দিনের পর দিন যাত্রীবাহী ট্রেনের কামরায় অচেনা গতিবিধি চলছিল নিঃশব্দে। একাধিক সূত্রে সন্দেহজনক কার্যকলাপের খবর আসতেই কড়া নজরদারি শুরু করে রেল সুরক্ষা বাহিনী। কয়েকদিন ধরে চলা টানা অভিযানে অবশেষে সামনে আসে রোমহর্ষক চিত্র। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আরপিএফ উদ্ধার করল শতাধিক শিশু ও মহিলা, যাদের অনেকেই মানব পাচারের শিকার হতে পারতেন।
উদ্ধার হল শতাধিক শিশু ও মহিলা
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৭৩৮ জন পলাতক শিশু এবং পাচারের কবল থেকে ৮৯ জন শিশু ও মহিলাকে উদ্ধার করেছে। একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে ৯ জন পাচারকারীকে। উদ্ধারকৃতদের চাইল্ড লাইন, এনজিও এবং পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।সাত মাসে প্রায় ৮০০ জনকে বাঁচালো RPF। শিশু ও মহিলাদের পাচার থেকে ফেরাতে বড় ভূমিকা নিল রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী।
ধারাবাহিক অভিযানে উদ্ধার নাবালকরা
১৬ থেকে ১৯ অগাস্ট পর্যন্ত একের পর এক অভিযান চালায় আরপিএফ। ট্রেন ও স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয় ১৬ জন নাবালককে। মালিগাঁও থেকে শুরু করে ডিব্রুগড়, ডিমাপুর পর্যন্ত টানা নজরদারিতে ছোট ছোট শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরানো হয়।আগস্টের টানা অভিযানে উদ্ধার হল একঝাঁক নাবালক। মালিগাঁও থেকে ডিমাপুর পর্যন্ত সক্রিয় ছিল RPF।
কাটিহার থেকে আলিপুরদুয়ার, একাধিক রুটে অভিযান
১৮ আগস্ট বিশেষ অভিযানে কাটিহার, পূর্ণিয়া, কোকরাঝাড় ও আলিপুরদুয়ার থেকে উদ্ধার হয় আরও পাঁচ নাবালক। যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের হস্তান্তর করা হয় পরিবারের কাছে বা চাইল্ড লাইনের হাতে।গুয়াহাটি থেকে কামাখ্যা, আরও ৭ শিশু উদ্ধার১৯ অগাস্ট আরপিএফের নজরদারিতে গুয়াহাটি, কামাখ্যা, জালালগড় ও আলিপুরদুয়ার স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয় সাতজন নাবালককে। প্রত্যেককেই চাইল্ড লাইনের নিরাপদ হেফাজতে দেওয়া হয়।একদিনেই ফেরানো হল ৭ নাবালককে। উত্তর-পূর্ব রেলের অভিযানে আবারও প্রমাণ হল RPF-এর সতর্কতা।
RPF-এর বার্তা যাত্রীদের উদ্দেশে
রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, শিশুদের নিরাপত্তায় তাদের অভিযান আরও জোরদার হবে। একইসঙ্গে যাত্রীদের অনুরোধ করা হচ্ছে, সন্দেহজনক শিশু বা পাচারের ইঙ্গিত পেলেই RPF হেল্পলাইন নম্বর ১৩৯-এ জানাতে।সতর্ক থাকলেই রোধ করা সম্ভব পাচার। যাত্রীদের সচেতনতার ওপরেই ভরসা রাখছে RPF।