হাইব্রিড ফান্ড: এক ধরনের মিউচুয়াল ফান্ড যা একাধিক অ্যাসেট ক্লাসে বিনিয়োগ করে। অর্থাৎ, স্টক বা ইক্যুইটি, ডেট বা বন্ড, ফিক্সড ইনকাম ইন্সট্রুমেন্ট, এমনকি কমোডিটিতে (যেমন সোনা) একসঙ্গে লগ্নি করে। এই ফান্ডগুলো ঝুঁকি ও রিটার্নের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে বিনিয়োগকারীকে দীর্ঘমেয়াদে লাভ দেয়।
হাইব্রিড ফান্ডের বিশেষত্ব
বিভিন্ন ধরনের অ্যাসেটে বিনিয়োগ: ফান্ডটি একাধিক অ্যাসেটে বিনিয়োগের মাধ্যমে ঝুঁকি কমায়।
ঝুঁকি কমানো: পিওর ইক্যুইটি বা ডেট ফান্ডের চেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ রিটার্ন দেয়।
ডাইভার্সিফিকেশন: বিভিন্ন খাতে লগ্নি করে বাজারের ওঠানামা থেকে রক্ষা পায়।
লং-টার্ম রিটার্ন: নিয়মিত লগ্নি করলে দীর্ঘমেয়াদে ভালো রিটার্নের সুযোগ থাকে।
ফিনান্সিয়াল প্ল্যানার নীলাঞ্জন দে বলেন, ফান্ডের নাম থেকেই বুঝতে পারবেন তার বিনিয়োগের ধরন। যেমন, এগ্রেসিভ ফান্ডে ইক্যুইটির অংশ বেশি থাকে, কনজারভেটিভ ফান্ডে ডেট অংশ বেশি।
হাইব্রিড ফান্ডের ধরন
SEBI-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী হাইব্রিড ফান্ডের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ফান্ড রয়েছে, যেমন:
Aggressive Hybrid Fund: ৬৫-৮০% ইক্যুইটি, বাকি ডেট।
Balanced Hybrid Fund: ৪০-৬০% ইক্যুইটি ও ডেট।
Conservative Hybrid Fund: ৭৫-৯০% ডেট, ১০-২৫% ইক্যুইটি।
Multi-Asset Allocation Fund: অন্তত তিন ধরনের অ্যাসেটে লগ্নি।
Balanced Advantage Fund: বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী অ্যাসেট অ্যালোকেশন পরিবর্তন।
Arbitrage Fund: মূলত কম ঝুঁকির আর্থিক উপায়।
এই ধরনের ফান্ডে লগ্নি করলে শেয়ার বাজারের ভোলাটিলিটি ও ঝুঁকির ধাক্কা থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ পরামর্শ
ফিনান্সিয়াল প্ল্যানার নীলাঞ্জন দে বলেন, “যে ফান্ডে বিনিয়োগ করছেন, তার রিপোর্ট লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ। কোন সংস্থায়, কোন খাতে লগ্নি করা হচ্ছে, তা বোঝা দরকার। হাইব্রিড বা মাল্টি-অ্যাসেট ফান্ডের মাধ্যমে বাজারের ওঠানামা থেকে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ থাকা সম্ভব।তিনি আরও জানান, “নিয়মিত লগ্নি ও পোর্টফোলিও মনিটরিং গুরুত্বপূর্ণ। এতে বিনিয়োগের ঝুঁকি কমে এবং রিটার্নের সুযোগ বৃদ্ধি পায়। নতুন বিনিয়োগকারীরাও এই ফান্ডে ছোট পরিমাণে শুরু করতে পারেন।”
হাইব্রিড ফান্ডের উপকারিতা
ঝুঁকি কমানো: একাধিক অ্যাসেটে লগ্নি হওয়ায় বাজারের ওঠানামা থেকে রক্ষা।
নিয়মিত রিটার্ন: দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল আয়।
বিনিয়োগে ভারসাম্য: পোর্টফোলিওতে ভারসাম্য বজায় রেখে ভালো ফলাফল।
লং-টার্ম সঞ্চয়: SIP বা নিয়মিত লগ্নি করলে ভবিষ্যতে বড় সঞ্চয় সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, হাইব্রিড ফান্ড শুধুমাত্র ঝুঁকি কমায় না, বরং সঞ্চয়ের ধারাবাহিকতাও নিশ্চিত করে। ছোট বা বড় বিনিয়োগকারী—দু’দিকেই এটি কার্যকর।
নিয়মিত সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে বড় অঙ্কের অর্থ সঞ্চয় সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি করার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো SIP ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ। মিউচুয়াল ফান্ডের জগতে স্মল ক্যাপ, লার্জ ক্যাপ, থিম্যাটিক, সেক্টোরাল—অনেক অপশন রয়েছে। তবে ঝুঁকি কমিয়ে রিটার্ন পাওয়ার জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো হাইব্রিড ফান্ড।