শিশুর চিকিৎসায় 'অশালীন' মন্তব্য, চম্বার ডাক্তারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ; তদন্ত কমিটি গঠন

শিশুর চিকিৎসায় 'অশালীন' মন্তব্য, চম্বার ডাক্তারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ; তদন্ত কমিটি গঠন
সর্বশেষ আপডেট: 3 ঘণ্টা আগে

হিমাচল প্রদেশের চম্বা জেলার এক মহিলা সিভিল হাসপাতালের এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। মহিলার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি ডাক্তারের বিরুদ্ধে অশালীন ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন।

হিমাচল প্রদেশ সংবাদ: হিমাচল প্রদেশের চম্বা জেলা থেকে একটি লজ্জাজনক ঘটনা সামনে এসেছে, যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর প্রশ্ন তুলেছে। তিসা সিভিল হাসপাতালের এক তরুণ ডাক্তারের বিরুদ্ধে এক মহিলা অভদ্রতার অভিযোগ এনেছেন। মহিলা জানিয়েছেন যে, ডাক্তার তার আড়াই বছরের মেয়ের চিকিৎসার সময় ভুল ভাষা ব্যবহার করেছেন। অভিযোগকারী মহিলার কান্না জড়িত ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হচ্ছে।

মহিলা ভিডিওতে নিজের দুরবস্থার কথা শোনালেন

হিমাচল প্রদেশের চম্বা জেলার তিসা অঞ্চল থেকে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে বাবলি নামের এক মহিলা সিভিল হাসপাতালের ডাক্তার কুলভূষণের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। মহিলা একটি আবেগপূর্ণ ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে, তার আড়াই বছরের মেয়ের যৌনাঙ্গে জ্বালা করছিল, যার চিকিৎসার জন্য তিনি হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন।

মহিলার মতে, সেই সময় ডাক্তার হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি ফোনে নার্সকে ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন, কিন্তু মহিলা পরীক্ষা ছাড়া ওষুধ নিতে অস্বীকার করেন। এরপর, মহিলা দাবি করেছেন যে ডাক্তার নার্সকে বলেছিলেন—“আমি কি আঙুল ঢুকিয়ে পরীক্ষা করব?” এই কথায় মহিলা অত্যন্ত আঘাত পেয়েছিলেন এবং ভিডিওতে কাঁদতে কাঁদতে নিজের দুর্দশার কথা ভাগ করে নিয়েছেন।

“এমন কথা ডাক্তারের মুখে শোভা পায় না” – মহিলার বক্তব্য

ভিডিওতে মহিলা বলেছেন যে, একটি ছোট বাচ্চার জন্য এমন ভাষা ব্যবহার করা কোনোভাবেই উচিত নয়। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন যে, একজন ডাক্তার, যার পেশার মর্যাদা রক্ষা করা উচিত, তিনি কীভাবে এমন কথা বলতে পারেন।

মহিলা প্রশাসনের কাছে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেছেন যে, এটি শুধুমাত্র তার পরিবারের নয়, প্রতিটি বাবা-মায়ের উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেছেন যে, যদি এমন ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের সরকারি হাসপাতালের উপর থেকে আস্থা উঠে যাবে।

ডাক্তারের বক্তব্য: “কথাটিকে ভুল অর্থে নেওয়া হয়েছে”

মহিলার অভিযোগের পর ডাক্তার কুলভূষণও একটি ভিডিও প্রকাশ করে নিজের সাফাই দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, যেদিনকার ঘটনার কথা বলা হচ্ছে, সেদিন তিনি কেবল মেডিকেল প্রক্রিয়া সম্পর্কে কর্মীদের বুঝিয়েছিলেন। তার মতে, “আঙুল ঢুকিয়ে পরীক্ষা করা” কথাটি একটি মেডিকেল টার্ম হিসেবে বলা হয়েছিল, কিন্তু মহিলা তার ভুল অর্থ করেছেন।

ডাক্তার বলেছেন যে, তিনি কখনও কারও অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্য রাখেননি। তার বক্তব্য অনুযায়ী, এই ঘটনাটি সম্পূর্ণ ভুল বোঝাবুঝির ফল, এবং এটিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা একটি অনুচিত পদক্ষেপ ছিল।

“যদি কাউকে আঘাত দিয়ে থাকি, তবে ক্ষমা চাইছি” – ডাক্তার কুলভূষণ

ভিডিওতে ডাক্তার এও বলেছেন যে, তার কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্য ছিল না এবং যদি তার কথায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন তবে তিনি ক্ষমা চাইছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, তার মন্তব্যটি শুধুমাত্র চিকিৎসা প্রক্রিয়া বোঝানোর প্রেক্ষাপটে ছিল।

ডাক্তার আরও যোগ করেছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিনা তদন্তে ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় তার ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়েছে। তিনি জনগণের কাছে আবেদন করেছেন যে, এই বিষয়টি তথ্যের ভিত্তিতে দেখা হোক, আবেগপ্রবণ হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া না হয়।

ঘটনার তদন্তের জন্য গঠিত তিন সদস্যের কমিটি

এই বিতর্কের পর চম্বার মুখ্য চিকিৎসা আধিকারিক (CMO) বিপিন কুমার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, সমগ্র বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সিএমও বলেছেন যে, কমিটি সমস্ত পক্ষের বক্তব্য রেকর্ড করবে এবং প্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রশাসন জানিয়েছে যে, যদি ডাক্তার দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a comment