হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলায় ৩০শে জুন তারিখে বন্যা ও ভূমিধসে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৫৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং সেনা ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
Himachal Flood: হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলায় ৩০শে জুন তারিখে আসা বন্যা ও ভূমিধস ব্যাপক ধ্বংসলীলা ঘটিয়েছে। এখনো পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে, যেখানে ৫৬ জন এখনও নিখোঁজ। কয়েকশো মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন এবং বহু এলাকা সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ত্রাণ কাজে গতি
দুর্ঘটনার পর ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে এখন গতি এসেছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর দলগুলি যৌথভাবে কাজ করছে। এনডিআরএফ মান্ডির সরাজ অঞ্চলের দেজি গ্রাম থেকে ৬৫ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করেছে। এই সকল মানুষ ভূমিধস ও বন্যার কারণে আটকে পড়েছিলেন।
দুর্গম পথ পেরিয়ে দলের প্রবেশ
এনডিআরএফ-এর দল নয় কিলোমিটার কঠিন পথ হেঁটে দেজি গ্রামে পৌঁছেছে। রাস্তার অনেক জায়গায় ধ্বংসস্তূপ জমে ছিল এবং ক্রমাগত পাথর পড়ার ঝুঁকি ছিল। ভারী বৃষ্টি পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছিল। তা সত্ত্বেও প্রশাসন, দুর্যোগ ত্রাণ দল এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা সম্মিলিতভাবে এই অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।
রোগীদের অগ্রাধিকার, ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়েছে মানুষজন
দেজি গ্রামে সবার প্রথমে অসুস্থ ও বৃদ্ধদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তারপর সকল মানুষকে নিরাপদ ত্রাণ শিবিরে পাঠানো হয়। প্রশাসন ত্রাণ শিবিরগুলিতে জল, খাদ্য এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
মান্ডির ডেপুটি কমিশনার অপূর্ব দেওগণ জানিয়েছেন, রাস্তা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গিয়েছিল এবং ভূমিধসের কারণে সব সময় বিপদ ছিল। যদিও, সকল বিভাগের সমন্বয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।
রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার সক্রিয়
রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারও পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহর লাল শুক্রবার সকালে বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুরের সঙ্গে ফোনে কথা বলে ত্রাণ কাজের বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন।
হেলিকপ্টার ও ড্রোন দিয়ে অনুসন্ধান
বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের সাহায্যে ত্রাণ সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে পাঠানো হচ্ছে। এছাড়াও, নিখোঁজ ব্যক্তিদের অনুসন্ধানের জন্য ড্রোন প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা: জীবন ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি
এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, মান্ডি জেলায় ২১৪টি বাড়ি, ১৯২টি গোয়ালঘর এবং ৭টি দোকান সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রায় ৪০৩ জনকে সাতটি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। মান্ডির গোহার উপ-বিভাগে জিউনি খাদে ভেসে যাওয়া পার্বতী দেবীর মৃতদেহ বিয়াস নদীর পাশে পাওয়া গেছে।
থুন্যাগ উপ-বিভাগীয় সদর দফতর এখনও চারদিক থেকে বিচ্ছিন্ন, তবে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে এর সড়ক পথে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিদ্যুৎ এবং টেলিযোগাযোগ পরিষেবা আংশিকভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।