কবিতা লেখার লোক অনেক আছেন—কেউ নিজের মনের কথা প্রকাশ করতে লেখেন, তো কেউ দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য। কিন্তু ২৬ বছর বয়সী নিধি নারওয়াল সেই অল্প কয়েকজন কবির মধ্যে একজন, যিনি শব্দের মাধ্যমে এক গভীর সম্পর্ক তৈরি করেন।
এন্টারটেইনমেন্ট নিউজ: আজকের এই দ্রুতগতির পৃথিবীতে যখন মানুষ শোনার বদলে কথা বলতে বেশি ব্যস্ত, ঠিক তখনই কিছু কবি ও লেখক তাদের শব্দের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছান। এমনই একটি নাম হলো নিধি নারওয়াল। হরিয়ানার এই ২৬ বছর বয়সী তরুণী কবি শুধু কবিতা লেখেন না, বরং শব্দের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তাঁর কবিতায় দুর্বলতাও শক্তিতে পরিণত হয় এবং প্রতিটি লাইনে এক ধরনের আপনত্ব ফুটে ওঠে।
নিধির কাছে কবিতা শুধু মঞ্চে পাঠ করার বিষয় নয়। এটি তাঁর কাছে এক অস্তিত্বের অনুভব। তিনি চান যে তাঁর কবিতা এমন মানুষের কাছে পৌঁছাক, যাঁরা তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে কখনও দেখেননি, কিন্তু তাঁর শব্দে নিজেদের দুনিয়াকে খুঁজে পান।
“মুঝসে দোস্তি করোগে” – এক অনন্য ট্যুর
নিজের শব্দের জাদু সরাসরি শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিধি নারওয়াল “মুঝসে দোস্তি করোগে” নামক এক সর্বভারতীয় পোয়েট্রি এবং স্টোরিটেলিং ট্যুরে বের হচ্ছেন। এই ট্যুর ২০২৫ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হবে এবং ভারতের ১০টি প্রধান শহর – আহমেদাবাদ, ইন্দোর, কলকাতা, ভুবনেশ্বর, মুম্বই, পুনে, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, জয়পুর এবং দিল্লি –তে আয়োজিত হবে।
প্রতিটি শহরে শ্রোতাদের জন্য একটি সন্ধ্যা থাকবে, যা কেবল কবিতা ও গল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এই সন্ধ্যায় তাঁরা এমন অনেক না বলা অনুভূতি, আবেগ এবং অনুভবের মুখোমুখি হবেন, যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা সহজ নয়, কিন্তু অত্যন্ত জরুরি।
আধুনিক ভারতীয় কবিতাকে নতুন রূপ
গত কয়েক বছরে নিধি নারওয়াল আধুনিক ভারতীয় কবিতায় নিজের একটি স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করেছেন। তাঁর কবিতা শুধু শব্দ নয়, বরং অভিজ্ঞতা এবং অনুভূতি। তিনি প্রেম, ভাঙা হৃদয়, সুস্থ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া এবং দৈনন্দিন জীবনে লুকিয়ে থাকা সৌন্দর্যকে বর্ণনা করেন। তাঁর প্রধান রচনাগুলি যেমন:
- “দুনিয়া অউর হাম” – সমাজ এবং ব্যক্তির সম্পর্কের গভীরতাকে উন্মোচন করে।
- “এক লড়কা হ্যায়” – প্রেম, আত্ম-অনুসন্ধান এবং জীবনের জটিল দিকগুলিকে প্রকাশ করে।
- “ক্যায়া নজারে হোতে” – দৈনন্দিন জীবনের লুকিয়ে থাকা ছোট ছোট সৌন্দর্যকে সূক্ষ্মভাবে তুলে ধরে।
এই কবিতাগুলিতে কোনো কৃত্রিমতা নেই। প্রতিটি কবিতা সত্য এবং সততায় পরিপূর্ণ, যেন কেউ পাশে বসে মনের কথা বলছে। নিধির কবিতা আমাদের থামতে, অনুভব করতে এবং বাঁচতে শেখায়। আজকের সময় দ্রুত ছুটে চলেছে, মানুষ কথা বলতে ব্যস্ত, কিন্তু নিধির লেখা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে কবিতা আমাদেরই – আমাদের আবেগ, আমাদের সংবেদনশীলতা এবং আমাদের গল্পের।
“মুঝসে দোস্তি করোগে” ট্যুর কেবল একটি সাহিত্যিক যাত্রা নয়, এটি একটি আবেগিক অভিজ্ঞতাও বটে। এটি শ্রোতাদের নিজেদের অন্তরে উঁকি দিতে, নিজেদের অনুভূতিগুলি বুঝতে এবং শব্দের মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে অনুভব করার সুযোগ দেয়।