ধনতেরাস ২০২৫ উপলক্ষে শনির সাড়েসাতি ও ঢাইয়ার কুপ্রভাব কমানোর জন্য কিছু সহজ প্রতিকার জানানো হয়েছে। শনি মন্দিরে প্রদীপ জ্বালানো, শনি স্তোত্র পাঠ, পশুপাখির সেবা, শিব-হনুমান পূজা এবং বিশেষ কিছু জিনিস দান করলে জীবনে ইতিবাচক শক্তি, সমৃদ্ধি ও মানসিক শান্তি আসে। এই প্রতিকারগুলি বিশেষত মেষ, সিংহ, ধনু, মীন এবং কুম্ভ রাশির জাতকদের জন্য উপকারী।
ধনতেরাসে শনির প্রতিকার: এই বছর ধনতেরাস ১৮ অক্টোবর, শনিবার পড়ছে এবং সাড়েসাতি ও ঢাইয়ার প্রভাবে থাকা জাতকদের জন্য এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ভারতের প্রধান মন্দির ও বাড়িতে এই দিনে শনি মন্দিরে প্রদীপ জ্বালানো, শনি স্তোত্র পাঠ, পশুপাখির সেবা, শিব-হনুমান পূজা এবং সরিষার তেল, তিল, লোহা ও বিউলির ডাল দান করার ঐতিহ্য রয়েছে। এই প্রতিকারগুলি জীবনে নেতিবাচক প্রভাব কমাতে, মানসিক শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে করা হয় এবং বিশেষত মেষ, সিংহ, ধনু, মীন এবং কুম্ভ রাশির জাতকদের জন্য উপকারী।
শনির মন্দিরে প্রদীপ জ্বালানো
ধনতেরাসের দিনে শনি মন্দিরে গিয়ে সরিষার তেলের প্রদীপ জ্বালানো অত্যন্ত ফলপ্রসূ প্রতিকার হিসাবে বিবেচিত। এই সহজ কাজটি আপনার ভক্তির পাশাপাশি শনিদেবকে তুষ্ট করে। প্রদীপ জ্বালানোর মাধ্যমে শুধু নেতিবাচক শক্তিই কমে না, জীবনে শান্তি ও ভারসাম্যও আসে। জ্যোতিষাচার্যরা বলেন যে, ধনতেরাসে করা এই প্রতিকার সাড়েসাতি ও ঢাইয়ার খারাপ প্রভাব কমাতে সহায়ক হয়।
প্রদোষকালে শনি স্তোত্র পাঠ
ধনতেরাসের দিনে প্রদোষকালে, অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর শনি স্তোত্র পাঠ করা শুভ বলে মনে করা হয়। শনি স্তোত্রের নিয়মিত পাঠ জীবনে ভারসাম্য আনে এবং পারিবারিক জীবনে সুখ-শান্তি বজায় রাখে। এই প্রতিকারটি বিশেষত সেই জাতকদের জন্য উপকারী, যারা সাড়েসাতি বা ঢাইয়া দ্বারা প্রভাবিত। জ্যোতিষশাস্ত্রীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, এই সময়ে শনির কৃপা লাভ করা সহজ হয় এবং জীবনের সমস্যাগুলি হ্রাস পায়।
পশুপাখির সেবা করুন
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, শনিদেব পশুপাখির সেবা করা ব্যক্তির উপর সন্তুষ্ট থাকেন। ধনতেরাসের দিনে গরু, কাক, কুকুর এবং অন্যান্য পশুপাখিকে খাবার খাওয়ানো শুভ বলে বিবেচিত। এই কাজটি করলে শনির কুপ্রভাব কমে এবং জীবনে সুখ-সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত হয়। পশুপাখির সেবা কেবল পুণ্যের কাজ নয়, এটি মানসিক ভারসাম্য ও ইতিবাচক শক্তিরও উৎস।
শিব ও হনুমান পূজা
ধনতেরাসের দিনে ভগবান শিব এবং হনুমানজির পূজা করা অত্যন্ত উপকারী। হনুমান চালিশা পাঠ এবং শিবলিঙ্গে জলাভিষেক করলে শনিদেব প্রসন্ন হন। এই প্রতিকারগুলির মাধ্যমে কেবল জীবনে সমৃদ্ধিই আসে না, বরং মানসিক শান্তি ও স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হয়। বিশেষত হনুমানজির পূজা করলে সংকট ও ভয় থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, যা শনির খারাপ প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।
দানের মাধ্যমে শনির কৃপা
ধনতেরাসের দিনে কিছু বিশেষ জিনিস দান করলে শনির কৃপা লাভ হয়। সরিষার তেল, তিল, লোহার জিনিসপত্র এবং বিউলির ডাল দান করা অত্যন্ত শুভ বলে বিবেচিত। এই প্রতিকারটি সেই জাতকদের জন্য আরও বেশি উপকারী যারা সাড়েসাতি বা ঢাইয়া দ্বারা প্রভাবিত। দান করার মাধ্যমে কেবল ঘরে ইতিবাচক শক্তিই আসে না, বরং জীবনে আর্থিক ও সামাজিক ভারসাম্যও স্থাপিত হয়।
খেয়াল রাখার মতো বিষয়গুলি
- ধনতেরাসের দিনে করা প্রতিকারগুলি নিয়মিত অনুসরণ করুন।
- দান ও পূজার সময় মনকে শুদ্ধ ও ধ্যান একাগ্র রাখুন।
- প্রদীপ জ্বালানো এবং স্তোত্র পাঠের সময় সঠিক উচ্চারণ করলে শনি গ্রহের থেকে আরও বেশি লাভ হয়।
- পশুপাখির সেবা করার সময় তাদের সম্মান ও ভালোবাসার সাথে খাবার দিন।
সাড়েসাতি ও ঢাইয়ার প্রভাবে জীবনে চ্যালেঞ্জ বেড়ে যায়। তবে ধনতেরাস ২০২৫-এর পবিত্র মুহূর্তে করা সহজ প্রতিকারগুলি শনি গ্রহের কুপ্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। শনি মন্দিরে প্রদীপ জ্বালানো, শনি স্তোত্র পাঠ, পশুপাখির সেবা, শিব ও হনুমানজির পূজা এবং বিশেষ জিনিস দান করার মতো প্রতিকারগুলি জীবনে ইতিবাচক শক্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। এই প্রতিকারগুলি অবলম্বন করে আপনি শুধু শনিদেবের কৃপাই লাভ করতে পারবেন না, বরং আপনার জীবনের সমস্যা থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।