বলিউড অভিনেত্রী গৌতমী কাপুর সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে শৈশবে ঘটে যাওয়া এক ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা প্রকাশ করেছেন। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে তিনি বাসে করে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ তাঁর পাশে বসা একজন অচেনা ব্যক্তি তাঁর প্যান্টে হাত ঢুকিয়ে দেন। ঘটনার সময় গৌতমী বুঝতে পারেননি ঠিক কী ঘটছে। তিনি বলেছেন, “আমি এত ছোট ছিলাম যে মুহূর্ত কয়েক লাগল বোঝার জন্য।”
ভয়ের ১৫–২০ মিনিট
এই ঘটনায় গৌতমী প্রায় ১৫–২০ মিনিট ধরে আতঙ্কে ভুগেছেন। তিনি বাস থেকে নেমে পড়েছিলেন, কিন্তু ভয়ের কারণে ভাবছিলেন, লোকটি হয়তো তাঁর পিছু নিচ্ছে। বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত তিনি মাকে কিছু বলতে সাহস পাননি। এই অভিজ্ঞতা তাঁর শৈশবকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।
মায়ের পরামর্শ: ভয়ের চেয়ে সাহস
পরবর্তীতে সাহস সঞ্চয় করে গৌতমী মাকে পুরো ঘটনা জানিয়েছিলেন। তাঁর মা তাঁকে বলেন, ভয় পাওয়ার পরিবর্তে, তুমি তাকে চড় মারো বা কলার ধরে রাখো। এই কথাগুলো গৌতমীর মনে গভীরভাবে ছাপ ফেলে। এরপর তিনি সবসময় মনে রেখেছেন, বিপদের মুহূর্তে ভয় না পেয়ে নিজেকে রক্ষা করাই মূল।
সতর্কতার পাঠ
গৌতমী বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে জোরে চিৎকার করতে হবে। প্রয়োজনে মরিচের স্প্রে ব্যবহার করতে বা জুতা খুলে প্রতিরোধ করতে হবে। অভিনেত্রী মনে করিয়ে দেন, শারীরিক ও মানসিক সচেতনতা শিখানো শৈশব থেকেই গুরুত্বপূর্ণ।
OTT-তে নতুন চ্যালেঞ্জ
এখন OTT প্ল্যাটফর্মে ‘স্পেশ্যাল অপস’ সিরিজে দেখা যাচ্ছে গৌতমীকে। সিজন থ্রিতে তিনি হিম্মত সিং-এর স্ত্রী সরোজের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর চরিত্রটি শক্তিশালী এবং সাহসী। অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, বাস্তব জীবনের ভয়কে পেছনে ফেলে চরিত্রে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠা যায়।
চলচ্চিত্র ও টিভিতে তার যাত্রা
গৌতমী কাপুর টিভি এবং চলচ্চিত্রে বহু বছর ধরে সক্রিয়। ‘ঘর এক মন্দির’ ছবির সেটেই ২০০০ সালে তাঁর দেখা হয় অভিনেতা রাম কাপুরের সঙ্গে। দুই বছরের প্রেমের পর ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৩ সালে তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তাদের দুই সন্তান রয়েছে।
পারিবারিক সমর্থন ও শিক্ষা
গৌতমী জানান, তাঁর মা তাঁকে ছোটবেলায় সতর্ক থাকার শিক্ষা দিয়েছিলেন। বিপদের মুহূর্তে সাহসী হতে শিখিয়েছিলেন। এই শিক্ষা তাঁকে জীবনের প্রতিটি পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষা ও সচেতন থাকতে সাহায্য করেছে। OTT-তে নতুন চরিত্রে অভিনয় করার সময়ও এই মানসিক দৃঢ়তা কাজে লেগেছে।
শিক্ষণীয় বার্তা
গৌতমী কাপুরের অভিজ্ঞতা আমাদের সকলের জন্য সতর্কতার বার্তা বহন করে। বিশেষত তরুণীদেরকে শিখিয়েছে, শারীরিক নিরাপত্তা ও মানসিক দৃঢ়তা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। বিপদ মুহূর্তে ভয় না পেয়ে সচেতনভাবে পদক্ষেপ নেওয়াই বড় শক্তি।
প্রেরণার গল্প
এই ঘটনাটি গৌতমীকে শুধু ভয় দেখায়নি, বরং আত্মবিশ্বাসী হতে শিখিয়েছে। তিনি আজও মনে করেন, শৈশবের সেই কষ্টকর মুহূর্ত তাঁকে শক্তিশালী করে তুলেছে। OTT-তে নতুন চরিত্রে তিনি সেই সাহসিকতাকে দেখিয়েছেন, যা দর্শকদের প্রেরণা জোগায়।
শেষ কথা
গৌতমী কাপুরের গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রতিটি বিপদের মুহূর্তে সচেতন থাকা, সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া এবং পরিবারের পরামর্শকে মনে রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। OTT-তে অভিনয় ও বাস্তব জীবনের এই অভিজ্ঞতা মিলিয়ে তিনি একটি প্রেরণামূলক চরিত্রের উদাহরণ স্থাপন করেছেন।