অস্ত্রোপচারের আগে রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয় যাতে ব্যথা এবং অস্বস্তি অনুভব না হয়। দিল্লি স্টেট ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যানেস্থেসিয়া বিভিন্ন প্রকারের হয় – লোকাল, রিজিয়নাল এবং জেনারেল। এটি কেবল অস্ত্রোপচারেই নয়, কিছু ব্যথামুক্তকরণ প্রক্রিয়াতেও উপকারী।
অ্যানেস্থেসিয়া: দিল্লি স্টেট ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের অনকো-অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগ জানিয়েছে যে, যেকোনো অস্ত্রোপচারের আগে রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয় যাতে ব্যথা, চাপ বা অস্বস্তি অনুভব না হয়। বিভাগীয় প্রধান ড. সুরেন্দ্র কুমারের মতে, লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া শরীরের ছোট অংশগুলিকে অসাড় করে, রিজিয়নাল বড় অংশগুলিকে এবং জেনারেল রোগীকে সম্পূর্ণ ঘুমে আচ্ছন্ন করে। হাসপাতালে সচেতনতা সেশন আয়োজন করে রোগী, তাদের পরিবার এবং কর্মীদের অ্যানেস্থেসিয়ার নিরাপত্তা এবং অ্যানেস্থেসিওলজিস্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।
অ্যানেস্থেসিয়া কী
অ্যানেস্থেসিয়া এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে রোগীকে কোনো অস্ত্রোপচার বা চিকিৎসা পদ্ধতির সময় অসাড় করা হয় বা সম্পূর্ণ অচেতন করা হয়। এর জন্য বিশেষ ডাক্তার অর্থাৎ অ্যানেস্থেসিওলজিস্টরা দায়ী থাকেন। এই ডাক্তাররা সঠিক পরিমাণে ঔষধ ব্যবহার করেন যাতে রোগী নিরাপদ থাকে এবং কোনো ব্যথা অনুভব না করে। অনকো-অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের প্রধান ড. সুরেন্দ্র কুমারের মতে, অ্যানেস্থেসিয়া প্রতিটি সফল অস্ত্রোপচারের একটি অপরিহার্য অংশ।
অ্যানেস্থেসিয়ার প্রকারভেদ
অ্যানেস্থেসিয়ার বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে এবং সেগুলির ব্যবহার অস্ত্রোপচারের ধরন ও রোগীর প্রয়োজন অনুযায়ী করা হয়।
- লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া: এই প্রকারে শরীরের কেবলমাত্র একটি ছোট অংশকে অসাড় করা হয়। এটি দাঁত তোলা, সেলাই করা বা ছোট অস্ত্রোপচারের সময় ব্যবহার করা হয়। রোগী সম্পূর্ণরূপে সচেতন থাকে, তবে প্রভাবিত অংশটি অসাড় থাকে।
- রিজিয়নাল অ্যানেস্থেসিয়া: এতে শরীরের বড় অংশ অসাড় করা হয়, যেমন হাত, পা বা কোমরের নিচের অংশ। এই কৌশলটি বড় অস্ত্রোপচারে কার্যকর। রোগী ব্যথা অনুভব করে না কিন্তু তার চেতনা বজায় থাকে।
- জেনারেল অ্যানেস্থেসিয়া: এটি সবচেয়ে ব্যাপক ধরনের অ্যানেস্থেসিয়া। এতে রোগী সম্পূর্ণ ঘুমে চলে যায়। এটি বড় অস্ত্রোপচার বা এমন প্রক্রিয়াগুলিতে ব্যবহার করা হয় যেখানে ব্যথা এবং কার্যকলাপ এড়ানো প্রয়োজন। অস্ত্রোপচারের সময় রোগী কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করে না।
অ্যানেস্থেসিয়ার নিরাপত্তা
ড. সুরেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন যে, অ্যানেস্থেসিয়া সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি এবং নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ডাক্তাররা নিশ্চিত করেন যে রোগীর কোনো সমস্যা না হয়। এটি শুধু অস্ত্রোপচারের সময়ই নয়, পরে রোগীর আরোগ্য ও বিশ্রামেও সহায়তা করে।
সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা
দিল্লি স্টেট ক্যান্সার হাসপাতালে অ্যানেস্থেসিয়ার গুরুত্ব নিয়ে সচেতনতা সেশন আয়োজন করা হয়েছিল। এতে রোগী, তাদের পরিবার এবং হাসপাতালের কর্মীরা অংশ নিয়েছিলেন। সেশনের উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ ভুল ধারণা দূর করা, অ্যানেস্থেসিয়ার নিরাপত্তার প্রতি আস্থা বাড়ানো এবং শল্যচিকিৎসা ও অনকোলজিক্যাল প্রক্রিয়াগুলিতে অ্যানেস্থেসিওলজিস্টদের ভূমিকা তুলে ধরা।
অস্ত্রোপচারের সময় রোগীকে আরাম দেওয়া এবং ব্যথা থেকে রক্ষা করা অ্যানেস্থেসিয়ার সবচেয়ে বড় গুরুত্ব। এটি ছাড়া অস্ত্রোপচার করা কঠিন এবং অনিরাপদ হতে পারে। ডাক্তারদের দক্ষতা এবং সঠিক পরিমাণে ঔষধের ব্যবহার রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।