মুকেশ আম্বানির জিও ফিনান্সিয়াল লিমিটেড দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ০.৯% বৃদ্ধির সাথে ৬৯৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে। কোম্পানির অপারেশনাল রেভিনিউ বেড়ে ৯৮১ কোটি টাকা হয়েছে, যেখানে সুদের আয় দাঁড়িয়েছে ৩৯২ কোটি টাকা। দিওয়ালির আগে এই শক্তিশালী ফলাফল আম্বানি গোষ্ঠীর জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।
Jio Financial: রিলায়েন্স গোষ্ঠীর আর্থিক পরিষেবা সংস্থা জিও ফিনান্সিয়াল লিমিটেড জুলাই–সেপ্টেম্বর ২০২৫ ত্রৈমাসিকের ফলাফল প্রকাশ করে ৬৯৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের ৬৮৯ কোটি টাকার থেকে সামান্য বেশি। কোম্পানির অপারেশনাল রেভিনিউ ৪১% বেড়ে ৯৮১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যেখানে সুদের আয়ও দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৯২ কোটি টাকা হয়েছে। যদিও, বিএসই-তে জিও ফিনান্সিয়ালের শেয়ার সামান্য কমে ৩১২.১০ টাকায় বন্ধ হয়েছে। দিওয়ালির আগে আসা এই ফলাফলগুলি মুকেশ আম্বানির জন্য একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করেছে।
ত্রৈমাসিক ফলাফলে শক্তির আভাস
জিও ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস শেয়ারবাজারকে জানিয়েছে যে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ ত্রৈমাসিকে কোম্পানির একত্রিত নিট মুনাফা বেড়ে ৬৯৫ কোটি টাকা হয়েছে। গত বছরের একই ত্রৈমাসিকে নথিভুক্ত ৬৮৯ কোটি টাকার তুলনায় এটি প্রায় ০.৯ শতাংশ বৃদ্ধি।
কোম্পানি জানিয়েছে যে এই ত্রৈমাসিকে তার অপারেশনাল রেভিনিউ ৯৮১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যেখানে গত বছরের একই সময়ে এটি ৬৯৪ কোটি টাকা ছিল। অর্থাৎ, কোম্পানির আয়ে প্রায় ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে জিও ফিনান্সিয়াল তার ব্যবসাকে ক্রমাগত শক্তিশালী করছে এবং বাজারে তার দখল বাড়াচ্ছে।
শেয়ারবাজারে উত্তেজনা
তবে, কোম্পানির দুর্দান্ত ফলাফল সত্ত্বেও, বৃহস্পতিবার এর শেয়ারে সামান্য পতন দেখা গেছে। বিএসই-এর তথ্য অনুযায়ী, জিও ফিনান্সিয়াল লিমিটেডের শেয়ার ০.১৮ শতাংশ কমে ৩১২.১০ টাকায় বন্ধ হয়েছে।
কারবারের দিনের শুরুতে কোম্পানির শেয়ার ৩১৪ টাকায় খুলেছিল এবং ৩১৪.৩৫ টাকার উচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল। কিন্তু দিনের শেষে এতে হালকা পতন দেখা গেছে এবং এটি ৩১০.৫০ টাকার সর্বনিম্ন স্তরেও পৌঁছেছিল। আগের দিন কোম্পানির শেয়ার ৩১২.৬৫ টাকায় বন্ধ হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন যে কোম্পানির ফলাফল দীর্ঘমেয়াদে এর শেয়ারকে শক্তিশালী করবে। বর্তমানে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তোলার মেজাজে আছেন, তাই দামে হালকা পতন দেখা যাচ্ছে।
আম্বানি গ্রুপের নতুন পরিচয়
জিও ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে আলাদা হয়ে গঠিত হয়েছিল। কোম্পানিটি অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই আর্থিক খাতে তার পরিচয় তৈরি করেছে। এটি এখন ঋণ, বীমা, বিনিয়োগ এবং ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবার ক্ষেত্রে দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে।
জিও ফিনান্সিয়ালের লক্ষ্য হলো আগামী বছরগুলোতে দেশের শীর্ষস্থানীয় আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে স্থান করে নেওয়া। কোম্পানি তার গ্রাহকদের সহজ এবং ডিজিটাল সমাধান প্রদানে মনোনিবেশ করছে। বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস যে রিলায়েন্স গোষ্ঠীর প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক শক্তি এই কোম্পানির জন্য একটি বড় সমর্থন হিসাবে প্রমাণিত হচ্ছে।
বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাড়তি প্রত্যাশা
জিও ফিনান্সিয়ালের ভালো ফলাফল বাজারে একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করেছে। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন যে আগামী ত্রৈমাসিকের ফলাফলগুলিতে কোম্পানি আরও ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারে। কোম্পানি সম্প্রতি বেশ কয়েকটি নতুন প্রকল্প এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনা শুরু করেছে, যার ফলে এর ভবিষ্যতের আয়ে আরও বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দিওয়ালির আগে মিলল সুখবর
মুকেশ আম্বানি এবং তার বিনিয়োগকারীদের জন্য এই ফলাফলগুলি দিওয়ালি বোনাসের চেয়ে কম নয়। জিও ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস দেখিয়ে দিয়েছে যে এটি আর্থিক পরিষেবা খাতে একটি স্থিতিশীল এবং শক্তিশালী খেলোয়াড় হওয়ার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
এই ফলাফলগুলি থেকে এটিও স্পষ্ট যে কোম্পানি বাজারের চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তার কৌশল দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করেছে। অপারেশনাল রেভিনিউ এবং সুদের আয় বৃদ্ধিতে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে।
দিওয়ালির ঠিক আগে জিও ফিনান্সিয়ালের এই পারফরম্যান্স কেবল রিলায়েন্স গোষ্ঠীর জন্যই গর্বের বিষয় নয়, বরং ভারতীয় আর্থিক বাজারের জন্যও একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত।