এয়ার ইন্ডিয়ার বিপুল ক্ষতি, ইন্ডিগোর চমকপ্রদ মুনাফা: বিস্তারিত আর্থিক চিত্র

এয়ার ইন্ডিয়ার বিপুল ক্ষতি, ইন্ডিগোর চমকপ্রদ মুনাফা: বিস্তারিত আর্থিক চিত্র

অর্থবর্ষ ২০২৫-এ এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের সম্মিলিত প্রি-ট্যাক্স ক্ষতি হয়েছে ₹৯,৫৬৮.৪ কোটি, যেখানে ইন্ডিগো ₹৭,৫৮৭.৫ কোটির মুনাফা दर्ज করেছে। আকাশা এয়ার এবং স্পাইসজেটও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এয়ারলাইন্সগুলির উপর ভারী ঋণের মধ্যে ইন্ডিগোর মুনাফা অর্জন এভিয়েশন সেক্টরের একটি বিপরীত চিত্র তুলে ধরছে।

নয়া দিল্লি: টাটা গোষ্ঠী পরিচালিত এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অর্থবর্ষ ২০২৫-এ সম্মিলিতভাবে ₹৯,৫৬৮.৪ কোটির প্রি-ট্যাক্স ক্ষতি दर्ज করেছে, যার মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার ক্ষতি ₹৩,৮৯০.২ কোটি এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ₹৫,৬৭৮.২ কোটি। অন্যদিকে, ইন্ডিগো ₹৭,৫৮৭.৫ কোটির মুনাফা করেছে। আকাশা এয়ার এবং স্পাইসজেটও ক্ষতির শিকার হয়েছে। ইন্ডিগোর উপর ₹৬৭,০৮৮.৪ কোটির ঋণ রয়েছে, যেখানে এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের উপর ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে ₹২৬,৮৭৯.৬ কোটি এবং ₹৬১৭.৫ কোটি।

এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের আর্থিক পারফর্মেন্স

টাটা গোষ্ঠী কর্তৃক জানুয়ারি ২০২২-এ অধিগ্রহণ করা এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের আর্থিক অবস্থা বিনিয়োগকারী এবং এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে রয়েছে। এই সময়ে এয়ার ইন্ডিয়ার ৩,৮৯০.২ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। একই সময়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস ৫,৬৭৮.২ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে উভয় এয়ারলাইন্স এখনও আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছে।

অন্যান্য এয়ারলাইন্সের পারফর্মেন্স

লোকসভায় পেশ করা তথ্য অনুযায়ী, আকাশা এয়ারের ১,৯৮৩.৪ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। স্পাইসজেটও ৫৮.১ কোটি টাকার ক্ষতি दर्ज করেছে। অন্যদিকে, ইন্ডিগো বিপরীত পথে হেঁটে ৭,৫৮৭.৫ কোটি টাকার বিশাল মুনাফা অর্জন করেছে। এই পরিসংখ্যান ইন্ডিগোর শক্তিশালী আর্থিক অবস্থা এবং পরিচালন ক্ষমতা প্রদর্শন করে।

এয়ারলাইন্সের উপর বর্তমান ঋণ

পরিসংখ্যানে আরও প্রকাশ পেয়েছে যে ইন্ডিগোর উপর ৬৭,০৮৮.৪ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার ঋণ ২৬,৮৭৯.৬ কোটি টাকা। এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের উপর ৬১৭.৫ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। স্পাইসজেটের কাছে ৮৮৬ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। অন্যদিকে, আকাশা এয়ারের উপর ৭৮.৫ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। এই পরিসংখ্যান এয়ারলাইন্সগুলির আর্থিক কাঠামো এবং ঋণের গভীরতা স্পষ্ট করে।

১৯৯৪ সালের পর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা

মন্ত্রী মোহোল জানিয়েছেন যে ১৯৯৪ সালে এয়ার কর্পোরেশন অ্যাক্ট বাতিল হওয়ার পর ভারতীয় বিমান পরিবহণ ক্ষেত্র সম্পূর্ণরূপে নিয়ম-মুক্ত হয়েছে। এখন এয়ারলাইন্সগুলি তাদের আর্থিক এবং পরিচালন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নেয়। এর মধ্যে সম্পদ ব্যবস্থাপনা, ঋণ পুনর্গঠন এবং অন্যান্য আর্থিক সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত। এই কাঠামোতে কোম্পানিগুলি তাদের কৌশল অনুযায়ী লাভ বা ক্ষতি दर्ज করছে।

লাভ এবং ক্ষতির কারণ

এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ক্ষতির প্রধান কারণ হল উচ্চ পরিচালন খরচ, বহর বিস্তার এবং জ্বালানির দাম বৃদ্ধি। অন্যদিকে, ইন্ডিগো তাদের কম খরচের কৌশল এবং উন্নত ফ্লাইট ব্যবস্থাপনার কারণে মুনাফা दर्ज করেছে। এই পার্থক্য ভারতীয় এভিয়েশন সেক্টরের প্রতিযোগিতার তীব্রতা প্রদর্শন করে।

এই আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এটা স্পষ্ট যে ভারতীয় এভিয়েশন সেক্টরে কোম্পানিগুলির অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন। যেখানে কিছু এয়ারলাইন্স এখনও ক্ষতির সঙ্গে লড়ছে, সেখানে কিছু কোম্পানি তাদের পরিচালন দক্ষতার জোরে মুনাফা অর্জন করছে। এই পরিস্থিতি বিনিয়োগকারী এবং বাজারের জন্য ইঙ্গিত দেয় যে কোম্পানিগুলির কৌশল এবং ব্যবস্থাপনার প্রভাব সরাসরি আর্থিক পারফর্মেন্সের উপর পড়ে।

Leave a comment