মার্কিন শুল্কের ধাক্কা: এমএসএমই বাঁচাতে অর্থ মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, নেওয়া হবে বিশেষ পদক্ষেপ

মার্কিন শুল্কের ধাক্কা: এমএসএমই বাঁচাতে অর্থ মন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, নেওয়া হবে বিশেষ পদক্ষেপ
সর্বশেষ আপডেট: 2 ঘণ্টা আগে

অর্থ মন্ত্রক আজ ১৩ অক্টোবর আমেরিকা দ্বারা আরোপিত ৫০% শুল্ক দ্বারা প্রভাবিত এমএসএমই (MSME) সেক্টর নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করবে। বৈঠকে মুদ্রা ঋণ গ্যারান্টি প্রকল্প এবং অন্যান্য আর্থিক প্রকল্পগুলি পর্যালোচনা করে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হবে। সরকারের উদ্দেশ্য হল এমএসএমই ক্ষেত্রকে আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং ঋণ খেলাপির হাত থেকে রক্ষা করা।

এমএসএমই (MSME) ক্ষেত্র: সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫-এ অর্থ মন্ত্রক আমেরিকা কর্তৃক ভারতের উপর আরোপিত ৫০% শুল্কের প্রভাব নিয়ে এমএসএমই সেক্টর নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করবে। বৈঠকে দেশের সরকারি ব্যাঙ্কগুলির এবং মন্ত্রকের আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবেন। এতে মুদ্রা ঋণ গ্যারান্টি প্রকল্প, পিএম স্বনিধি এবং পিএম বিশ্বকর্মার মতো আর্থিক প্রকল্পগুলি পর্যালোচনা করে এমএসএমই শিল্পের উপর পড়া চাপ কমাতে পদক্ষেপগুলি নির্ধারণ করা হবে। বৈঠকের উদ্দেশ্য হল আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখা এবং শুল্কের কারণে ঋণ খেলাপির বৃদ্ধি রোধ করা।

বৈঠকের উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা

অর্থ মন্ত্রকের এই পর্যালোচনা বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হল মার্কিন শুল্কের প্রভাব বোঝা এবং এমএসএমই ক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নির্ধারণ করা। বৈঠকে মুদ্রা ঋণ গ্যারান্টি প্রকল্পের মতো আর্থিক প্রকল্পগুলি পর্যালোচনা করা হবে। এর অধীনে এটি দেখা হবে যে এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলিকে কতটা স্বস্তি দেওয়া যেতে পারে।

সরকারের উদ্বেগ এই বিষয়টিও নিয়ে যে, মার্কিন শুল্কের কারণে এমএসএমই ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধে অসুবিধা বাড়তে পারে। বৈঠকে ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে এই বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি নিশ্চিত করা হবে যে আর্থিক সহায়তা প্রকল্প নিরন্তর জারি থাকে এবং এমএসএমই ক্ষেত্র প্রভাবিত না হয়।

মার্কিন শুল্ক এবং এমএসএমই-এর উপর প্রভাব

এমএসএমই শিল্প সংস্থাগুলি মার্কিন শুল্কের কারণে সৃষ্ট চাপ নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইন্ডিয়া এসএমই ফোরামের প্রেসিডেন্ট বিনোদ কুমার জানিয়েছেন যে, এই শুল্ক যুদ্ধের কারণে এমএসএমই ক্ষেত্রের ব্যবসার ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হতে পারে। ক্ষুদ্র শিল্প এবং রপ্তানিকারক সংস্থাগুলি সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হচ্ছে। তারা সরকারের কাছে এই বিষয়ে মধ্যস্থতা এবং ত্রাণ দাবি করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তবে এমএসএমই ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান এবং উৎপাদনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়াও, আর্থিক ঝুঁকি বাড়লে ঋণ পুনরুদ্ধারেও অসুবিধা বাড়তে পারে।

আর্থিক প্রকল্পগুলি নিয়ে আলোচনা

বৈঠকে পিএম স্বনিধি এবং পিএম বিশ্বকর্মার মতো ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পগুলির উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রকল্পগুলির উদ্দেশ্য হল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কারিগর এবং স্টার্টআপগুলিকে সহজ ঋণ প্রদান করা। এছাড়াও, ২০২৫ সালে চালু করা নতুন ঋণ মূল্যায়ন মডেলের কার্যকারিতা পর্যালোচনা করা হবে।

এই মডেল ডিজিটালি ডেটার সত্যতা যাচাই করে এবং ঋণ পাওয়ার প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে তোলে। মডেলের মাধ্যমে ব্যাঙ্কগুলি বাস্তব ও প্রমাণিত তথ্য পায়, যার ফলে ঋণ বিতরণে সময় বাঁচে এবং প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ হয়।

সরকার ও ব্যাঙ্কগুলির ভূমিকা

বৈঠকে অর্থ মন্ত্রক এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি ব্যাঙ্কগুলি এটিও দেখবে যে, কীভাবে বিদ্যমান আর্থিক প্রকল্পগুলিকে আরও কার্যকর করা যেতে পারে। ব্যাঙ্কগুলির পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে যাতে এমএসএমই ক্ষেত্রের ব্যবসা সুরক্ষিত থাকে।

এছাড়াও, বৈঠকে শুল্ক দ্বারা প্রভাবিত ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করে তাদের বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। এর উদ্দেশ্য হল এটি নিশ্চিত করা যে মার্কিন শুল্কের কারণে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলির উপর চাপ কম পড়ে।

সম্ভাব্য ফলাফল 

বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস যে, এই বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলি এমএসএমই ক্ষেত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে। বৈঠকে নেওয়া পদক্ষেপগুলির মাধ্যমে শুধুমাত্র শিল্পগুলির আর্থিক অবস্থা শক্তিশালী হবে না, বরং বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।

এর সাথে, সরকারের দ্বারা কার্যকর করা আর্থিক সহায়তা প্রকল্পগুলির পর্যালোচনার মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হবে যে কোন নীতিগুলি আরও ভালোভাবে কাজ করছে এবং কোনগুলিতে উন্নতির প্রয়োজন।

Leave a comment