মিথিলাতে চৌরচন পূজা চতুর্থীর চাঁদ (Chauth Chandra) -এর দিন চন্দ্রদেবের বিধিপূর্বক পূজা করার জন্য পালিত হয়। মনে করা হয় যে সঠিক পদ্ধতিতে না করলে মিথ্যে অপবাদ লাগতে পারে। এই উৎসব পরিবার ও সমাজে সম্প্রীতি, একতা, সুখ-সমৃদ্ধি এবং মানসিক শান্তির বার্তা দেয়। ২০২৫ সালের ২৬শে আগস্ট এই উৎসব পালিত হবে।
চৌরচন পূজা ২০২৫: মিথিলা অঞ্চলে ২৬শে আগস্ট চৌরচন পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এই দিন চতুর্থীর চাঁদ (Chauth Chandra) উপলক্ষ্যে চন্দ্রদেবের বিধিপূর্বক পূজা করা হয়। পরিবারের সকল সদস্য মিলে এই উৎসবে অংশ নেন এবং প্রসাদ বিতরণ করেন। বিশ্বাস করা হয় যে সঠিক পদ্ধতিতে না করলে মিথ্যে অপবাদ লাগতে পারে, তাই বিশেষ মন্ত্র উচ্চারণ করে দোষ থেকে মুক্তির প্রার্থনা করা হয়। এই উৎসব শুধুমাত্র ধর্মীয় গুরুত্ব রাখে না, বরং পারিবারিক সম্প্রীতি, একতা এবং জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি আনার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হয়।
পরিবার ও সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক
চৌরচন পূজা পরিবারের সকল সদস্যের সাথে মিলিতভাবে আয়োজন করা হয়। এই দিনে চন্দ্র দর্শনের পর প্রসাদ বিতরণ করা হয় এবং এটি পারিবারিক সম্প্রীতি ও একতার বার্তা ছড়ায়। এই বছর চৌরচন পূজা ২০২৫ সালের ২৬শে আগস্ট পালিত হবে। মিথিলার এই ঐতিহ্য শুধু ধর্মীয় তাৎপর্যই বহন করে না, সেইসাথে সামাজিকভাবেও স্থানীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
চৌরচন পূজার পবিত্র কাহিনী
মিথিলার ঐতিহ্য অনুসারে, এক সময় গণেশ ভগবান তাঁর বাহন মূষকের সাথে কৈলাস ভ্রমণে যাচ্ছিলেন, তখন চন্দ্রদেবের হাসির আওয়াজ শোনা যায়। গণেশ জি এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে, চন্দ্রদেব বলেন যে তিনি গণেশ ভগবানের অদ্ভুত রূপ দেখে হেসেছেন। চন্দ্রদেব নিজের রূপের প্রশংসা করে অন্যদের উপহাস করতে শুরু করেন। গণেশ ভগবান তাঁর অহংকারী স্বভাব দেখে অভিশাপ দেন যে, যে কেউ এই দিনে চন্দ্রের দর্শন করবে, তাকে জীবনে মিথ্যা অপবাদের সম্মুখীন হতে হবে।
চন্দ্রদেব নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং গণেশ জির কাছে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে বিধি-বিধানের মাধ্যমে পূজা করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। গণেশ জি তাঁকে ক্ষমা করলেও, অভিশাপ সম্পূর্ণরূপে ফিরিয়ে নেননি। পরিবর্তে তিনি বর দেন যে, যে ব্যক্তি এই তিথিতে চন্দ্রের পূজা করবে, তার উপর কলঙ্কিত চাঁদের প্রভাব কম হবে। এই কাহিনীর কারণে মিথিলা অঞ্চলে চৌরচন ব্রত এবং চন্দ্রের বিধিপূর্বক পূজার ঐতিহ্য শুরু হয়, যা আজও সৌভাগ্য এবং জীবনের শুদ্ধতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।