মহারাষ্ট্রের নির্বাচন সংক্রান্ত একটি বিতর্কিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জেরে নাগপুর পুলিশ, বিকাশশীল সমাজ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (CSDS) আধিকারিক সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
নাগপুর: মহারাষ্ট্র নির্বাচন (Maharashtra Elections 2025) সংক্রান্ত একটি বিতর্কিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের জেরে বিকাশশীল সমাজ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (CSDS) ঊর্ধ্বতন আধিকারিক সঞ্জয় কুমার বিপাকে পড়েছেন। নাগপুর পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) দায়ের করেছে। অভিযোগ, সঞ্জয় কুমার তাঁর অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে ভুল তথ্য শেয়ার করেছেন, যা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারত।
এই বিষয়টি শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ এই ঘটনা ভুয়ো খবর, নির্বাচনী স্বচ্ছতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
পুরো বিষয়টি কী?
রামটেক তহসিলের তহসিলদার রমেশ কোলপের অভিযোগের ভিত্তিতে নাগপুর পুলিশ এই পদক্ষেপ নিয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে, সঞ্জয় কুমার একটি টুইটে লিখেছিলেন যে "লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে ৩৮% ভোট কমেছে।" নির্বাচন সম্পর্কিত এই ভুল তথ্যকে হাতিয়ার করে বিরোধী দলগুলি নির্বাচন কমিশনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এর পরে বিতর্ক আরও বাড়তে থাকে এবং পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধি (BNS) এর ধারা ১৭৫, ৩৫৩, ২১২, ৩৪০ এবং ৩৫৬ এর অধীনে এফআইআর দায়ের করে। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে এই ঘটনার বিষয়ে দিল্লি নির্বাচন কমিশনকেও জানানো হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো যায়।
সঞ্জয় কুমার কী বলেছেন?
এফআইআর দায়ের হওয়ার পরে সঞ্জয় কুমার তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট (X, পূর্বে টুইটার) এ ক্ষমা চেয়ে বলেছেন:
'মহারাষ্ট্রের নির্বাচন সম্পর্কিত পোস্ট করা টুইটের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ২০২৪ লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের পরিসংখ্যানের তুলনা করার সময় ত্রুটি হয়েছিল। আমাদের ডেটা টিম সারিতে দেওয়া পরিসংখ্যান ভুল করে পড়েছিল। টুইটটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার কোনো প্রকার ভুল তথ্য ছড়ানোর কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।'
সঞ্জয় কুমারের এই বিবৃতি থেকে এটা স্পষ্ট যে এটি একটি প্রযুক্তিগত ভুল ছিল, কিন্তু আইনত এটিকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, কারণ নির্বাচনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে ভুল তথ্য সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
নির্বাচন এবং ভুয়ো খবরের বিশ্ব প্রেক্ষাপট
এই বিষয়টি শুধু ভারতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সারা বিশ্বে নির্বাচনের সময় ভুয়ো খবর এবং ভুল তথ্য গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
- আমেরিকা (US Elections 2020): সেখানে নির্বাচনের সময় ভুল তথ্য এবং জাল পরিসংখ্যান রাজনৈতিক মেরুকরণ বাড়িয়েছিল।
- ব্রাজিল (Brazil Elections 2022): হোয়াটসঅ্যাপ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো গুজব নির্বাচনী পরিবেশকে প্রভাবিত করেছিল।
- ইউরোপ: অনেক দেশ নির্বাচনের সময় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির উপর নজরদারি বাড়িয়েছে, যাতে ভুল তথ্য দ্রুত আটকানো যায়।
ভারতবর্ষের মতো গণতান্ত্রিক দেশেও এই বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। বিশেষ করে যখন কোনো वरिष्ठ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত আধিকারিক এই ধরনের ভুল করেন, তখন তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং রাজনৈতিক প্রভাব দুটোই প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়।