ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে এলএনজি চুক্তি: আমেরিকার জন্য নতুন ধাক্কা

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে এলএনজি চুক্তি: আমেরিকার জন্য নতুন ধাক্কা

তেলের পর ভারত ও রাশিয়া এবার লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) নিয়ে চুক্তি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাশিয়া জানিয়েছে, আমেরিকার হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও তারা ভারতকে জ্বালানি সরবরাহ জারি রাখবে। ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য প্রতি বছর প্রায় ১০% বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে আমেরিকা ফের আমদানি শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে।

India Russia Trade: ভারত ও রাশিয়া আমেরিকাকে আরও একটি ধাক্কা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তেলের চুক্তির পর এবার দুই দেশ এলএনজি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে। রাশিয়া স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, আমেরিকার সতর্কতা ও চাপ থাকা সত্ত্বেও তারা ভারতকে তেল ও গ্যাস সরবরাহ জারি রাখবে। রাশিয়া ভারতের সঙ্গে পরমাণু শক্তি এবং শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ইচ্ছাও প্রকাশ করেছে, যেখানে আমেরিকা ভারত থেকে আমদানির ওপর শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে।

আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে জারি থাকা উত্তেজনা

আমেরিকার পক্ষ থেকে ক্রমাগত সতর্কতা ও শুল্ক বাড়ানোর হুমকি সত্ত্বেও ভারত ও রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত রয়েছে। রুশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, রাজনৈতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি আগের মতোই জারি রাখবে। রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে এই জ্বালানি চুক্তি উভয় দেশের স্বার্থে বলে মনে করা হচ্ছে। এলএনজির মাধ্যমে ভারত তার জ্বালানির চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করতে পারবে।

এলএনজি কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ

এলএনজি এক প্রকার প্রাকৃতিক গ্যাস, যাকে ঠান্ডা করে তরল রূপে পরিবর্তন করা হয়। এর ফলে গ্যাসকে দীর্ঘ দূরত্ব পর্যন্ত সহজে পরিবহন করা যায়। রাশিয়ার এই প্রস্তাব ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে, কারণ ভারত বিশ্বে পেট্রোলিয়ামের তৃতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। এর প্রধান কারণ হল রাশিয়া কর্তৃক অপরিশোধিত তেলের ওপর দেওয়া বিপুল ছাড়।

ভারত-রাশিয়া তেল আমদানি স্থিতিশীল

রাশিয়ার উপ বাণিজ্য প্রতিনিধি এভজেনি গ্রিভা জানিয়েছেন যে, ভারত কর্তৃক রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি আপাতত একই স্তরে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। রাশিয়া ভারতকে প্রায় ৫ শতাংশ ছাড়ে তেল সরবরাহ করছে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রতি বছর প্রায় ১০ শতাংশ বাড়ার আশা রয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, জ্বালানি সহযোগিতায় দীর্ঘমেয়াদি কৌশল তৈরি হচ্ছে।

আমেরিকার নতুন সতর্কতা

আমেরিকা ফের ভারতকে সতর্ক করেছে। অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন যে, ভারতকে রাশিয়া থেকে আমদানির ওপর শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে। তার বক্তব্য, ভারত এই ক্রয় থেকে মুনাফা অর্জন করছে এবং দেশের কিছু ধনী পরিবার এর সুবিধা নিচ্ছে। আমেরিকার এই প্রতিক্রিয়া ভারত-রাশিয়া জ্বালানি অংশীদারিত্বের ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা।

ভারত-রাশিয়া সহযোগিতায় আমেরিকার উপর প্রভাব

ভারত ও রাশিয়ার এই পদক্ষেপ আমেরিকাকে নতুন অর্থনৈতিক ধাক্কা দিতে পারে। তেলের পর এলএনজি চুক্তি দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতা আরও মজবুত করবে। এতে ভারতের জ্বালানি সুরক্ষাও বাড়বে এবং বিশ্ব বাজারে ভারতের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে। পরমাণু শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তার উভয় দেশের জন্য কৌশলগত সুবিধা নিয়ে আসবে।

Leave a comment