মধ্যপ্রদেশে বিষাক্ত কাশির সিরাপ সেবনে ২০ শিশুর মৃত্যু, স্রসেন ফার্মার মালিক গ্রেপ্তার

মধ্যপ্রদেশে বিষাক্ত কাশির সিরাপ সেবনে ২০ শিশুর মৃত্যু, স্রসেন ফার্মার মালিক গ্রেপ্তার
সর্বশেষ আপডেট: 1 ঘণ্টা আগে

তামিলনাড়ুর স্রসেন ফার্মা কোম্পানির কোল্ড্রিফ কাফ সিরাপ থেকে মধ্যপ্রদেশে ২০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বিষাক্ত ভেজালের নিশ্চিতকরণের পর কোম্পানির মালিক এস রঙ্গনাথনকে চেন্নাই থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।

New Delhi: তামিলনাড়ুর ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি স্রসেন ফার্মা (Srusen Pharma) দ্বারা নির্মিত বিষাক্ত কোল্ড্রিফ কাফ সিরাপ (Coldrif Cough Syrup) দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। মধ্যপ্রদেশে এই সিরাপ সেবনের ফলে অন্তত ২০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও দুঃখের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এখন কোম্পানির মালিক এস. রঙ্গনাথন (S. Ranganathan)-কে চেন্নাই থেকে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

মৃত্যুর কারণ বিষাক্ত সিরাপ

মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া জেলায় এই ঘটনাটি প্রথম সামনে আসে যখন অনেক শিশুর স্বাস্থ্য হঠাৎ খারাপ হয়ে যায়। তদন্তে দেখা যায় যে সকলেই কোল্ড্রিফ কাফ সিরাপ সেবন করেছিল। ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় (lab test) স্পষ্ট হয় যে সিরাপে ভেজাল (contamination) ছিল। এই ভেজাল শিশুদের জন্য প্রাণঘাতী (fatal) প্রমাণিত হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে সিরাপের মধ্যে এমন রাসায়নিক উপাদান (chemicals) পাওয়া গেছে যা মানবদেহ, বিশেষ করে ছোট শিশুদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। অনেক পরিবার জানিয়েছে যে সিরাপ সেবনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের শিশুদের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায় এবং হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তারা মারা যায়।

এমপি পুলিশের অ্যাকশন: রঙ্গনাথন গ্রেপ্তার

ছিন্দওয়াড়ার এসপি অজয় পান্ডে জানিয়েছেন যে স্রসেন ফার্মার মালিক এস. রঙ্গনাথনকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারটি চেন্নাই (তামিলনাড়ু)-তে হয়েছে এবং এখন তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে মধ্যপ্রদেশে আনা হচ্ছে। পুলিশ কোম্পানির চেন্নাই-এর প্রধান কার্যালয়েও অভিযান চালিয়েছে, যেখান থেকে বেশ কিছু নথি, ফর্মুলেশন রেকর্ড এবং নমুনা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

আধিকারিকদের মতে, এই মামলায় গুণগত মানদণ্ড (Quality Standards) সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে কোম্পানিটি সিরাপ উৎপাদনে নিম্নমানের কাঁচামাল (substandard raw materials) ব্যবহার করেছিল।

পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ তদন্ত

রঙ্গনাথনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ উভয়ই তদন্ত দ্রুত করেছে। তদন্তকারী দল এখন এটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে যে ভেজালের ঘটনাটি কোথায় এবং কীভাবে ঘটেছে। এছাড়াও এটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে যে সিরাপ বিতরণের (distribution) সময় কোন কোন ডিলার এবং ওষুধের দোকান এটি বিক্রি করেছে।

এমপি পুলিশ তামিলনাড়ু এবং অন্যান্য রাজ্যে বিস্তৃত বিতরণ নেটওয়ার্কের (distribution network) উপরও নজর রেখেছে। আধিকারিকরা বলেছেন যে আগামী দিনে আরও গ্রেপ্তার সম্ভব।

ভুক্তভোগী পরিবারগুলিতে ক্ষোভ

এই त्रासदी অনেক পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। যে পরিবারগুলি তাদের নিষ্পাপ শিশুদের হারিয়েছে, তারা সরকারের কাছে কঠোর ব্যবস্থা এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছে। ভুক্তভোগী আত্মীয়রা বলছেন যে কোম্পানির অবহেলার কারণে তাদের শিশুদের জীবন চলে গেছে এবং এখন দোষীদের কঠোর শাস্তি (strict punishment) হওয়া উচিত।

অনেক অভিভাবক এও বলেছেন যে তারা এই সিরাপ স্থানীয় মেডিকেল স্টোর থেকে কিনেছিলেন, যাদের এর গুণমান নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না। এখন তারা চায় যে এই ধরনের ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত হোক যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো পরিবারকে এই কষ্ট সহ্য করতে না হয়।

সরকারের অবস্থান

মধ্যপ্রদেশ সরকার এই মামলাটিকে গুরুতর অপরাধের বিভাগে রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে দোষীদের কোনো মূল্যে ক্ষমা করা হবে না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ (compensation) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

এর সাথে সাথে, সরকার সমস্ত হাসপাতাল এবং ঔষধ বিক্রেতাদের নির্দেশ দিয়েছে যে তারা কোল্ড্রিফ সিরাপের বিক্রি অবিলম্বে বন্ধ করুক। স্বাস্থ্য বিভাগ জনগণের কাছে আবেদন করেছে যে যদি তাদের কাছে এই সিরাপ থাকে, তাহলে অবিলম্বে এটি নষ্ট করে দিন এবং শিশুদের চিকিৎসার জন্য (medical check-up) হাসপাতালে নিয়ে যান।

Leave a comment