অভিনেতা সুনীল শেঠি বম্বে হাইকোর্টে একটি আবেদন দাখিল করে তার ছবি এবং নামের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আর্জি জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে কিছু ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজ তার এবং তার নাতির জাল ছবি বাণিজ্যিক লাভের জন্য ব্যবহার করছে। আদালত এই মামলার রায় সংরক্ষিত রেখেছেন।
বিনোদন: বলিউড অভিনেতা সুনীল শেঠি তার পরিচয় ও ভাবমূর্তি সুরক্ষার জন্য বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। আদালতে দায়ের করা অন্তর্বর্তীকালীন আবেদনে তিনি বলেছেন যে, অনেক ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তার ছবি অনুমতি ছাড়াই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে, যা তার সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। শেঠি আদালতের কাছে দাবি করেছেন যে, এই ধরনের সমস্ত অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে অবিলম্বে তার ছবি সরাতে এবং ভবিষ্যতে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হোক। বিচারপতি আরিফ ডাক্তারের বেঞ্চ এই মামলার শুনানি শেষে রায় সংরক্ষিত রেখেছেন।
অনুমতি ছাড়া ব্যবহারে অভিনেতার আপত্তি
সুনীল শেঠি আদালতে দায়ের করা তার আবেদনে বলেছেন যে, তার ব্যক্তিত্ব এবং ছবির উপর একমাত্র তারই অধিকার রয়েছে। তিনি জানান যে, অনেক ওয়েবসাইট তার ছবি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। এই ওয়েবসাইটগুলিতে তার নাম ও মুখ ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন চালানো হচ্ছে, অথচ সেই কোম্পানিগুলির সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই।
অভিনেতার মতে, কিছু ওয়েবসাইট তার নাম ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি বলেন যে, এই ধরনের কার্যকলাপ কেবল তার ভাবমূর্তিকেই আঘাত করছে না, বরং মানুষের মধ্যে একটি ভুল বার্তাও যাচ্ছে যে তিনি এই ব্র্যান্ড বা কোম্পানিগুলির সাথে যুক্ত।
আদালতের কাছে ছবি সরানোর দাবি
সুনীল শেঠি তার অন্তর্বর্তীকালীন আবেদনে আদালতের কাছে অনুরোধ করেছেন যে, সেই সমস্ত ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলিকে অবিলম্বে তার ছবি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হোক। একই সাথে, ভবিষ্যতে তার নাম বা ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার না করারও আদেশ জারি করা হোক।
অভিনেতার পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী বীরেন্দ্র সারাফ আদালতে বলেছেন যে, কিছু সাইট সুনীল শেঠি এবং তার নাতির জাল ছবিও আপলোড করেছে। সারাফ জানান যে, এই ছবিগুলি বাণিজ্যিক লাভের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
বাজি ধরার অ্যাপ এবং রিয়েল এস্টেট ওয়েবসাইটেও ছবি
আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন যে, একটি রিয়েল এস্টেট এজেন্সি এবং একটি বাজি ধরার অ্যাপ সুনীল শেঠির ছবি তাদের ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করেছে। এই ছবিগুলি এমনভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে যেন অভিনেতা এই ব্র্যান্ডগুলিকে সমর্থন করছেন। অথচ বাস্তবতা হলো, এই কোম্পানিগুলির সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই।
এ বিষয়ে আদালত উভয় পক্ষের যুক্তি শোনার পর রায় সংরক্ষিত রেখেছেন। বিচারপতি আরিফ ডাক্তারের বেঞ্চ বলেছেন যে, এই মামলায় দ্রুত আদেশ জারি করা হবে।
এর আগেও বহু তারকা এমন অভিযোগ করেছেন
এই মামলাটি নতুন নয়। এর আগেও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে তাদের পরিচয় এবং ছবির অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। অমিতাভ বচ্চন, ঐশ্বরিয়া রায় বচ্চন, রণবীর সিং, কারিনা কাপুর এবং আনুশকা শর্মার মতো বড় তারকারাও তাদের নাম বা ছবির ভুল ব্যবহারে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
এই তারকারা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, তাদের অনুমতি ছাড়া কোনো ব্র্যান্ড বা ওয়েবসাইটের তাদের নাম, ভয়েস বা ছবি ব্যবহার করার অধিকার নেই। আদালতও এই ধরনের মামলায় বহুবার তারকাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন, যার ফলে এটি স্থির হয়েছে যে, কারো পরিচয় তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং এর ভুল ব্যবহার করা যাবে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়ছে জালিয়াতি
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়েবসাইটগুলিতে জাল বিষয়বস্তু ও বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক সময় সাধারণ মানুষও এই মিথ্যা বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে যান। চলচ্চিত্র ও টিভির সঙ্গে যুক্ত তারকাদের জনপ্রিয়তার সুযোগ নিতে কিছু কোম্পানি তাদের ছবি ব্যবহার করে থাকে।
অভিনেতা সুনীল শেঠির এই পদক্ষেপ ক্রমবর্ধমান এই প্রবণতার বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, কারো পরিচয়, ছবি বা নামের অপব্যবহার এখন আর বরদাস্ত করা হবে না।