ব্রেস্ট ক্যান্সার এখন ৩০-৪০ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যেও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এর প্রধান কারণ হল খারাপ খাদ্যাভ্যাস, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অ্যালকোহল এবং ধূমপান। কিছু গবেষণায় কসমেটিক প্রোডাক্টে থাকা রাসায়নিক পদার্থগুলিকেও ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং সতর্কতার মাধ্যমে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
Breast cancer awareness month: ব্রেস্ট ক্যান্সার এখন তরুণী মহিলাদের মধ্যে দ্রুত বাড়ছে, বিশেষ করে ৩০-৪০ বছর বয়সে। দিল্লির আরএমএল হাসপাতালের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. সালোনি চাড্ডার মতে, এর প্রধান কারণ হলো খারাপ খাদ্যাভ্যাস, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অ্যালকোহল এবং ধূমপান। কিছু গবেষণায় কসমেটিক প্রোডাক্টে থাকা রাসায়নিক পদার্থগুলিকেও ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে, তবে এর সরাসরি সম্পর্ক এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে স্তনে পিণ্ড, আকারের পরিবর্তন, ত্বকে গর্ত এবং স্তনবৃন্তের ভেতরের দিকে বেঁকে যাওয়া, যা শনাক্ত করে সময়মতো প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
কম বয়সে ব্রেস্ট ক্যান্সার কেন বাড়ছে
দিল্লির আরএমএল হাসপাতালের মহিলা রোগ বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. সালোনি চাড্ডা জানান যে, কম বয়সে ব্রেস্ট ক্যান্সার বাড়ার প্রধান কারণ হলো খারাপ খাদ্যাভ্যাস এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। এই বয়সে মহিলাদের মধ্যে ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবনের প্রবণতাও বেড়েছে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
ড. সালোনি-র মতে, এখন আগের তুলনায় রোগ নির্ণয় বেশি হচ্ছে এবং মহিলারা এই রোগ সম্পর্কে আরও সচেতন হচ্ছেন। এই কারণেই ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী অনেক মহিলার মধ্যেও ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়ছে।
কসমেটিক প্রোডাক্ট কি ঝুঁকির কারণ?
কিছু গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে কসমেটিক প্রোডাক্টে থাকা রাসায়নিক পদার্থ শরীরে প্রবেশ করে ইস্ট্রোজেন হরমোনের কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে। এই হরমোন স্তনের টিস্যুগুলির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এমন পরিস্থিতিতে যদি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, তাহলে টিউমারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
ইউকে-তে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, কসমেটিক প্রোডাক্টগুলিতে প্রিজারভেটিভ এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা ত্বকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তবে, গবেষণায় এও বলা হয়েছে যে এই বিষয়ে মানব গবেষণা সীমিত এবং এর ফলাফল সম্পূর্ণরূপে স্পষ্ট নয়। এর মানে এই নয় যে এই প্রোডাক্টগুলি সরাসরি ক্যান্সারের কারণ, তবে এদের অত্যধিক ব্যবহার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ
মহিলাদের নিম্নলিখিত লক্ষণগুলির প্রতি তাদের শরীরে মনোযোগ দেওয়া উচিত:
- স্তনের ভিতরে বা আশেপাশে যেকোনো ধরনের পিণ্ড।
- স্তনের আকার বা আকৃতিতে পরিবর্তন।
- স্তনের ত্বকে গর্ত বা টানটান ভাব।
- স্তনবৃন্তের ভেতরের দিকে বেঁকে যাওয়া বা অস্বাভাবিক পরিবর্তন।
ড. সালোনি বলেন যে এই লক্ষণগুলিকে অবহেলা করা উচিত নয়। প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসার মাধ্যমে ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
সচেতনতা এবং সময় মতো পরীক্ষা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, কম বয়সে ব্রেস্ট ক্যান্সার শনাক্ত করতে নিয়মিতভাবে সেলফ-এক্সাম (স্ব-পরীক্ষা) এবং ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা জরুরি। মহিলাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে এখন আগের তুলনায় বেশি রোগ নির্ণয় হচ্ছে। এর ফলে রোগের প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে।