ঘাটাল মহকুমা ফের জলমগ্ন। শিলাবতী, কংসাবতী ও অন্যান্য নদীতে জলস্তর বেড়ে ঘাটাল ব্লক, ঘাটাল পুরসভা, চন্দ্রকোনা ও দাসপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। সরকারি ভাবে খোলা হয়েছে ৩০টি ত্রাণশিবির ও নৌকো-ডিঙির ব্যবস্থা। ঘাটালবাসী জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
ব্লক ও ওয়ার্ডে প্লাবন
ঘাটাল মহকুমা প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, শিলাবতী নদীর শাখা কেঠিয়া খালে জলস্তর কমতে শুরু করলেও চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের মানিককুন্ডু, মনোহরপুর ১ ও ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক এলাকা এখনও জলমগ্ন। ঘাটাল ব্লকের ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ঘাটালের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আড়গোড়া সহ মোট ১২টি ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েছে জল।
জলমুক্তির জন্য নৌকো ও ত্রাণশিবির
পুরসভা এলাকায় মানুষজন যাতায়াতের জন্য নৌকো ও ডিঙি ব্যবহার করছেন। সরকারি ভাবে চন্দ্রকোনা ও ঘাটালে ৩০টি নৌকো নামানো হয়েছে। দাসপুরের নাড়াজোল, রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও জলবৃদ্ধির প্রভাব দেখা দিয়েছে। শিলাবতী নদী ছাড়াও রূপনারায়ণ, ঝুমী ও কংসাবতীর জল উপচে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে।
রাস্তা, জমি ও ঘরবাড়ি প্লাবিত
জলের নীচে বিঘার পর বিঘা জমি। একাধিক রাস্তা নদীতে পরিণত হয়েছে। বহু ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। ঘাটাল পুরসভার ১২টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় এখনও জলমগ্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস জানান, “নতুন করে আর কোন নদীতেই জল বাড়েনি। আশা করা যায়, বুধবার থেকে জলস্তর কমতে শুরু করবে।”
বাস্তব অভিজ্ঞতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
এক বছরে ছয়বার বন্যার মুখোমুখি হয়েছেন ঘাটালবাসী। স্থানীয় জগদীশ দোল জানান, গত চার মাস ধরে হাঁটু-জলের মধ্যে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। পুনরায় বৃষ্টি ও নিম্নচাপের কারণে এখনও মুক্তি মেলেনি। অন্যদিকে, তারক মান্না জানান, জলবৃদ্ধির কারণে জলবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে, এমনকি ডেঙ্গি সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। সদ্য জলমুক্ত এলাকা আবারও প্লাবিত হওয়ার ভীতি বিরাজ করছে।
ঘাটালবাসীর জল যন্ত্রণা চলছেই। মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন এবং জলমুক্তি কার্যক্রমের প্রতীক্ষায় তারা। বর্তমানে প্রশাসন ত্রাণ ও নৌকো ব্যবস্থার মাধ্যমে সহায়তা করছে, তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ এখনও জরুরি।