চিনের রাষ্ট্রদূত শু ফেহং ভারতের উপর আমেরিকার শুল্ক আরোপকে "গুণ্ডামি" আখ্যা দিয়ে ভারতের সমর্থন করেছেন। তিনি ভারত ও চীনকে এশিয়ার দুটি ইঞ্জিন হিসেবে অভিহিত করে অংশীদারিত্বকে বিশ্ব স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি বলেছেন এবং বলেছেন যে উভয় দেশের মতভেদ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে সহযোগিতা জোরদার করা উচিত।
Trump Tariff: নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূত শু ফেহং আমেরিকা কর্তৃক ভারতের উপর চাপানো ৫০% পর্যন্ত শুল্কের সমালোচনা করে এটিকে "গুণ্ডামি" বলেছেন। তিনি বলেন, আমেরিকা মুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা নিয়ে এখন শুল্ককে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করছে। ফেহং ভারত ও চীনকে এশিয়ার দুটি বড় ইঞ্জিন হিসেবে উল্লেখ করে সহযোগিতা ও ঐক্যের উপর জোর দিয়েছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন যে চীন ভারতীয় পণ্যকে তাদের বাজারে আরও জায়গা দেবে।
ভারত ও চীনকে এশিয়ার উন্নয়নের ইঞ্জিন বললেন চিনের রাষ্ট্রদূত
চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারত ও চীন উভয়ই এশিয়ার উন্নয়নের ইঞ্জিন। এই দুটি দেশ একসঙ্গে চললে পুরো এশিয়ার অর্থনীতি শক্তিশালী হবে এবং বিশ্বব্যাপী ভারসাম্য বজায় থাকবে। তিনি বলেন, উভয় দেশের পারস্পরিক আস্থা বাড়ানো উচিত এবং মতভেদগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। ফেহং আরও বলেন যে, ভারত ও চীন প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং অংশীদার। এই অংশীদারিত্ব শুধু উভয় দেশের জন্য নয়, পুরো এশিয়া এবং বিশ্বের জন্য লাভজনক হতে পারে।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে, ভারত ও চীনের মতো বড় প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা করাই উন্নয়নের পথ। যদি উভয় দেশ একসঙ্গে কাজ করে, তাহলে এশিয়ায় স্থিতিশীলতা আসবে এবং বিশ্বব্যাপী নতুন শক্তির সঞ্চার হবে।
ভারতীয় পণ্যকে চীনা বাজারে উৎসাহ
রাষ্ট্রদূত ভারতীয় পণ্যকে চীনা বাজারে উৎসাহ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভারতের শক্তি আইটি, সফটওয়্যার ও বায়োমেডিসিনের ক্ষেত্রে, যেখানে চীন ইলেকট্রনিক্স, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও নতুন জ্বালানি ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। যদি উভয় দেশ এই ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা বাড়ায়, তাহলে এর সরাসরি সুবিধা সাধারণ মানুষ পাবে।
ফেহং বলেন, চীন ভারতীয় পণ্যকে তাদের বাজারে আরও জায়গা দিতে প্রস্তুত। এই পদক্ষেপ উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে এবং পারস্পরিক বিশ্বাসকেও বাড়াবে।
বৈশ্বিক পরিবর্তন নিয়ে চীনের বার্তা
চীনের রাষ্ট্রদূত তাঁর ভাষণে বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বিশ্ব এই মুহূর্তে বড় পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় এটি সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। তিনি বলেন, এমন সময়ে ভারত ও চীনের সহযোগিতা আরও বেশি জরুরি হয়ে পড়ে।
ফেহং বলেন, ভারত ও চীনকে একসঙ্গে একটি সুবিন্যস্ত এবং ভারসাম্যপূর্ণ বহুধ্রুবীয় বিশ্ব নির্মাণের দায়িত্ব নিতে হবে। এটি কেবল এশিয়ার জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মানুষের মধ্যে সংযোগের উপর জোর
চীনের রাষ্ট্রদূত উভয় দেশের মধ্যে মানুষের পারস্পরিক সংযোগকেও শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। তিনি জানান, চীন ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের জন্য কৈলাস পর্বত ও মানস সরোবর যাত্রা পুনরায় শুরু করেছে। এর পাশাপাশি ভারতও চীনা নাগরিকদের জন্য পর্যটন ভিসা সুবিধা পুনরুদ্ধার করেছে।
রাষ্ট্রদূতের মতে, এই পদক্ষেপ উভয় দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও জনযোগাযোগকে মজবুত করবে। তিনি বলেন, ভারত ও চীনের পারস্পরিক বিশ্বাস বাড়ানো উচিত এবং আলোচনার মাধ্যমে মতভেদের সমাধান করা উচিত।