বিহারের রাজনীতিতে তেজপ্রতাপের নতুন দল: ২০২৫ সালের নির্বাচনে নতুন সমীকরণ?

বিহারের রাজনীতিতে তেজপ্রতাপের নতুন দল: ২০২৫ সালের নির্বাচনে নতুন সমীকরণ?

বিহারের রাজনীতিতে ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচন তেজপ্রতাপ যাদবের সক্রিয় রাজনৈতিক পদক্ষেপের সাথে আরও রোমাঞ্চকর হতে চলেছে। লালু-রাবড়ি পরিবারের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদব আরজেডি থেকে আলাদা হয়ে নিজের নতুন রাজনৈতিক পরিচিতি তৈরির দিকে পা বাড়িয়েছেন।

পাটনা: প্রাক্তন মন্ত্রী তেজ প্রতাপ যাদবের রাজনৈতিক যাত্রা দেখা যে কোনও রাজনৈতিক বিশ্লেষকের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে। আরজেডি থেকে আলাদা হওয়ার পরে তিনি যেভাবে নিজের রাজনৈতিক ভিত তৈরি করতে শুরু করেছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে তেজ প্রতাপ নিজের স্বভাব ও কৌশল অনুযায়ী রাজনীতিতে পদক্ষেপ রাখছেন। তাঁর পদ্ধতিকে কোনও রাজনৈতিক দলের হালকাভাবে নেওয়ার ভুল করা উচিত নয়।

তাঁর পথকে যদি একটি গল্পের মতো দেখা হয়, তবে এটি প্রায় "ধীরে ধীরে রেস জেতার" মতো। তেজ প্রতাপ ধীরে ধীরে, কিন্তু ক্রমাগত নির্বাচনী ময়দানে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করছেন। তাঁর রাজনৈতিক গ্রাফ দেখলে মনে হয় যেন ক্রমাগত উপরের দিকে উঠছে।

তেজপ্রতাপ যাদবের নতুন দল গঠন

২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তেজপ্রতাপ যাদব তাঁর নতুন দল 'জনশক্তি জনতা দল'-এর ঘোষণা করেছেন। এই পদক্ষেপ তাঁর জন্য আরজেডি থেকে আলাদা হয়ে স্বতন্ত্র রাজনীতির পথে বড় বাঁক হতে পারে। খবর অনুযায়ী, তেজপ্রতাপ যাদব দলের রেজিস্ট্রেশন নির্বাচন কমিশনে করিয়েছেন। দলের নির্বাচনী প্রতীক হিসাবে বাঁশি পাওয়া গেছে। এর আগে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তেজপ্রতাপের ঘনিষ্ঠ বালেন্দ্র দাস এই দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তেজপ্রতাপ যাদব আগেই ঘোষণা করেছেন যে তিনি মहुआ বিধানসভা ক্ষেত্র থেকে নির্বাচন লড়বেন এবং মहुआর জনগণের মধ্যে তিনি তাঁর বিশ্বাস দৃঢ় দেখতে পাচ্ছেন।

তেজপ্রতাপ যাদব আগস্টের প্রথম সপ্তাহে পাঁচটি দলের জোট তৈরি করে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কৌশল তৈরি করেছেন। এই জোটে রয়েছে:

  • বিকাশ বঞ্চিত ইনসান পার্টি (VVIP)
  • ভোজপুরিয়া জন মোর্চা (BJM)
  • প্রগতিশীল জনতা পার্টি (PJP)
  • ওয়াজিব অধিকার পার্টি (WAP)
  • সংযুক্ত কিষাণ বিকাশ পার্টি (SKVP)

এছাড়াও, তেজপ্রতাপ যাদব এআইএমআইএম-এর কাছেও জোটের প্রস্তাব রেখেছেন। সীমান্ত অঞ্চলে আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদ যাদবকে গতবার চ্যালেঞ্জ জানানো আসাদুদ্দিন ওয়াইসির সাথে তাঁর জোট বিহারের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।

তেজপ্রতাপের কৌশলগত ঘোষণা

তেজপ্রতাপ যাদব আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, যে নেতা ও বিধায়কদের তেজস্বী যাদব উপেক্ষা করেছেন, তাঁদের জনশক্তি জনতা দলে স্বাগত। এই নীতির অধীনে তিনি প্রথমে আসাদুদ্দিন ওয়াইসির দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ওয়াইসি আগে থেকেই আরজেডির উপর ক্ষুব্ধ, এবং তাঁর চার বিধায়ককে আরজেডি থেকে আলাদা করা হয়েছিল।

তেজপ্রতাপ যাদবের এই পদক্ষেপ সেই আরজেডি নেতাদের জন্যও ইঙ্গিত, যারা বর্তমানে দলের প্রতি অসন্তুষ্ট। তাঁর কাছে ২৪৩টি বিধানসভা আসনের সম্ভাব্য ক্ষেত্র রয়েছে, যা তাঁকে রাজনৈতিক কৌশলে শক্তি যোগায়। প্রবীণ সাংবাদিক প্রবীণ বাগীর মতে, তেজপ্রতাপ যাদবের পদক্ষেপ তেজস্বী যাদবের উপর ক্ষুব্ধ নেতাদের জন্য আকর্ষণীয় বিকল্প হতে পারে। দুই ভাইয়ের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে, এবং যে নেতারা তেজস্বী যাদবকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে চান, তাঁরা তেজপ্রতাপের সাথে যেতে পারেন।

Leave a comment