গৌতম গম্ভীরের মন্তব্য: সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় দলের সাবেক ওপেনার ও বর্তমান কোচ গৌতম গম্ভীর জানান, ঘরের মাঠে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে ০-৩ ফলের হার তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয়, কিন্তু অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত ব্যর্থতা। কলকাতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট চলাকালীন তিনি বলেন, আমি কখনও এই ঘটনা ভুলতে পারব না, ছেলেদেরও সেটাই বলেছি। অতীত ভুলে এগোনো জরুরি, কিন্তু অতীত মনে রাখা এবং তা থেকে শিক্ষা নেওয়াও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
ঘরের মাঠে চরম অপ্রত্যাশিত হার
নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ়ে ০-৩ ফলের হার গৌতম গম্ভীরের কেরিয়ারে এক অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে। প্রথমে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা আশা করেছিলেন, ঘরের মাঠের সুবিধা নিয়ে ভারত সহজে সিরিজ়টি জিতবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটে যায় সম্পূর্ণ বিপরীতটা। এই হারের ফলে ভারতীয় দল কোনো ম্যাচও জিততে পারেনি এবং পুরো সিরিজ়কে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। গম্ভীর বলেন, এই হার আমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা, যা ভবিষ্যতের জন্য সতর্কতার সঙ্কেত হিসেবে থাকবে।এই সিরিজ় হার শুধু ফলাফলের দিক থেকে নয়, দলের মনোবল ও প্রস্তুতির জন্যও একটি বড়ো ধাক্কা ছিল। ঘরের মাঠে এই পরাজয় ক্রিকেটপ্রেমীদেরও হতাশ করেছে। তবে গম্ভীর মনে করেন, হারের এই স্মৃতি খেলোয়াড়দের শিখতে সাহায্য করবে, যাতে ভবিষ্যতে তারা কখনও প্রতিপক্ষকে ছোট মনে না করে।
শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা হিসেবে হার
গম্ভীরের মতে, ঘরের মাঠ হোক বা অ্যাওয়ে ম্যাচ, কখনওই প্রতিপক্ষকে হালকা নেওয়া উচিত নয়। তিনি খেলোয়াড়দের বারবার মনে করিয়েছেন যে অতীত ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেওয়াই সাফল্যের চাবিকাঠি। আমরা অতীত ভুলগুলো ভুলে যেতে পারি না, কারণ এগুলো আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান শিক্ষা। এই শিক্ষা ছাড়া বড়ো সাফল্য আসা সম্ভব নয়, বলেছেন গম্ভীর।তিনি আরও বলেছেন, এই হার যুব ক্রিকেটারদের কাছে সতর্কতার বার্তা বহন করে। দলের প্রতিটি সদস্যকে মনে রাখতে হবে, যে কোনও মুহূর্তে প্রতিপক্ষ কোনো সুযোগ হাতছাড়া করবে না। সুতরাং প্রতিটি ম্যাচে শতভাগ মনোযোগ এবং প্রস্তুতি অপরিহার্য।
কোচিং কেরিয়ারের প্রভাব
কলকাতা নাইট রাইডার্স ও ভারতীয় দলের কোচিংয়ে গম্ভীর ইতিমধ্যেই বড়ো সাফল্য অর্জন করেছেন। ICC চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও এশিয়া কাপ জয়ের অভিজ্ঞতা তাঁর কেরিয়ারের উজ্জ্বল অধ্যায়। তিনি দলের জন্য স্ট্র্যাটেজি তৈরি এবং খেলোয়াড়দের মানসিক শক্তি বৃদ্ধির দিকেও মনোযোগী।তবে নিউ জ়িল্যান্ডের এই ঘরের মাঠে হারের অভিজ্ঞতা গম্ভীরকে সতর্ক করেছে যে, কখনও জয়কে নিয়ে আত্মতুষ্ট হওয়া যায় না। তিনি মনে করেন, প্রতিটি ম্যাচে নতুন চ্যালেঞ্জ আসে, এবং প্রতিটি ব্যর্থতা ভবিষ্যতের সাফল্যের মূল ভিত্তি হতে পারে।এই ব্যর্থতা তাঁকে প্রমাণ করেছে যে, কেবল খেলায় দক্ষতা নয়, মানসিক দৃঢ়তা ও দলের সমন্বয়ও জয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গম্ভীর বিশ্বাস করেন, এই শিক্ষা ভারতীয় দলকে আরও শক্তিশালী করবে।
সমর্থকদের জন্য বার্তা
গম্ভীর সমর্থকদের জানিয়েছেন, অতীত ভুলগুলো মনে রাখা এবং তা থেকে শিক্ষা নেওয়া দলের জন্য অত্যন্ত জরুরি। তিনি উল্লেখ করেছেন, খেলোয়াড়রা যদি অতীত ভুল ভুলে যায়, তবে ভবিষ্যতে তাদের গুরুত্ব বোঝা সম্ভব হবে না। তাই খেলোয়াড়দের শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা হিসেবে এই হার মনে রাখতে হবে।তিনি আরও বলেন, এই অভিজ্ঞতা ভারতীয় দলের জন্য ভবিষ্যতের বড়ো সাফল্যের পথ তৈরি করবে। ঘরের মাঠ হোক বা বিদেশের মাটিতে, প্রতিটি ম্যাচকে গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে। তাই তিনি দলের সকল সদস্যকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন।
নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ়ে হারের স্মৃতি গৌতম গম্ভীরের কোচিং জীবনে এখনও তাজা। এই অভিজ্ঞতা ভুলতে চাইছেন না তিনি এবং এটিকে ভবিষ্যতের শিক্ষা হিসেবে ধরে রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। এই ব্যর্থতা তাঁর জন্য শুধু ব্যক্তিগত নয়, দলের জন্যও বড়ো শিক্ষা হিসেবে কাজ করেছে।