চীনা প্রধানমন্ত্রীর উত্তর কোরিয়া সফর: ৮০তম বার্ষিকী উদযাপন ও সম্পর্ক জোরদার

চীনা প্রধানমন্ত্রীর উত্তর কোরিয়া সফর: ৮০তম বার্ষিকী উদযাপন ও সম্পর্ক জোরদার

চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং ২০১৯ সালের পর উত্তর কোরিয়ার প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর করবেন। তিনি ক্ষমতাসীন দলের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনে অংশ নেবেন। চীন-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি রাশিয়া এবং ভিয়েতনামও এতে অংশ নেবে।

ওয়ার্ল্ড আপডেট: চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং উত্তর কোরিয়া সফরে যাচ্ছেন। ২০১৯ সালের পর এটি কোনো চীনা উচ্চ পদস্থ নেতার প্রথম সফর। লি কিয়াং বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে উত্তর কোরিয়া যাবেন এবং সেখানকার ক্ষমতাসীন দলের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনে অংশ নেবেন। চীন ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক জোরদার করার এই পদক্ষেপকে কৌশলগত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

চীন ও উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কে নতুন অধ্যায়

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন চীন সফর করেছিলেন। এর পর চীনের উত্তর কোরিয়া সফরকে সম্পর্ক আরও গভীর করার একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। লি কিয়াং-এর সফর উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক মজবুত করা, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম এত উচ্চ পদস্থ চীনা নেতা উত্তর কোরিয়া সফর করছেন।

ক্ষমতাসীন দলের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনে অংশ নেবেন লি কিয়াং

চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এই সময়ে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দলের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনে অংশ নেবেন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সফরের তথ্য দিতে গিয়ে বলেছে যে, এই অনুষ্ঠানটি চীন-উত্তর কোরিয়া সম্পর্কের গভীর বোঝাপড়া এবং ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বের প্রতীক। অনুষ্ঠানে অন্যান্য আন্তর্জাতিক নেতারাও উপস্থিত থাকবেন, যা উত্তর কোরিয়ার বৈশ্বিক অবস্থানের উপরও আলোকপাত করবে।

রাশিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিও সফর করবেন

এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে রাশিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি দিমিত্রি মেদভেদেভও উপস্থিত থাকবেন। এটি ইঙ্গিত দেয় যে উত্তর কোরিয়া কেবল চীনের সাথেই নয়, রাশিয়ার সাথেও তার সম্পর্ক উন্নত করছে। ইউক্রেন যুদ্ধের সময় কিম জং উন রাশিয়ার সাহায্যে উত্তর কোরিয়া থেকে সৈন্য পাঠিয়েছিলেন। এই অনুষ্ঠানে রাশিয়ার উপস্থিতি উভয় দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও কৌশলগত সহযোগিতা তুলে ধরে।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, চীন ও উত্তর কোরিয়া কেবল প্রতিবেশীই নয়, ঐতিহ্যবাহী বন্ধুও। এই পদক্ষেপ চীনা সরকারের কৌশলগত নীতির অধীনে নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি উত্তর কোরিয়ার সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মন্ত্রণালয় বলেছে যে, এই সফর উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে সাহায্য করবে।

২০১৯ সালে শি জিনপিং-এর সফর

লি কিয়াং-এর এই সফরটি এই কারণেও গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর আগে ২০১৯ সালে চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং উত্তর কোরিয়া সফর করেছিলেন। সেই সময়ে উভয় দেশের সম্পর্ক নিয়ে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি আলোচনা করা হয়েছিল। এখন ২০২৫ সালে লি কিয়াং-এর সফর উভয় দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিক নির্দেশক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ভিয়েতনামের নেতারাও সফর করবেন

এই বছর ভিয়েতনামের নেতারাও ২০০৭ সালের পর এই প্রথম উত্তর কোরিয়া সফর করবেন। এটি ইঙ্গিত দেয় যে উত্তর কোরিয়া ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক স্তরে তার অবস্থান মজবুত করার চেষ্টা করছে। চীন, রাশিয়া এবং ভিয়েতনামের নেতাদের এই সফর উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রনীতি এবং কৌশলগত জোটের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

Leave a comment