আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে বড় পতন: ১৬,৪০০ কোটি টাকার লোকসান!

আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে বড় পতন: ১৬,৪০০ কোটি টাকার লোকসান!

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (IPL), যা বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল ক্রিকেট লীগ হিসাবে বিবেচিত হয়, সম্প্রতি একটি বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে ৮ শতাংশ হ্রাস রেকর্ড করা হয়েছে।

স্পোর্টস নিউজ: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (IPL) বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল ক্রিকেট লীগ হিসাবে পরিচিত। ২০০৮ সালে এর প্রতিষ্ঠার পর থেকে, এই লীগ কেবল দর্শকদের জন্য রোমাঞ্চকর ম্যাচের কেন্দ্রবিন্দু ছিল না, বরং এর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রভাব বিসিসিআই (ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড) কে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডে পরিণত করতে সহায়তা করেছে।

আইপিএলের সাফল্যের একটি বড় কারণ হলো এর নিরবচ্ছিন্ন আয়োজন। নির্বাচন হোক, মহামারী-সৃষ্ট পরিস্থিতি হোক বা অন্য কোনো কারণ, এই টুর্নামেন্ট প্রতি বছরই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতিটি মরসুম নতুন উচ্চতা স্পর্শ করেছে – নতুন প্রতিভারা মঞ্চ পেয়েছে, দলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা বেড়েছে এবং বিশ্বব্যাপী ফ্যান ফলোয়িংও ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে।

আইপিএলের সাম্রাজ্য এবং ইতিহাস

আইপিএলের প্রথম মরসুম ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং তারপর থেকে এটি প্রতি বছরই আয়োজিত হয়ে আসছে। এই টুর্নামেন্টের সাফল্যই বিসিসিআইকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডে পরিণত করতে সাহায্য করেছে। লীগটি তার ২ মাসের সময়ে দেশজুড়ে কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমীকে রোমাঞ্চকর ম্যাচ এবং প্রচুর বিনোদন উপহার দিয়েছে।

প্রতি বছর আইপিএল নতুন উচ্চতা স্পর্শ করেছে, খেলোয়াড় এবং ভক্ত উভয় পক্ষের জন্যই এটি উৎসবের মতো ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক রিপোর্ট থেকে মনে হচ্ছে টি-টোয়েন্টি লীগের জৌলুস কিছুটা কমেছে।

আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে পতন

ডিডি অ্যান্ড অ্যাডভাইজরি (DD & Advisory) দ্বারা প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে ক্রমাগত পতন দেখা যাচ্ছে। ২০২৩ সালে এই মূল্য ছিল ৯২,৫০০ কোটি টাকা, যেখানে ২০২৪ সালে তা কমে ৭৬,১০০ কোটি টাকা হয়েছে। এর অর্থ হলো লীগের ইকোসিস্টেম থেকে প্রায় ১৬,৪০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রিপোর্টে 'বিয়ন্ড ২২ ইয়ার্ডস' (Beyond 22 Yards) এর উদ্ধৃতি দিয়ে দুটি প্রধান কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, যার কারণে আইপিএলের মূল্যের উপর প্রভাব পড়েছে:

  1. ব্রডকাস্টিং কোম্পানিগুলির একত্রীকরণ – প্রধান সম্প্রচার সংস্থা ডিজনি স্টার এবং ভায়াকম ১৮ এর একত্রীকরণের কারণে প্রতিযোগিতা কমেছে। মিডিয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হ্রাস পাওয়ায় ব্র্যান্ড এবং বিজ্ঞাপনের সুযোগ সীমিত হয়েছে।
  2. রিয়েল মানি গেমিং-এর উপর নিষেধাজ্ঞা – ভারত সরকার এই বছর রিয়েল মানি গেমিং অ্যাপগুলির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আইপিএলে অনেক এমন কোম্পানি স্পনসর ছিল। নিষেধাজ্ঞার কারণে স্পনসরশিপ এবং বিজ্ঞাপনের আয় উৎসের উপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

আইপিএল ভারতে কেবল একটি টুর্নামেন্ট নয়, বরং ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য একটি উৎসবের মতো বিবেচিত হয়। দুই মাস ধরে ভক্তরা একের পর এক রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপভোগ করেন। খেলোয়াড়দের জন্য এটি এমন একটি সুযোগ যেখানে তারা দেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারে।

Leave a comment