চোখের যত্নে সুপারফুড: ঝকঝকে দৃষ্টির জন্য রোজকার পাতে রাখুন এই ফল ও সবজি

চোখের যত্নে সুপারফুড: ঝকঝকে দৃষ্টির জন্য রোজকার পাতে রাখুন এই ফল ও সবজি

চোখের যত্নের খাবার: আজকের ডিজিটাল যুগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা, দূষণ ও মানসিক চাপ—এই তিনে চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে দৃষ্টিশক্তি রক্ষা ও চোখের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস। কলকাতার চক্ষুবিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যদি কমলা, গাজর, পালং শাক, বেরি ও পেঁপের মতো খাবার থাকে, তবে চোখের রক্তনালী, রেটিনা ও কর্নিয়া স্বাভাবিকভাবে সুস্থ থাকে।

লেবুজাতীয় ফল দেবে চোখের রক্তনালীকে সুরক্ষা

কমলা, পাতিলেবু ও অন্যান্য লেবুজাতীয় ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা চোখের রক্তনালীগুলিকে মজবুত রাখে। নিয়মিত এই ফল খেলে ছানি বা ক্যাটারাক্টের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। প্রতিদিন একটি কমলা বা পাতিলেবু খাওয়া চোখের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

বেরির অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে কমে রাতকানার ঝুঁকি

স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি ও ব্ল্যাকবেরিতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন (Anthocyanin) চোখের কোষে অক্সিডেটিভ ক্ষতি কমায়। নিয়মিত বেরি খেলে চোখের ক্লান্তি দূর হয় এবং রাতকানার ঝুঁকিও হ্রাস পায়। এগুলি প্রাকৃতিকভাবে দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ রাখে।

ভিটামিন এ যুক্ত ফলেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি

আম ও পেঁপেতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ চোখের রেটিনাকে সুস্থ রাখে। এই ফলগুলি খেলে বার্ধক্যজনিত চোখের রোগ প্রতিরোধ হয় এবং রাত্রিকালীন দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়।

গাঢ় সবুজ শাকেই লুকিয়ে লুটেইন ও জিয়াজ্যান্থিন

পালং শাক, বাঁধাকপি ইত্যাদি সবজিতে থাকা লুটেইন ও জিয়াজ্যান্থিন সূর্যের ক্ষতিকর নীল আলো থেকে চোখকে রক্ষা করে। এগুলি ম্যাকুলার অবক্ষয় প্রতিরোধ করে, যা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের সমস্যা তৈরি করে। প্রতিদিন একবেলা গাঢ় সবুজ শাক খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

গাজর, কুমড়ো ও মিষ্টি আলু চোখের সেরা বন্ধু

গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন শরীরে গিয়ে ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়, যা কর্নিয়া সুস্থ রাখতে অপরিহার্য। গাজর, মিষ্টি আলু বা কুমড়ো খেলে ‘ড্রাই আই’ সমস্যা অনেকটাই কমে। শিশু থেকে প্রবীণ—সব বয়সের জন্যই এগুলি উপযোগী।

পুষ্টিই চোখের সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ

চোখ সুস্থ রাখতে শুধু ফল বা সবজি নয়, পর্যাপ্ত জল ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার (যেমন মাছ, আখরোট, ফ্ল্যাক্স সিড) খাওয়াও জরুরি। খাবার রান্নার সময় অতিরিক্ত তাপ ব্যবহার না করে সালাড বা হালকা স্টিম করে খেলে পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকে।

চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের পাতে নির্দিষ্ট ফল ও সবজি রাখলে দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ থাকে, ছানি বা রাতকানার ঝুঁকি কমে এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যাও দূরে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই খাবারগুলিই চোখের জন্য ‘ন্যাচারাল প্রোটেকশন শিল্ড’ হিসেবে কাজ করে।

Leave a comment