ভারতীয় মহিলা দল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫ রানে হারলেও, ভারতীয় দল মাত্র ২৫ বলে ৯ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।
IND vs ENG 3rd T20: ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল এবং ইংল্যান্ড মহিলা দলের মধ্যে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমন এক রোমাঞ্চকর পরিস্থিতি দেখা গেল, যা ক্রিকেট প্রেমীদের শেষ পর্যন্ত সিট আঁকড়ে থাকতে বাধ্য করেছিল। লন্ডনের কেনিংটন ওভাল মাঠে খেলা এই তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইংল্যান্ড ভারতকে মাত্র ৫ রানে হারালেও, এই হারের পরেও ভারতীয় দল এমন একটি রেকর্ড গড়েছে যা ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো পুরুষ বা মহিলা দল এর আগে করতে পারেনি।
ইংল্যান্ডের শক্তিশালী শুরু, কিন্তু আশ্চর্যজনক পতন
ইংল্যান্ড দল টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে একটি দীর্ঘ এবং শক্তিশালী ইনিংসের ভিত্তি স্থাপন করে। ওপেনিং জুটি কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৫ ওভার পর্যন্ত ১৩৭ রান তোলে। মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ডের স্কোর ১৯০-এর বেশি হবে। কিন্তু ১৫.২ ওভারের পরে প্রথম উইকেট পতনের সঙ্গে সঙ্গেই দলের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে পড়ে।
মাত্র ২৫ বলে ৯ উইকেট পড়ে যায় এবং ইংল্যান্ড দল ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান করতে সক্ষম হয়। এই পরিসংখ্যানটি বিশেষ কারণ ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথম কোনো দল ২৫ বলের মধ্যে ৯ উইকেট হারিয়েছে। এই রেকর্ডটি পুরুষ ক্রিকেট, মহিলা ক্রিকেট বা টি-টোয়েন্টি, ওডিআই বা টেস্ট কোনো ফরম্যাটেই আগে হয়নি।
ভারতীয় বোলারদের দাপট
এই রেকর্ড তৈরিতে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল ভারতীয় বোলারদের। অরুণধুতি রেড্ডি এবং দীপ্তি শর্মা शानदार বোলিং করে ৩টি করে উইকেট নেন। এছাড়াও তরুণ বোলার শ্রী চরণী ২টি উইকেট নিয়েছিলেন এবং ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের खुलकर খেলার কোনো সুযোগ দেননি।
১৩৭ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর ইংল্যান্ডের পুরো ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে যায়। ভারতীয় বোলারদের ধারালো বোলিং এবং ফিল্ডিং ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ভারত ম্যাচটি হারলেও, বোলিংয়ে ফিরে আসার এই দৃশ্য ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
স্মৃতি-শেফালীর ওপেনিং জুটির শক্তিশালী সূচনা
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতীয় দলের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা এবং শেফালী ভার্মা প্রথম উইকেটে ৮৫ রানের জুটি গড়ে দলের ভালো সূচনা করেন। শেফালী ২৫ বলে ৪৭ রান করেন, जिसमें ৬টি চার এবং ২টি ছয় ছিল। অন্যদিকে, স্মৃতি ৪৪ বলে ৫৬ রানের একটি স্থিতিশীল ইনিংস খেলেন এবং দলকে স্থিতিশীলতা দেন।
যাইহোক, দুই ওপেনার আউট হওয়ার পর ভারতীয় দলের রান তোলার গতি কমে যায়। অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর ২৩ রান করলেও তিনি দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারেননি। ভারতীয় দল তাদের ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান করতে সক্ষম হয় এবং ৫ রানে ম্যাচটি হেরে যায়।
রেকর্ড তৈরি, কিন্তু জয় হাতছাড়া
এই ম্যাচে হার ভারতীয় দলের হলেও, ইতিহাস গড়ার কৃতিত্বও তাদেরই। ইংল্যান্ড দলের ৯ উইকেট মাত্র ২৫ বলে ফেলা কোনো অলৌকিক ঘটনার চেয়ে কম ছিল না। এর আগে ক্রিকেট ইতিহাসে এমন ঘটনা কোনো পর্যায়ে ঘটেনি – তা পুরুষ টি-টোয়েন্টি হোক, ওডিআই হোক বা টেস্ট, অথবা মহিলা ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাট হোক না কেন।
সিরিজে এখনও এগিয়ে ভারত
এই হারের পরেও ভারত ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। ইংল্যান্ড দল এই জয়ের মাধ্যমে সিরিজে ফিরে আসতে সফল হয়েছে এবং পরের দুটি ম্যাচ এখন নির্ধারক হতে পারে। চতুর্থ ম্যাচটি ৯ জুলাই ম্যানচেস্টারের মাঠে খেলা হবে। এই ম্যাচে উভয় দলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে, কারণ এখন সিরিজ বাঁচানোর চাপ ইংল্যান্ডের উপর এবং জয়ের ধারা ফিরে পাওয়ার লক্ষ্য ভারতের সামনে।