বলিউডে পুরুষ অভিনেতাদের ক্রমবর্ধমান বয়স এবং সিনেমায় তাদের চেয়ে অনেক কম বয়সী অভিনেত্রীদের সাথে রোমান্স সবসময়ই আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন ওঠে যে, নারী অভিনেত্রীরা কি নিজেদের বয়স বাড়তে না দেওয়ার চাপ অনুভব করেন?
এন্টারটেইনমেন্ট নিউজ: বলিউডের সুন্দরী ও প্রতিভাবান অভিনেত্রী চিত্রাঙ্গদা সিং (Chitrangda Singh) সম্প্রতি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বয়স, সৌন্দর্য এবং চেহারা নিয়ে একটি অত্যন্ত সঠিক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন যে “প্রত্যেকেই তরুণ দেখানোর চেষ্টা করছে এবং এটি ভুল নয়।” চিত্রাঙ্গদা আরও বলেছেন যে, পুরুষ হোক বা মহিলা, যদি কোনো চরিত্রের বয়স অনুসারে দেখতে হয়, তাহলে সেই অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করা জরুরি।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ক্রমবর্ধমান বয়স এবং চাপ নিয়ে মুখ খুললেন চিত্রাঙ্গদা সিং
বলিউডে প্রায়শই দেখা যায় যে, প্রবীণ পুরুষ অভিনেতারা তাদের থেকে কয়েক বছরের ছোট অভিনেত্রীদের সাথে রোমান্স করেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন ওঠে যে, নারী অভিনেত্রীদের কি বয়স বাড়ার চাপ বেশি সইতে হয়? এই বিষয়ে এইচটি (Hindustan Times)-এর সাথে কথা বলতে গিয়ে চিত্রাঙ্গদা সিং বলেছেন:
'এই চাপ শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য নয়, বরং সবার জন্যই। যদি আপনি ৭০ বছর বয়সী মহিলার চরিত্রে অভিনয় করেন, তাহলে আপনাকে তেমনই দেখতে হবে। আর যদি আপনি ৩০ বছর বয়সী চরিত্রে অভিনয় করতে চান, তাহলে আপনাকে তেমনই দেখতে এবং তেমনই অভিনয় করতে পারতে হবে।'
তাঁর মতে, অভিনয়ের আসল সৌন্দর্য চরিত্রের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ায়, বয়স লুকানোতে নয়।
‘অক্ষয় কুমার তার ফিটনেস দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন’
চিত্রাঙ্গদা আরও বলেছেন যে, বয়সের চাপ শুধুমাত্র অভিনেত্রীদের উপর নয়, অভিনেতাদের উপরও সমানভাবে থাকে। তিনি অক্ষয় কুমার (Akshay Kumar)-এর উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন:
'আক্কি তার ফিটনেস এবং ডায়েটের প্রতি খুব যত্নবান। তিনি তার শরীর এবং চেহারা চরিত্রের চাহিদা অনুযায়ী প্রস্তুত করেন। যখন একজন পুরুষ অভিনেতার জন্য একটি চরিত্র লেখা হয়, তখন তাকে মহিলা চরিত্রের তুলনায় কিছুটা বেশি নমনীয়তা দেওয়া হয় — তবে এর মানে এই নয় যে এতে কোনো পক্ষপাতিত্ব আছে। শেষ পর্যন্ত, ফিল্মকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব দুজনেরই থাকে।'
চিত্রাঙ্গদার বিশ্বাস যে, বর্তমান সময়ে দর্শকরা আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন এবং তারা অভিনয়ের গভীরতা চান, শুধুমাত্র গ্ল্যামার নয়।
‘কারিনা এবং বিদ্যা আজও পর্দায় উজ্জ্বল’
চিত্রাঙ্গদা সিং এই কথোপকথনে কারিনা কাপুর খান (Kareena Kapoor Khan) এবং বিদ্যা বালান (Vidya Balan)-এর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, এই দুই অভিনেত্রী প্রমাণ করেছেন যে, বয়স কখনোই অভিনয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। কারিনা অসাধারণ কাজ করছেন। বিদ্যা বালান ক্রমাগত শক্তিশালী চরিত্রে দেখা দিচ্ছেন। তারা প্রমাণ করেছেন যে, বয়স বা চেহারার চেয়ে অভিনয়ের সত্যতা এবং আত্মবিশ্বাসই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
চিত্রাঙ্গদা আরও বলেছেন যে, এখন সারা বিশ্বের শিল্পীরা নিজেদের ফিট, আত্মনির্ভরশীল এবং আত্মবিশ্বাসী রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি হলিউড অভিনেত্রী নিকোল কিডম্যান (Nicole Kidman) এবং ডেমি মূর (Demi Moore)-এর উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, দেখুন নিকোল কিডম্যান বা ডেমি মূরকে, প্রত্যেকেই তরুণ দেখানোর চেষ্টা করছে। এটি শুধুমাত্র দেখানোর বিষয় নয়, বরং এটি পেশাগত দায়িত্বের অংশ। আপনাকে আপনার চরিত্রের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে ফিট রাখতে হবেই।
‘শিল্পী হওয়ার অর্থই হল ক্রমাগত চাপ সহ্য করা’
চিত্রাঙ্গদা বলেছেন যে, বিনোদন শিল্পে প্রত্যেক শিল্পীকে কোনো না কোনো ভাবে চাপ সইতে হয়। সেটা চেহারার চাপ হোক, অভিনয়ের চাপ হোক বা দর্শকদের প্রত্যাশার চাপ। এই কাজটি এমনই, যেখানে প্রতিনিয়ত আপনার কাছে আরও ভালো দেখতে, আরও ভালো করতে এবং আরও ভালো হওয়ার আশা করা হয়। তবে এটাই এই পেশার সৌন্দর্যও বটে। আপনি প্রতিদিন নিজেকে নতুন করে তোলার সুযোগ পান।