দেশজুড়ে বর্ষা পুরোদমে গতি ধরেছে এবং এর প্রভাব প্রতিটি কোণে দৃশ্যমান হচ্ছে। দিল্লি-এনসিআর সহ উত্তর ভারতের অনেক অংশে ঝমঝম বৃষ্টির কারণে মানুষ তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেয়েছে, তবে অন্যদিকে, এই বর্ষা অনেক রাজ্যে বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞও ঘটিয়েছে।
IMD আবহাওয়ার পূর্বাভাস: দেশে বর্ষা এবার অনেক এলাকায় মানুষকে গরম থেকে মুক্তি দিয়েছে, আবার অন্যদিকে ভয়াবহ ধ্বংসও ঘটিয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (IMD) সতর্ক করেছে যে আগামী দিনগুলোতে দেশের উত্তর, মধ্য এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত থাকবে। এর কারণে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, বিহার, রাজস্থান সহ ১০টিরও বেশি রাজ্যে রেড এবং অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
হিমাচল-উত্তরাখণ্ডে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে
হিমাচল প্রদেশে গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে একটানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবন সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নদীতে জলস্ফীতি এবং ভূমিধসের কারণে অনেক রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে কয়েক ডজন গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রাজ্য প্রশাসন সোমবার চারটি জেলায় স্কুল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়াও, বৃষ্টি সম্পর্কিত ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এই বর্ষা মৌসুমে হিমাচলে মৃতের সংখ্যা ৩৯-এ পৌঁছেছে।
উত্তরাখণ্ডের বারকোট এলাকায় মেঘ ভাঙার ঘটনায় ৯ জন শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে ২ জনের মৃতদেহ সোমবার উদ্ধার করা হয়েছে। রাজ্যে পাহাড় ধস, সেতু ভেঙে যাওয়া এবং নদীতে জলস্ফীতির কারণে অনেক এলাকা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন সংবেদনশীল এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের বাড়িতে থাকার আবেদন জানিয়েছে।
ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং মধ্যপ্রদেশে সতর্কতা
IMD-এর মতে, ঝাড়খণ্ডে ৩০ জুন এবং ১ জুলাই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। একইভাবে, ৪ ও ৫ জুলাই বিহার ও মধ্যপ্রদেশে মুষলধারে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে এই রাজ্যগুলিতে জলমগ্নতা এবং রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাই স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশিকাগুলি অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি হবে।
রাজস্থানে বজ্রপাতে ৫ জনের মৃত্যু
রাজস্থানে রবিবার ২৪টি জেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে এবং সোমবার ২৭টি জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই সময়ে, বিভিন্ন দুর্ঘটনায় বজ্রপাত এবং পানিতে ডুবে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের মতে, বর্ষা এখন পাকিস্তান পর্যন্ত পৌঁছেছে এবং আগামী ৩-৪ দিন রাজ্যে অনেক জায়গায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
উত্তর-পূর্বেও ভারী বৃষ্টির দাপট
অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরাতেও ২ থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এখানে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যা ভূমিধস এবং বন্যার পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে। কোঙ্কন, গোয়া, গুজরাট এবং মধ্য মহারাষ্ট্রের ঘাট এলাকাতেও আগামী ৭ দিনে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। মারাঠওয়াড়ায় আজ ৩০ জুন ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
