কোটি টাকার তারকার ছেলে অথচ জামা সেকেন্ড হ্যান্ড রান্না নিজে, বাসনও মাজেন! অভিনয় নয় জীবন নিয়ে এক অন্য দৃষ্টান্ত আরভ ভাটিয়ার

কোটি টাকার তারকার ছেলে অথচ জামা সেকেন্ড হ্যান্ড রান্না নিজে, বাসনও মাজেন! অভিনয় নয় জীবন নিয়ে এক অন্য দৃষ্টান্ত আরভ ভাটিয়ার

বলিউডের রাজসিকতার বিপরীতে এক ‘সাধারণ’ জীবনযাপন!

বলিউড তারকাদের পরিবার মানেই বিলাসিতা, চকমকে জীবন। কিন্তু তারই মধ্যে ব্যতিক্রম আরভ কুমার। খিলাড়ি অক্ষয় কুমারের ছেলে হয়েও একেবারে সাধারণ জীবন বেছে নিয়েছেন তিনি।জন্ম থেকেই তারকাখচিত পরিবারে মানুষ হলেও, পিতার ২৭০০ কোটি টাকার সম্পত্তি তাঁর জীবনের চালচিত্র বদলে দিতে পারেনি। সেকেন্ড হ্যান্ড জামা-কাপড় পরা, নিজে রান্না করা, বাসন মাজা—সবই তিনি করেন দিব্যি স্বাভাবিকভাবে। এটা কোনও চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য নয়, বাস্তবেই এমন জীবন যাপন করছেন অক্ষয়-টুইঙ্কলের সন্তান আরভ ভাটিয়া।

তারকা পরিবারের ছেলে, অথচ চটচকে জীবনের বাইরে এক নিঃশব্দে বেঁচে থাকা

রাজেশ খান্নার নাতি, ডিম্পল কাবাডিয়ার দৌহিত্র—এমন এক নাম যার পিছনে বলিউডের সুবর্ণ ইতিহাস। তবুও আরভ যেন আলাদা পথে হাঁটার মানসিকতাই নিয়েছেন।শৈশব থেকেই মিডিয়ার চোখের সামনে থাকা সত্ত্বেও নিজেকে তিনি গুটিয়ে রেখেছেন লাইমলাইট থেকে। আরব সাগরের তীরে রাজকীয় অট্টালিকার বদলে লন্ডনের সাধারণ ছাত্রাবাসের জীবন তাঁকে টানে বেশি। অক্ষয় নিজেই বলেছিলেন, সে একেবারেই তারকা-সুলভ জীবন পছন্দ করে না।

রান্না, বাসন মাজা, সেকেন্ড হ্যান্ড জামা—এই তাঁর দৈনন্দিন

বাড়ির হেল্পারদের পরিবর্তে নিজের খাবার নিজেই তৈরি করেন। কাঁসার থালা থেকে শুরু করে কড়াই—সবই ধুয়ে মুছে নিজে রাখেন। এমন এক তরুণ যাঁর চারপাশে বিলাসিতার ঢেউ, কিন্তু মন শান্ত, সরল ও সংযত।এক সাক্ষাৎকারে অক্ষয় জানান, “আরভ আজও সেকেন্ড হ্যান্ড জামা-কাপড় পরে। ওর কাছে দামি ব্র্যান্ড নয়, জামাটার কাজে লাগা বা রুচি গুরুত্বপূর্ণ।” এটা নিছকই কৃত্রিম বিনয়ের প্রচার নয়, বরং বাস্তবেই তাঁর ছেলে এমন জীবন বেছে নিয়েছে বলেই দাবি অভিনেতার।

ফ্যাশনই ভবিষ্যৎ, বলিউড নয়—নিজেকে নতুন ভাবে গড়ছেন আরভ

অভিনয়ের জগতে পদার্পণ না করে ফ্যাশনের জগতে নিজের ভবিষ্যৎ খুঁজছেন আরভ। তাঁর পড়াশোনা চলছে লন্ডনের নামী ইনস্টিটিউটে, যেখানে তিনি ফ্যাশন ডিজাইনের ওপর বিশেষজ্ঞতা অর্জন করছেন।বহু সেলিব্রিটি সন্তান যখন বলিউডে অভিষেকের জন্য মুখিয়ে থাকে, আরভ তখন হাঁটছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে। কোনও হাইফাই পার্টি, নাইট লাইফ বা লালগালিচার উত্তাপ তাঁর জীবনকে স্পর্শ করেনি। কোনও সোশ্যাল মিডিয়া জল্পনাও নেই তাঁকে ঘিরে—সেটা ইচ্ছা করেই।

শৈশব থেকে মার্শাল আর্ট, সৃজনশীলতায় পূর্ণ আরভের মনোজগৎ

ফ্যাশনের প্রতি আকর্ষণের পাশাপাশি ছোট থেকেই মার্শাল আর্টে দখল রয়েছে আরভের। সৃজনশীল চিন্তাধারায় বিশ্বাসী এই তরুণ ভবিষ্যতে কোনো বলিউডি অ্যাকশন স্টার নয়, বরং সৃষ্টিশীল ডিজাইনার হয়ে উঠতে চান।টুইঙ্কল খান্নাও ছেলের এমন পথকে সমর্থন করেন। তিনি বলেন, “ওর মধ্যে একটা নির্লিপ্ত সৌন্দর্য আছে। তারকাদের গ্ল্যামারকে ও কখনও গুরুতর ভাবে নেয়নি। বরং নিজের সত্তার জন্য ও গর্ব করে।” অর্থাৎ তারকা সন্তান হলেও নিজস্ব পরিচয়ের সন্ধান করছেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে, সেলিব্রিটি-গ্ল্যামারের বাইরে নিরিবিলিতে জীবন

আরভ আজও রয়ে গেছেন একেবারে লো-প্রোফাইল। ইনস্টাগ্রাম, টিকটক বা ইউটিউবের ঝলকানি থেকে শতহস্ত দূরে তিনি। গ্ল্যামার দুনিয়ার বাইরে থেকেও তিনি তারকা, একেবারে অন্যরকমভাবে।আজকের দিনে যেখানে জনপ্রিয়তা নির্ভর করে ফলোয়ার সংখ্যা বা ভাইরাল কনটেন্টে, সেখানে আরভের নিঃশব্দে বেঁচে থাকা এক শিক্ষা—যে জীবন মানে শুধু আলো নয়, অন্তর্দৃষ্টি ও স্বাবলম্বিতা।

Leave a comment