আফগানিস্তান ক্রিকেট দল আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের আধিপত্য দেখিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে খেলা তৃতীয় এবং নির্ধারক ওয়ানডেতে আফগানিস্তান বাংলাদেশকে ২০০ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, এবং তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে ক্লিন সুইপ করে জয়লাভ করেছে।
খেলাধুলা সংবাদ: আফগানিস্তান ওয়ানডে ক্রিকেটে আরও একবার দারুণ পারফরম্যান্স করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে ক্লিন সুইপ করেছে। এই জয়ের সাথে আফগান দলটি টানা পঞ্চম ওয়ানডে সিরিজ জেতার কৃতিত্ব অর্জন করেছে। এর আগে দলটি আয়ারল্যান্ড, বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতেছিল।
হাসমতুল্লাহ শাহিদির নেতৃত্বে আফগানিস্তান ১৪ অক্টোবর খেলা তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে ২০০ রানে হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছে। এটি ওয়ানডে ক্রিকেটে আফগানিস্তানের এ যাবৎকালের দ্বিতীয় বৃহত্তম জয়। একই সাথে, এই জয়টি আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়ে পরিণত হয়েছে।
এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সময় আফগান দল দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে, যারা ২০২৪ সালে আয়ারল্যান্ডকে ১৭৪ রানে হারিয়েছিল। এই মাঠে এ পর্যন্ত মোট ৫৬টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হয়েছে, কিন্তু আফগানিস্তান বাংলাদেশকে ২০০ রানে হারিয়ে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে।
আবু ধাবিতে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়
আফগানিস্তানের এই জয় শুধুমাত্র সিরিজ জয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়ে পরিণত হয়েছে। এর আগে এই মাঠে ৫৬টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলা হয়েছিল, কিন্তু আফগানিস্তান বাংলাদেশকে ২০০ রানে হারিয়ে একটি নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে। রানের ব্যবধানে আবু ধাবির শীর্ষ বড় জয়গুলি:
- আফগানিস্তান: ২০০ রান বনাম বাংলাদেশ (২০২৫)
- দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৭৪ রান বনাম আয়ারল্যান্ড (২০২৪)
- স্কটল্যান্ড: ১৫০ রান বনাম আফগানিস্তান (২০১৫)
এই জয় দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে, যারা ২০২৪ সালে আয়ারল্যান্ডকে ১৭৪ রানে হারিয়েছিল।
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
আফগানিস্তান টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। কঠিন পিচে দলটি ২৯৩ রানের শক্তিশালী স্কোর তৈরি করে। ইব্রাহিম জাদরান দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ১১১ বলে ৯৫ রান করেন। মোহাম্মদ নবি শেষ ওভারগুলোতে ঝড়ো ইনিংস খেলেন এবং মাত্র ৩৭ বলে ৬২ রান করে অপরাজিত থাকেন, যার মধ্যে চারটি চার ও পাঁচটি ছক্কা ছিল।
বাংলাদেশ দল এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেছিল, কিন্তু সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ে। দলটি মাত্র ৯৩ রানে অলআউট হয়ে যায় এবং ২৮তম ওভারেই সব খেলোয়াড় প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। বাংলাদেশের হয়ে ওপেনার সাইফ হাসানই উইকেটে টিকে থাকতে পারেন এবং তিনি ৪৩ রান করেন।
আফগানিস্তানের বোলিংয়ের দাপট
আফগানিস্তানের বোলাররাও দারুণ পারফরম্যান্স করেছে। বিলাল সামি মারাত্মক বোলিং করে ৫ উইকেট নেন। রশিদ খান ৩ উইকেট তুলে নেন। এই সিরিজে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের জন্য ইব্রাহিম জাদরানকে প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ নির্বাচিত করা হয়। তিনি তিন ম্যাচে মোট ২১৩ রান করেন। আফগানিস্তান এই জয়ের মাধ্যমে শুধুমাত্র ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজই জিতল না, বরং টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারের প্রতিশোধও নিল। এর আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে ক্লিন সুইপ করেছিল।