অডিওর নামে বিপদ!
ঘণ্টার পর ঘণ্টা কানে গুঁজে রাখা ব্লুটুথ হেডফোন আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। Apple AirPods হোক বা Bose-এর হেডসেট, প্রযুক্তির সুবিধা নিতে গিয়ে আমরা কি নিজের অজান্তেই মারাত্মক বিপদের দিকে এগিয়ে চলেছি?
RF রেডিয়েশনের ফাঁদে! নিরব ঘাতকের মতো ছড়াচ্ছে বিপদ?
রেডিও তরঙ্গে লুকিয়ে মৃত্যুর ইঙ্গিত!এই হেডফোনগুলি থেকে নির্গত রেডিওফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশন (RFR) মস্তিষ্কের কোষে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের একাংশের। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত গবেষণায় এর প্রমাণ মেলেনি, তবু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ব্লুটুথ বনাম ক্যানসার: কেন এমন সন্দেহ?
ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ছায়া!২০১৫ সালে কিছু গবেষণায় দাবি করা হয়েছিল, দীর্ঘ সময় EMR-এর সংস্পর্শে থাকলে টিউমার, বন্ধ্যাত্ব এবং নানা স্নায়বিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এরপর থেকেই ক্যানসার সংক্রান্ত আলোচনা শুরু।
AirPods আসতেই বাড়ল দুশ্চিন্তা!
জনপ্রিয়তার সঙ্গে আশঙ্কার বৃদ্ধি!২০১৯ সালে AirPods এবং অন্যান্য ওয়্যারলেস হেডসেট বাজার কাঁপাতে শুরু করে। এর সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানী মহলে RFR নিয়ে উদ্বেগও বাড়তে থাকে। বিশেষ করে এই কম-ব্যান্ডউইথ সিগন্যাল কি শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক?
কোন রেডিয়েশন কতটা ভয়ানক?
আয়নাইজিং বনাম নন-আয়নাইজিং তরঙ্গ!রেডিয়েশন প্রধানত দুই প্রকার—আয়নাইজিং (যেমন X-ray) যা সরাসরি DNA নষ্ট করতে পারে, ও নন-আয়নাইজিং (যেমন ব্লুটুথ), যা তুলনামূলকভাবে অনেক দুর্বল। তবে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এখনও অজানা।
শিশুরা কি বেশি ঝুঁকিতে?
পাতলা করোটিতে বেশি শোষণ!শিশুদের খুলি তুলনামূলকভাবে পাতলা। ফলে, বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, তাদের ক্ষেত্রে এই RFR তরঙ্গ বেশি শোষিত হয় এবং দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব আরও মারাত্মক হতে পারে।
কতটা কম রেডিয়েশন ব্লুটুথে?
সেলফোনের তুলনায় অনেক কম!বর্তমানে উপলব্ধ তথ্যানুসারে, ব্লুটুথ ডিভাইসের RFR মাত্রা সেল ফোনের চেয়ে ১০ থেকে ৪০০ গুণ কম। তাত্ত্বিকভাবে এটি বিপজ্জনক নয়, তবে দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফল এখনও পরিষ্কার নয়।
National Cancer Institute কী বলছে?
রেডিয়েশন থাকলেও DNA ক্ষতির সম্ভাবনা কম!২০১৯ সালের একটি রিপোর্ট বলছে, ব্লুটুথের তরঙ্গ X-ray-এর তুলনায় লক্ষ লক্ষ গুণ দুর্বল। National Cancer Institute স্পষ্ট বলেছে, এই তরঙ্গ DNA নষ্ট করতে যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপেও কোনও প্রমাণ নেই
তথ্য বলছে আশ্বস্ত হওয়ার কথা!আজ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্লুটুথ ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের ক্যানসারের পরিমাণ বেড়েছে, এমন কোনও বৈজ্ঞানিক তথ্য মেলেনি। তবে এই তথ্যে কি সত্যিই নিশ্চিন্ত হওয়া যায়?
তবুও সতর্ক থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ!
RFR-কে ‘সম্ভাব্য ক্যান্সারসৃষ্টিকারী’ ঘোষণা!CDC, FDA বা FCC রেডিয়েশনের ঝুঁকি কম বললেও WHO-এর অধীনস্থ IARC এখনও RFR-কে ‘possibly carcinogenic’ তালিকাভুক্ত করেছে। মানে, সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
কী করা উচিত?
সতর্ক থাকুন, প্রযুক্তি হোক বন্ধু—not শত্রু!বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্লুটুথ ডিভাইসের দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার এড়ানোই সঠিক পদক্ষেপ। Wired হেডফোন বা স্পিকারের বিকল্প বেছে নেওয়া, শিশুদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যবহার বন্ধ করা এবং প্রয়োজনে Airplane Mode ব্যবহার করা ভালো।