থেকে পদত্যাগ করার দাবি জানিয়েছেন।
সমাজকর্মী অঞ্জলি দামানিয়াও অজিত পওয়ারকে পদ ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, এই ধরনের আচরণ সরকারি কর্মকর্তা এবং জনগণের মধ্যে বিশ্বাসকে দুর্বল করে।
পুলিশ বিভাগের পদক্ষেপ
এই ঘটনার পর পুলিশ কুড়দু গ্রামে অবৈধভাবে বালি-নুড়ি তুলছিল এমন প্রায় এক ডজন লোকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে। এর মধ্যে সেই এনসিপি কর্মীও অন্তর্ভুক্ত, যিনি উপমুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে যে সকল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা রোধ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অজিত পওয়ারের সাফাই
অন্যদিকে, উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার এই পুরো বিতর্ক নিয়ে তাঁর সাফাই দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে তাঁর উদ্দেশ্য কোনও সরকারি অফিসারের কাজে হস্তক্ষেপ করা ছিল না। তিনি বলেন, "আমি চাইনি সেখানে পরিস্থিতি খারাপ হোক। আমি অফিসারকে কেবল শান্তি বজায় রাখতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কথা বলেছি।"
অজিত পওয়ারের দল, এনসিপি-র রাজ্য সভাপতি সুনীল তটकरेও তাঁকে রক্ষা করেছেন। তিনি বলেছেন যে উপমুখ্যমন্ত্রী যদি কোনও জনগুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য অফিসারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেন, তবে এতে কোনও ভুল নেই। তিনি এটিকে 'জনতা দরবার'-এর অংশ বলে অভিহিত করেছেন, যেখানে মন্ত্রীরা প্রায়শই অফিসারদের সরাসরি কাজ করার নির্দেশ দেন।












