মোদী সরকার ক্রীড়া নীতি 2025 অনুমোদন করেছে। এর লক্ষ্য হল ভারতকে ক্রীড়ায় বিশ্ব মঞ্চে শক্তিশালী করা। নীতিতে খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো, মহিলা অংশগ্রহণ এবং ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলির উপর জোর দেওয়া হবে।
ক্রীড়া নীতি 2025: মোদী সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে নতুন জাতীয় ক্রীড়া নীতি 2025 অনুমোদন করেছে। এই নীতি 2001 সালে কার্যকর হওয়া পুরনো নীতির স্থান নেবে। ক্যাবিনেট বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, নতুন নীতি দেশের ক্রীড়া অবকাঠামো এবং খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের উন্নতিতে দিকনির্দেশনা দেবে।
ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্তে একাধিক বড় প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত
ক্যাবিনেট জাতীয় ক্রীড়া নীতির পাশাপাশি আরও অনেক প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে 1.07 লক্ষ কোটি টাকার কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্প, 1 লক্ষ কোটি টাকার গবেষণা ও উদ্ভাবন প্রকল্প (RDI) এবং 1,853 কোটি টাকা ব্যয়ে পরামাকুডি-রামনাথপুরম হাইওয়ে চার লেনে উন্নীত করার প্রস্তাব।
খেলাধুলার নতুন দিগন্ত উন্মোচন
জাতীয় ক্রীড়া নীতি 2025-এর লক্ষ্য হল খেলাধুলার ক্ষেত্রে ভারতকে বিশ্ব মঞ্চে পরিচিতি দেওয়া। এই নীতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রক, নীতি আয়োগ, রাজ্য সরকার, ক্রীড়া ফেডারেশন, ক্রীড়াবিদ এবং সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তৈরি করা হয়েছে। নীতির পাঁচটি প্রধান স্তম্ভ নিম্নরূপ:
1. বিশ্ব মঞ্চে শ্রেষ্ঠত্বের লক্ষ্য
নতুন নীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল ভারত আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্ট, বিশেষ করে 2036 অলিম্পিকে শক্তিশালী পারফর্ম করবে। এর জন্য তৃণমূল স্তর থেকে প্রতিভা অন্বেষণ, কোচিং, ক্রীড়া বিজ্ঞান, চিকিৎসা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার মতো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হবে। কোচ, কর্মকর্তা এবং কর্মীদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে তারা খেলোয়াড়দের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
2. খেলার অর্থনৈতিক উন্নতিতে অবদান
NSP-2025-এর অধীনে খেলাকে একটি শিল্প হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। সরকার ক্রীড়া পর্যটনকে উৎসাহিত করবে এবং বড় ক্রীড়া ইভেন্ট আয়োজনের জন্য রাজ্যগুলিকে অনুপ্রাণিত করবে। এছাড়াও, ম্যানুফ্যাকচারিং, স্টার্টআপ এবং ব্যক্তিগত বিনিয়োগকে PPP মডেল এবং CSR-এর মাধ্যমে ক্রীড়া খাতে আনার লক্ষ্য রয়েছে।
3. সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং অংশগ্রহণ বৃদ্ধি
নতুন নীতি মহিলা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, উপজাতি এবং আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির খেলাধুলায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উপর জোর দেয়। ঐতিহ্যবাহী এবং দেশীয় খেলাগুলিকে রক্ষা করা এবং সেগুলির প্রচারের পরিকল্পনাও রয়েছে। এছাড়াও খেলাধুলাকে একটি পেশা হিসেবে জনপ্রিয় করতে শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
4. গণআন্দোলন হিসেবে খেলাধুলার প্রসার
NSP-2025-এর উদ্দেশ্য খেলাধুলাকে কেবল প্রতিযোগিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সাধারণ মানুষের জীবনের একটি অংশ করে তোলা। এর জন্য সারা দেশে ফিটনেস অভিযান চালানো হবে। স্কুল এবং কর্মক্ষেত্রে ফিটনেস সূচক চালু করা হবে এবং ক্রীড়া সুবিধাগুলির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা হবে।
5. শিক্ষার সঙ্গে সংযোগ এবং ক্রীড়া শিক্ষার উপর জোর
জাতীয় শিক্ষানীতির অধীনে খেলাধুলাকে স্কুল পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর জন্য ক্রীড়া শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে তারা শিক্ষার্থীদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। এছাড়াও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ক্রীড়া শিক্ষার প্রসার ঘটানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
কৌশলগত কাঠামো এবং পর্যবেক্ষণের উপর মনোযোগ
নতুন নীতিতে নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা, পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের একটি স্বচ্ছ ব্যবস্থা থাকবে। প্রযুক্তিগত এবং উদ্ভাবনী পদক্ষেপের মাধ্যমে নীতির কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সরকার রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে এই নীতি গ্রহণ করার জন্য আবেদন করেছে যাতে সারা দেশে একটি সুষম ক্রীড়া সংস্কৃতি গড়ে তোলা যায়।