কুণাল ঘোষের বার্তা দিলীপ ঘোষকে কেন্দ্র করে জল্পনা চরমে মোদির সভার আগেই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ

কুণাল ঘোষের বার্তা দিলীপ ঘোষকে কেন্দ্র করে জল্পনা চরমে মোদির সভার আগেই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ

দিলীপ ঘোষ ফের ব্রাত্য বিজেপির বড় সভা থেকে

বাংলা বিজেপির রাজনীতিতে ফের এক চাঞ্চল্যকর অধ্যায়। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে আবারও বাদ দেওয়া হল বড় দলের কর্মসূচি থেকে। টানা তিনবার একই ঘটনা ঘটায় এবার রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন উঠেছে—দিলীপবাবু কি ক্রমশই প্রান্তিক হয়ে পড়ছেন বিজেপির রাজ্য রাজনীতিতে?

‘রিজার্ভ ফোর্স’-এর উদাহরণ টেনে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য

বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে দিলীপ ঘোষকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি কি অভিমানী, তখন তাঁর জবাব ছিল শান্ত স্বরে। দিলীপ বলেন, “না না, আমি পার্টির সাধারণ কর্মী। আমি রিজার্ভ ফোর্সের মতো আছি। অর্ডার এলে কাজে নামব।” তাঁর এই মন্তব্যেই স্পষ্ট, প্রকাশ্যে অভিমান না দেখালেও অন্তর্লীন ক্ষোভ লুকোনো যাচ্ছে না।

মোদির সভায় থাকবেন কি না, ধোঁয়াশায় দিলীপ

শুক্রবার কলকাতায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু সেই সভায় দিলীপ ঘোষের নাম তালিকায় নেই। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ বলেন, “কাল যাব কিনা ঠিক করিনি। আমন্ত্রণ পাইনি। নাও যেতে পারি। অন্য কাজেও চলে যেতে পারি। কোথায় যাব আমি ঠিক করি না, পার্টি ঠিক করে।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ বক্তব্য ইঙ্গিতবহ।

আমন্ত্রণ না পাওয়ায় সরাসরি ক্ষোভপ্রকাশ

দলের একাধিক কর্মসূচিতে উপস্থিতি নিয়ে দ্বিধা কাটাতে গিয়ে দিলীপ স্পষ্ট বলেন, “পার্টির কর্মসূচি পার্টি ঠিক করে, সেটা আমার হাতে নেই। সরকারি প্রোগ্রামে গেলে আমন্ত্রণ থাকা দরকার। কাল সেই আমন্ত্রণ পাইনি। তাই সেখানে যাচ্ছি না। এরপর কী করা যায়, সেটা দেখা হবে।” রাজনৈতিক মহলে তাঁর এই বক্তব্যকে সরাসরি অভিমান প্রকাশ হিসেবেই ধরা হচ্ছে।

তৃণমূলের কটাক্ষ, ‘দুঃখজনক পরিস্থিতি’

বিজেপির অভ্যন্তরীণ অস্বস্তিকে হাতিয়ার করে সরাসরি আক্রমণে নেমেছে তৃণমূল। বিকেলে দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী আসছেন, অথচ দিলীপ ঘোষকে ডাকা হয়নি—এটা অত্যন্ত দুঃখের ব্যাপার।” এই মন্তব্যে স্পষ্ট, তৃণমূল এবার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না।

দিলীপকে দলীয় সমর্থন নিয়ে ভাবতে বললেন কুণাল

কেবল সমবেদনা নয়, কুণাল ঘোষ আরও একধাপ এগিয়ে পরামর্শও দেন। তাঁর বক্তব্য, “দিলীপ ঘোষ দেখে নিন, দলে তাঁর পাশে কারা আছে। নীতিগত আপত্তি থাকলেও এভাবে বাদ দেওয়া ঠিক নয়। কুণালের এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা—তৃণমূল কি দিলীপ ঘোষের অভিমানকে পুঁজি করে বিজেপির ভিত আরও নাড়াতে চাইছে?

মোদির সভার আগেই বাড়ছে চাপানউতোর

প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফরের আগে বিজেপি-রাজনীতিতে এই টানাপোড়েন নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। একদিকে দিলীপ ঘোষের ক্রমাগত ব্রাত্য হওয়া, অন্যদিকে তৃণমূলের সক্রিয় আক্রমণ—সব মিলিয়ে বাংলার রাজনৈতিক আকাশে তৈরি হয়েছে নতুন অস্থিরতার মেঘ। এখন দেখার, শুক্রবার মোদির সভা ঘিরে দিলীপ ঘোষ কোন পথে হাঁটেন।

Leave a comment