যুদ্ধবিরতির প্রশ্নেই অনড় রাশিয়া, পুতিন জানালেন কড়া সিদ্ধান্ত

যুদ্ধবিরতির প্রশ্নেই অনড় রাশিয়া, পুতিন জানালেন কড়া সিদ্ধান্ত
সর্বশেষ আপডেট: 30-11--0001

রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ করবে না— স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের সময় রুশ প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দেন, যতক্ষণ না কৌশলগত ও ভৌগোলিক লক্ষ্য অর্জন হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত রাশিয়ার সেনা অভিযান চলবে। এই বার্তা স্পষ্ট করে দিল, রাশিয়ার পক্ষে এখনই যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা একেবারেই নেই।

ট্রাম্পের শান্তির প্রস্তাবে পুতিনের না, কূটনৈতিক সমাধানে ধৈর্যের বার্তা

পুতিনের কড়া বার্তা, শান্তি আলোচনার পথ খোলা থাকলেও শর্ত পূরণ ছাড়া যুদ্ধবিরতির প্রশ্নই নেইযুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এলেও, তা পুতিন কার্যত উড়িয়ে দিলেন। ক্রেমলিনের পররাষ্ট্র নীতি উপদেষ্টা ইউরি উসনভ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রাশিয়া এই মুহূর্তে সাময়িক যুদ্ধবিরতির কোনও পরিকল্পনা করছে না। তবে কূটনৈতিক সমাধানের পথ পুরোপুরি বন্ধ নয়। পুতিন জানিয়েছেন, মস্কো শান্তিপূর্ণ আলোচনার পক্ষপাতী, তবে তার জন্য প্রথমে রাশিয়ার ‘সামরিক ও ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্য’ পূরণ জরুরি।এই মন্তব্যে স্পষ্ট, আপাতত ময়দানে অস্ত্র নামানোর কোনও সম্ভাবনা নেই মস্কোর। পুতিনের অবস্থান স্পষ্ট করে দেয়, সংঘাতের অবসান নয়, বরং আরও কিছুটা সময় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বজায় থাকবে পূর্ব ইউরোপে।

যুদ্ধের মাঝে আলোচনার আশ্বাস, কিন্তু কঠিন শর্তে অনড় মস্কো

পুতিন বলেছেন, রাশিয়া শান্তি চায়, তবে সেটি একতরফা শর্তে নয়। কিয়েভ যদি আলোচনার টেবিলে বসে রাশিয়ার প্রস্তাব বিবেচনা করে, তবে যুদ্ধ থামানো সম্ভব। কিন্তু পশ্চিমের হস্তক্ষেপে ইউক্রেনের নরম মনোভাব বদলে যাচ্ছে বলেই দাবি পুতিনের। ফলে, আপাতত সংঘাত চলবে, তবে আলোচনার দরজা পুরোপুরি বন্ধ নয়— এমন ইঙ্গিতই মেলে।

রাশিয়ার আগ্রাসনে অখুশি ট্রাম্প, বললেন "চেষ্টা করেও কিছু হল না"

ফোনালাপের পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমি চেষ্টা করেছিলাম পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে। কিন্তু, সত্যি বলতে, রাশিয়ার অবস্থান দেখে আমি সন্তুষ্ট নই।” তাঁর বক্তব্য, রাশিয়ার কঠোর অবস্থানের ফলে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে এবং শান্তি প্রক্রিয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়ছে।

পুতিনের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা ও ঐতিহাসিক স্মৃতিচারণ

৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পুতিন ফোনে ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানান। সেইসঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেন রাশিয়ার ঐতিহাসিক ভূমিকা। পুতিন জানান, মার্কিন স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় রাশিয়ার সম্রাজ্ঞী ক্যাথরিন দ্বিতীয় ব্রিটেনের অনুরোধে সাড়া না দিয়ে পরোক্ষে আমেরিকার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এমন বার্তা দিয়ে যেন মস্কো-ওয়াশিংটনের পুরনো সম্পর্কের বন্ধনকে মনে করিয়ে দিলেন পুতিন।

পশ্চিম এশিয়া নিয়েও আলোচনা, উন্নয়নে যৌথ পদক্ষেপের বার্তা

এই ফোনালাপে শুধু ইউক্রেন নয়, পশ্চিম এশিয়ার রাজনৈতিক অবস্থা ও উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয় দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে। পশ্চিম এশিয়ার স্থিতিশীলতা রক্ষায় রাশিয়া ও আমেরিকা কীভাবে একযোগে কাজ করতে পারে, তা নিয়েও একাধিক প্রস্তাব উঠে আসে। ভবিষ্যতে নতুন কোনও কৌশলগত পরিকল্পনার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে দুই নেতার আলোচনায়।

Leave a comment