রোহিত–কোহলির ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা চরমে

রোহিত–কোহলির ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা চরমে

টিম ইন্ডিয়ার দুই সুপারস্টার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি দীর্ঘদিন ধরেই মাঠের বাইরে। টেস্ট এবং টি–টোয়েন্টি থেকে তাঁরা ইতিমধ্যেই সরে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমানে তাঁদের একমাত্র উপস্থিতি সীমাবদ্ধ একদিনের ক্রিকেটে। ফলে ভক্তদের আগ্রহ, কবে আবার মাঠে দেখা যাবে ‘রো–কো’ জুটিকে।

অস্ট্রেলিয়া সফর হতে পারে শেষ অধ্যায়?

আগামী অক্টোবর মাসে টিম ইন্ডিয়া অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে। সেখানেই দেখা মিলবে রোহিত ও কোহলির। তবে ক্রিকেট মহলের অনেকেই মনে করছেন, এটাই হতে পারে তাঁদের শেষ অস্ট্রেলিয়া সফর। এই সম্ভাবনার কথা শোনা মাত্রই দুই কিংবদন্তিকে ঘিরে বিদায়ের জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।

গৌতম গম্ভীরের মন্তব্যে আগুনে ঘি

বিদায়ের প্রসঙ্গ প্রথম জোরদার হয় ইংল্যান্ড সফরের আগে। শুভমন গিলের নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়া যখন পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে যাচ্ছিল, তখন প্রেস কনফারেন্সে দলের কোচ গৌতম গম্ভীরকে জিজ্ঞাসা করা হয়—তিনি কি নিশ্চিত করবেন যাতে রোহিত ও কোহলি সসম্মানে বিদায় পান? গম্ভীরের জবাব ছিল স্পষ্ট, খেলোয়াড়রা বিদায়ের জন্য খেলে না। দেশের জন্য তাঁদের অবদান চিরস্মরণীয়।

ইংল্যান্ড সফর থেকে ছিটকে যাওয়া

প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোহিত ও কোহলি নিজেরাও ইংল্যান্ড সফরে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, দলে নেওয়া হবে না। সেই সিদ্ধান্ত জানার পরেই তাঁরা লাল বলের ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিক অবসরের ঘোষণা করেন। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনাই হয়তো ওয়ানডে ভবিষ্যতের দিকেও প্রভাব ফেলতে পারে।

অস্ট্রেলিয়া সিরিজ–পরবর্তী অনিশ্চয়তা

এখন শোনা যাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া সফরের পরই হয়তো একদিনের ক্রিকেট থেকেও সরে দাঁড়াতে পারেন রোহিত ও কোহলি। এমন হলে ওয়ানডে বিশ্বকাপই হয়ে উঠতে পারে তাঁদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শেষ আসর। তবে এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি।

বোর্ডের পরিকল্পনা ও বিজয় হাজারে ট্রফি

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া সফরের পর রোহিত ও কোহলিকে বিজয় হাজারে ট্রফিতে অংশ নিতে নির্দেশ দেবে BCCI। এর পরেই তাঁদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্তির পথ খুলতে পারে। কিন্তু বোর্ড এখনো মুখ খোলেনি।

ভক্তদের আবেগে নাড়া

রোহিত–কোহলির অবসর প্রসঙ্গ ভক্তদের আবেগে গভীর দাগ কাটছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কেউ বলছেন, তাঁরা যদি একদিনের ক্রিকেট থেকেও বিদায় নেন, তবে এক যুগের সমাপ্তি ঘটবে। অন্যদিকে কেউ মনে করছেন, নতুন প্রজন্মের জন্য জায়গা তৈরি করাও সময়ের দাবি।

ভারতীয় ক্রিকেটে রো–কো যুগের প্রভাব

দুই ব্যাটসম্যানই এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় ক্রিকেটের মুখ হয়ে রয়েছেন। ওয়ানডে-তে তাঁদের অসংখ্য রেকর্ড, গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস এবং ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা আজও ভক্তদের মনে অমলিন। তাঁদের যুগলবন্দি বহু টুর্নামেন্টে ভারতকে সাফল্য এনে দিয়েছে।

গম্ভীরের ‘প্রাপ্তি’ তত্ত্ব

গৌতম গম্ভীরের বক্তব্য অনুযায়ী, বিদায়ের ধরন নয়, বরং খেলোয়াড়দের প্রাপ্তিই বড় বিষয়। তিনি মনে করিয়ে দেন, দেশের মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা তাঁরা পেয়েছেন, সেটিই তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান। তাই অবসর ঘোষণা হোক বা না হোক, তাঁদের অবদান কখনও ম্লান হবে না।

বোর্ডের নীরবতা বাড়াচ্ছে জল্পনা

BCCI এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি। তবে বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দলের ভবিষ্যৎ গঠনে নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে রোহিত ও কোহলির ভূমিকা সীমিত হতে পারে।

বিশ্বকাপের আগে বড় চমক?

অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়া সফরের পর রয়েছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এই টুর্নামেন্টে রোহিত–কোহলির অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে সেটি ভক্তদের জন্য বড় স্বস্তি হবে। তবে যদি বিশ্বকাপ–পরবর্তী সময়েই তাঁরা অবসর নেন, তবে সেটি হবে ভারতীয় ক্রিকেটের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

সমাপ্তি না কি নতুন সূচনা?

সবশেষে প্রশ্ন একটাই—অস্ট্রেলিয়া সফরের পর রোহিত–কোহলির গল্প শেষ হবে, নাকি তাঁরা আবারও ওয়ানডে মাঠে ফিরবেন? উত্তর মিলবে কয়েক মাসের মধ্যেই। তবে যে–ভাবেই হোক, ভারতীয় ক্রিকেটে তাঁদের নাম চিরকাল অমলিন থাকবে।

Leave a comment