রাষ্ট্রীয় প্রাকৃতিক কৃষি মিশন: কৃষকদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন

রাষ্ট্রীয় প্রাকৃতিক কৃষি মিশন: কৃষকদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২৩শে আগস্ট, ২০২৫ তারিখে রাষ্ট্রীয় প্রাকৃতিক কৃষি মিশন (NMNF) শুরু করবেন, যার জন্য ২,৪৮১ কোটি টাকা বাজেট রাখা হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৭.৫০ লক্ষ হেক্টর জমিতে প্রাকৃতিক কৃষিকে উৎসাহিত করা হবে এবং ১ কোটি কৃষকের আয় বাড়বে। প্রাথমিকভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, কেরালা, গুজরাট, হিমাচল, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ এবং তামিলনাড়ুর কৃষকরা উপকৃত হবেন।

নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী সপ্তাহে রাষ্ট্রীয় প্রাকৃতিক কৃষি মিশন (NMNF)-এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন, যার বাজেট ২,৪৮১ কোটি টাকা। এই মিশনের অধীনে ৭.৫০ লক্ষ হেক্টর জমিতে প্রাকৃতিক এবং টেকসই কৃষিকে উৎসাহিত করা হবে, যা ১ কোটি কৃষকের আয় বাড়াতে সাহায্য করবে। এই মিশন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের অধীনে পরিচালিত হবে এবং প্রাথমিকভাবে সেই রাজ্যগুলির কৃষকরা উপকৃত হবেন যেখানে প্রাকৃতিক কৃষি আগে থেকেই প্রচলিত। এই প্রকল্পে ১০,০০০ বায়ো ইনপুট রিসোর্স সেন্টার, সরল সার্টিফিকেশন সিস্টেম, কমন মার্কেট এবং অনলাইন মনিটরিং পোর্টালের মতো সুবিধা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

কোন রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হবেন

রাষ্ট্রীয় প্রাকৃতিক কৃষি মিশনের প্রাথমিক পর্যায়টি সেই অঞ্চলগুলিতে প্রয়োগ করা হবে, যেখানে প্রাকৃতিক কৃষি আগে থেকেই প্রচলিত। এর জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে ১৫,০০০ ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, কেরালা, গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ এবং তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলির কৃষকরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।

এই মিশনের অধীনে কৃষকদের চাষের খরচ কমানো এবং রাসায়নিক সারের উপর নির্ভরতা কমানোর দিকে নজর দেওয়া হবে। শুরুতে দুই বছরের জন্য এই প্রকল্পটি চলবে, এবং এর পরে সাফল্য ও বাজেট অনুসারে এটিকে আরও বাড়ানো হবে।

প্রাকৃতিক কৃষিতে বৈজ্ঞানিক সাহায্য

রাষ্ট্রীয় প্রাকৃতিক কৃষি মিশন কৃষকদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করার সুযোগ দেবে। এর উদ্দেশ্য হল কৃষকরা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে স্বাস্থ্যকর খাবার উৎপাদন করতে পারেন। এই মিশনের অধীনে সরকার ১০,০০০ বায়ো ইনপুট রিসোর্স সেন্টার তৈরি করবে। এই কেন্দ্রগুলি থেকে কৃষকরা প্রাকৃতিক সার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কৃষি সামগ্রী সহজে পাবেন।

কৃষকদের জন্য একটি সহজ এবং সরল সার্টিফিকেশন সিস্টেমও তৈরি করা হবে। এর মাধ্যমে তারা তাদের পণ্যের শংসাপত্র সহজে পেতে পারবেন। এছাড়াও, কমন মার্কেটের মাধ্যমে কৃষকরা ব্র্যান্ডিং এবং বিক্রয়ে সহায়তা পাবেন।

ডিজিটাল নজরদারি এবং আধুনিক প্রযুক্তি

এই মিশনের অধীনে কৃষকদের ফসলের রিয়েলটাইম জিওট্যাগিং এবং নজরদারিও করা হবে। এর জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল তৈরি করা হবে, যার মাধ্যমে কৃষক এবং কর্মকর্তারা ফসলের পরিস্থিতি জানতে পারবেন। এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র উৎপাদনকে উৎসাহিত করবে না, কৃষকদের বাজারের চাহিদা এবং মূল্য সম্পর্কেও তথ্য দেবে।

সরকারের এই প্রচেষ্টা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করা এবং প্রাকৃতিক কৃষিকে মূল স্রোতে নিয়ে আসা। এর মাধ্যমে চাষে খরচ কম হবে এবং উৎপাদনে উন্নতি হবে।

কৃষিতে পরিবর্তনের পথ

রাষ্ট্রীয় প্রাকৃতিক কৃষি মিশনের মাধ্যমে দেশে টেকসই এবং প্রাকৃতিক কৃষির একটি নতুন যুগ শুরু হতে যাচ্ছে। এই প্রকল্পটি কৃষকদের শুধু অর্থনৈতিক সুবিধা দেবে না, পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কৃষকরা প্রাকৃতিক সার, বৈজ্ঞানিক मार्गदर्शन और ब्रांडिंग-এর সমর্থন পাবেন।

এই মিশন দেশে কৃষিকাজের ঐতিহ্য এবং আধুনিক বিজ্ঞানের মিলন। এর ফলে কৃষকদের আয় বাড়বে এবং রাসায়নিক সারের উপর নির্ভরতা কমানোর সুযোগ তৈরি হবে। এই মিশনের সাফল্য দেশের প্রাকৃতিক কৃষিকে আরও উৎসাহিত করবে এবং কৃষকরা নতুন প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে তাদের ফসলের মূল্য বাড়াতে সক্ষম হবেন।

Leave a comment