নিজেই ফাঁস করলেন পুরনো আতঙ্কের গল্প
একটি সংস্থার ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে প্রকাশিত এক ভিডিওয় নিজের জীবনের একটি ভয়ংকর অধ্যায়ের কথা জানালেন অলিম্পিক সোনাজয়ী জ্যাভেলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়া। ভিডিওটি ইতিমধ্যেই নেটদুনিয়ায় ভাইরাল, কারণ সেখানে একেবারে খোলাখুলি নিজের শারীরিক ও মানসিক লড়াইয়ের কথা বলেছেন তিনি। তিনি জানান, এমন একটি চোট পেয়েছিলেন শৈশবে, যেটা তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দিতে পারত শুরু হওয়ার আগেই।
ট্রেনিংয়ে নয়, ‘দুষ্টুমি’ করেই পেলেন গুরুতর চোট
নীরজ জানান, জ্যাভেলিন ট্রেনিংয়ের সময় নয়, একেবারে খেলার ছলে তিনি সেই ভয়ঙ্কর চোট পেয়েছিলেন। নীরজের কথায়, “আমি তখন কোনও রকম ট্রেনিং করছিলাম না। একটু দুষ্টুমি করছিলাম বন্ধুদের সঙ্গে। বাস্কেটবল কোর্টে রিং ধরে ঝুলছিলাম। আচমকা পড়ে যাই মাটিতে। সোজা পড়ে গিয়ে কব্জির হাড় ভেঙে যায়।” এমন চোটে যে দীর্ঘদিন প্লাস্টার করে রাখতে হয়েছিল, তা-ও স্বীকার করেন তিনি।
চোটটা পড়েছিল জ্যাভেলিন ছোঁড়ার হাতেই, ভয় আরও বেড়ে গিয়েছিল
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপারটা ছিল এই যে, হাড় ভেঙেছিল নীরজের জ্যাভেলিন ছোঁড়ার হাতেই। একজন অ্যাথলিটের কাছে শক্তিশালী হাত মানেই অস্ত্র। সেই অস্ত্রেই এমন গুরুতর চোট! নীরজ বলেন, আমার মনে হচ্ছিল, আর কোনও দিন হয়তো জ্যাভেলিন ছুঁড়তেই পারব না। কব্জির চোট জ্যাভেলিন থ্রোয়ারের কাছে মৃত্যুর মতোই ভয়ানক।
মনোবলেই ফিরে এসেছিলেন মাঠে, স্বপ্নই ছিল প্রেরণা
চোট সারার পরে মানসিকভাবে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন নীরজ। অনেকটা সময় লেগেছিল মানসিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে। তবে নিজের স্বপ্নের জন্যই সেই ভয় কাটিয়ে উঠেছিলেন বলে জানান তিনি। নীরজ বলেন, যখন আস্তে আস্তে সুস্থ হতে লাগলাম, তখন মনে হল, না, আমাকে আবার জ্যাভেলিন হাতে তুলতেই হবে। আমার স্বপ্নটাই আমাকে মানসিক দৃঢ়তা জুগিয়েছিল।
দ্বিতীয় অলিম্পিকেও সাফল্য, চোটের গল্প হয়ে উঠল অনুপ্রেরণা
একবার নয়, দু’বার অলিম্পিকে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন নীরজ। প্রথমে সোনা, পরে রুপো। আজ তাঁর সেই পুরনো ভয় আর ভাঙা কব্জির গল্প হয়ে উঠেছে হাজার হাজার তরুণ অ্যাথলিটের অনুপ্রেরণা। ছোটবেলার দুষ্টুমির জেরে ভাঙা কব্জিও তাঁকে থামাতে পারেনি। বরং সেই গল্প এখন দেখাচ্ছে—স্বপ্ন, সাহস আর দৃঢ়তা থাকলে কোনও চোট, কোনও ভয়ই আপনাকে থামাতে পারে না।