জয়পুর-আজমীর হাইওয়েতে একটি এলপিজি সিলিন্ডার ট্রাক এবং একটি কেমিক্যাল ট্যাঙ্কারের মধ্যে সংঘর্ষের পর ভয়ানক বিস্ফোরণ ঘটে। ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়, ঘটনাস্থলে একটি গ্রিন করিডর তৈরি করা হয় এবং ফায়ার ব্রিগেড আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
জয়পুর: রাজস্থানে গত মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) গভীর রাতে একটি ভয়ানক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, যেখানে এলপিজি সিলিন্ডার বোঝাই একটি ট্রাক এবং একটি কেমিক্যাল ট্যাঙ্কার মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই শক্তিশালী সংঘর্ষের পর সিলিন্ডার ট্রাকে ভয়ানক বিস্ফোরণ ঘটে, যার শব্দ কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শোনা যায়। আগুন ও বিস্ফোরণের কারণে আশেপাশের যানবাহনের ক্ষতি হয় এবং অনেকে আহত হন।
দুর্ঘটনায় কেমিক্যাল ট্যাঙ্কারের চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান, অন্যদিকে সিলিন্ডার ট্রাক চালকও জীবন্ত দগ্ধ হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে, সড়কে উপস্থিত অন্যান্য মানুষের জীবন রক্ষা পায়। দুর্ঘটনার পরপরই মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা ডেপুটি সিএম প্রেমচাঁদ বৈরওয়াকে ঘটনাস্থলে পাঠান এবং শহরের প্রধান হাসপাতাল পর্যন্ত গ্রিন করিডর তৈরির নির্দেশ দেন, যাতে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া যায়।
জয়পুর-আজমীর হাইওয়েতে ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট
দুর্ঘটনাটি জয়পুর শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে দুদু এলাকায় ঘটে। দুর্ঘটনার পরের দিন বুধবার (৮ অক্টোবর) সকাল প্রায় ৬.০০টায় জয়পুর-আজমীর হাইওয়েতে ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। আগুন নেভাতে এবং ট্রাকের ধ্বংসাবশেষ সরাতে সময় লাগার কারণে এই যানজট বহু ঘণ্টা ধরে থাকার সম্ভাবনা ছিল।
জয়পুর পুলিশ কমিশনার এবং প্রশাসনিক দল দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ শুরু করে। দুর্ঘটনাস্থলে ফায়ার ব্রিগেডের ২০টি গাড়ি এবং অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়। গ্রিন করিডরের মাধ্যমে আহতদের নিরাপদে এবং দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রশাসন নিশ্চিত করে যে হাইওয়েতে যান চলাচল নিরাপদ ও সুসংগঠিতভাবে পরিচালনা করা যায়।
এসএমএস হাসপাতালে সতর্কতা জারি
জয়পুরের এসএমএস হাসপাতালকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছিল। ডাক্তার এবং চিকিৎসা কর্মীদের দল আহতদের চিকিৎসার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। আগুন নেভানোর পর আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং গুরুতর আহতদের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
সিলিন্ডারের টুকরা একাধিক গাড়ির উপর পড়ায় প্রায় ১০-১২টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ৫ জনেরও বেশি লোক আহত হন। আগুনের শিখা এবং বিস্ফোরণের শব্দ কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত দেখা ও শোনা গিয়েছিল। আড়াই ঘণ্টার কঠোর প্রচেষ্টার পর ফায়ার ব্রিগেড আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনে।
কেমিক্যাল ট্যাঙ্কার চালকের মৃত্যু
দুর্ঘটনায় এলপিজি সিলিন্ডার ট্রাক এবং কেমিক্যাল ট্যাঙ্কারে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। বিস্ফোরণের কারণে ট্রাকের টুকরো হাইওয়েতে এবং আশেপাশের গাড়িগুলোর উপর ছড়িয়ে পড়ে। কেমিক্যাল ট্যাঙ্কারের সামনের অংশও আগুনের কবলে পড়েছিল। প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হয়।
কেমিক্যাল ট্যাঙ্কার চালকের মৃত্যু হয়, অন্যদিকে সিলিন্ডার ট্রাক চালকও জীবন্ত দগ্ধ হয়েছেন বলে সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, বড় আকারে মানব জীবনের ক্ষতি হয়নি। কর্মকর্তারা এটিকে স্বস্তির বিষয় বলে জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে যদি প্রশাসনিক দল এবং ফায়ার ব্রিগেড সময়মতো না পৌঁছাত, তাহলে পরিণতি আরও গুরুতর হতে পারত।
প্রশাসন ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলির পদক্ষেপ
মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা অবিলম্বে জরুরি মোডে কাজ শুরু করেন। ডেপুটি সিএম প্রেমচাঁদ বৈরওয়া এবং পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে ত্রাণ কাজ দ্রুত পরিচালিত হয়। গ্রিন করিডরের মাধ্যমে আহতদের নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয় এবং ফায়ার ব্রিগেডের গাড়িগুলো আগুন নেভানোর জন্য নিরন্তর কাজ করে যায়।
হাইওয়েতে যানচলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহন সরাতে এবং যানজট কমাতে প্রশাসন ক্রমাগত পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই দুর্ঘটনাটি একটি সতর্কবার্তা হিসেবে সামনে এসেছে যে সড়ক নিরাপত্তা এবং জরুরি প্রস্তুতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।