জাতিসংঘে সংসদ সদস্য পি পি চৌধুরী পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিয়েছেন। তিনি কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেছেন এবং পাকিস্তানের নীতির সমালোচনা করেছেন, পাশাপাশি ভারতের উন্নয়ন ও নারী ক্ষমতায়নের সাফল্যগুলি তুলে ধরেছেন।
New Delhi: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ (United Nations General Assembly) -এ ভারত আরও একবার পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিয়েছে। ভারতীয় সংসদ সদস্য পি পি চৌধুরী জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের বিবৃতি সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য এবং অবিভাজ্য অংশ। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে তারা মিথ্যা বিবৃতি দিয়ে নিজেদের দেশের দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা এবং ব্যর্থ শাসন থেকে মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করছে।
কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ
৮ অক্টোবর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংসদ সদস্য পি পি চৌধুরী কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের দেওয়া বিবৃতির তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন যে জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য এবং অবিভাজ্য অংশ, এবং থাকবে। চৌধুরী পাকিস্তানের এই বিবৃতিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়েছেন এবং বলেছেন যে ইসলামাবাদ লাগাতার জাতিসংঘের মঞ্চের অপব্যবহার (misuse of UN platform) করছে।
চৌধুরী বলেছেন যে পাকিস্তান মিথ্যা অভিযোগ করে নিজেদের দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করছে।
নিজের দেশকে ‘ডাম্প ট্রাক’ বললেন, চৌধুরীর কটাক্ষ
পি পি চৌধুরী পাকিস্তানের নীতির উপর তীব্র আক্রমণ করে বলেছেন যে পাকিস্তানের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে সম্প্রতি স্বয়ং তাদের সেনাপ্রধান নিজের দেশকে ‘ডাম্প ট্রাক’ (Dump Truck) বলেছিলেন। তিনি বলেছেন যে এটি পাকিস্তানের শাসন ব্যবস্থার গভীর ব্যর্থতাকে (governance failure) তুলে ধরে।
তিনি আরও বলেছেন যে পাকিস্তান বারবার ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, যখন তাদের নিজস্ব গণতন্ত্র ও অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। চৌধুরী জাতিসংঘের মঞ্চ থেকে এও বলেছেন যে “ভারত উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার প্রতীক, যেখানে পাকিস্তান বিভাজন ও ঘৃণার রাজনীতিতে জড়িয়ে আছে।”
ভারতের উন্নয়ন যাত্রা বিশ্বের জন্য উদাহরণ
তার বক্তব্যে পি পি চৌধুরী গত দশকে ভারতের অর্জিত সাফল্যের ওপরও আলোকপাত করেন। তিনি জানান যে ভারত ২৫ কোটিরও বেশি মানুষকে বহু-মাত্রিক দারিদ্র্য (multidimensional poverty) থেকে বের করে এনেছে।
আজ প্রায় ৮০ কোটি নাগরিক পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (Public Distribution System) থেকে উপকৃত হচ্ছেন। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলি দেশের ৬০ শতাংশেরও বেশি জনসংখ্যার কাছে পৌঁছেছে। এটি ভারতের সামাজিক ন্যায়বিচার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের (inclusive development) দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।
নারী ক্ষমতায়ন (Women Empowerment) জাতীয় মিশনে পরিণত
পি পি চৌধুরী তার ভাষণে ভারতে নারী ক্ষমতায়নের ঐতিহাসিক সাফল্যগুলিরও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন যে নারী সংরক্ষণ বিল (Women Reservation Bill 2023) ভারতের গণতান্ত্রিক যাত্রায় একটি বড় সংস্কার।
তিনি জানান যে আজ উচ্চ শিক্ষায় (higher education) মহিলাদের তালিকাভুক্তির হার রেকর্ড স্তরে পৌঁছেছে। একই সাথে, ২০২৪-২৫ সাল নাগাদ মহিলাদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ (workforce participation) ৪০.৩ শতাংশে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। চৌধুরী বলেছেন যে “নারী ক্ষমতায়ন এখন শুধু স্লোগান নয়, বরং একটি জাতীয় মিশনে পরিণত হয়েছে।”
প্রযুক্তিনির্ভর ভারতের নতুন দিক
সংসদ সদস্য চৌধুরী তরুণ এবং প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নে (technology-driven growth) ভারতের মনোযোগ নিয়েও আলোচনা করেছেন। তিনি জানান যে সরকার মাই ভারত (My Bharat), স্কিল ইন্ডিয়া (Skill India), পিএম-এনএপিএস (PM-NAPS) এবং যুওয়াই এআই (YUVAI AI)-এর মতো কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণদের নতুন দক্ষতা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ দিচ্ছে।
তিনি বলেছেন যে ভারতের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি (Digital Inclusion) সারা বিশ্বের জন্য একটি মডেল হয়ে উঠেছে। ডিবিটি (Direct Benefit Transfer)-এর মাধ্যমে ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ সরাসরি মানুষের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে দুর্নীতি এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের ভূমিকা শেষ হয়েছে।