গুরুগ্রামের রাগিনী দাস তাঁর কর্মজীবনের অসাধারণ গল্প দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্য থাকলে যেকোনো স্বপ্ন সত্যি হতে পারে। রাগিনীকে গুগল ইন্ডিয়া সম্প্রতি স্টার্টআপ হেড পদে নিযুক্ত করেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ২০১৩ সালে এই একই গুগল সংস্থা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।
রাগিনী দাস: গুগল কোম্পানিতে চাকরি পাওয়া অনেকেরই স্বপ্ন, এবং এখন এই স্বপ্ন গুরুগ্রামের বাসিন্দা রাগিনী দাসের জন্য সত্যি হয়েছে। গুগল ইন্ডিয়া রাগিনীকে স্টার্টআপ হেড পদে নিযুক্ত করেছে। তবে, আপনি কি জানেন যে ২০১৩ সালে এই একই গুগল সংস্থা রাগিনীকে প্রত্যাখ্যান করেছিল?
রাগিনী নিজে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট শেয়ার করে তাঁর যাত্রার আকর্ষণীয় গল্প বলেছেন। গুগল ইন্ডিয়ার আগে রাগিনী অনেক বড় কোম্পানিতে কাজ করেছেন এবং এছাড়াও তিনি leap.club-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা।
রাগিনীর শিক্ষা ও প্রাথমিক কর্মজীবন
রাগিনী দাস গুরুগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চেন্নাইয়ের চেট্টিানাদ বিদ্যাশ্রম থেকে তাঁর স্কুল শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ল্যাঙ্কাশ্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন রাগিনী চেন্নাই বিদ্যাশ্রমের সাংস্কৃতিক সম্পাদকও ছিলেন। স্নাতক চলাকালীন তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক এবং অন্যান্য বড় প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করেন। এই সময়ে রাগিনী ভারতে বাজার গবেষণা এবং ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরির অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
২০১২ সালে রাগিনী ট্রাইডেন্ট গ্রুপ ইন্ডিয়াতে যোগ দেন এবং ইউরোপ ও আমেরিকায় বিপণনের দায়িত্ব পান। ২০১৩ সালে রাগিনীকে জোম্যাটোর সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। জোম্যাটোতে তাঁর ছয় বছরের কার্যকালে তিনি অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার এবং এরিয়া সেলস ম্যানেজার পদে কাজ করেছেন। ২০১৭ সালে রাগিনী জোম্যাটো গোল্ডের প্রতিষ্ঠাতা দলের অংশ হন এবং ১০টি আন্তর্জাতিক বাজারে জোম্যাটো গোল্ড চালু করেন। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, কাতার এবং লেবাননের মতো দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।
leap.club-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা
২০২০ সালে রাগিনী leap.club-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মহিলাদের স্টার্টআপ ক্ষেত্রে অবদান রাখতে শুরু করেন। তিনি হাজার হাজার মহিলাকে তাঁদের স্টার্টআপ শুরু করতে এবং ব্যবসা বিকাশে সহায়তা করেছেন। এছাড়াও রাগিনী FICCI-এর স্টার্টআপ মহিলা কমিটির সভাপতিও ছিলেন। তিনি মহিলাদের উদ্যোক্তা এবং নেতৃত্ব বিকাশে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
রাগিনীর কর্মজীবনের সবচেয়ে বড় মোড় আসে যখন গুগল ইন্ডিয়া তাঁকে স্টার্টআপ হেড হিসেবে নিযুক্ত করে। এটি তাঁর জন্য একটি ব্যক্তিগত এবং পেশাদার বিজয়, কারণ ২০১৩ সালে এই একই সংস্থা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। রাগিনী এই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন যে, প্রত্যাখ্যান তাঁকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে এবং নিজেকে উন্নত করতে অনুপ্রাণিত করেছিল। আজ তিনি সেই কোম্পানিতে যোগদান করছেন যেটি তাঁকে একসময় সুযোগ দেয়নি।