অ্যামাজনের ছাঁটাইয়ের পর AI-এর প্রভাব: হোয়াইট-কলার চাকরিও ঝুঁকিতে, ভারতের তরুণদের জন্য উদ্বেগজনক বার্তা

অ্যামাজনের ছাঁটাইয়ের পর AI-এর প্রভাব: হোয়াইট-কলার চাকরিও ঝুঁকিতে, ভারতের তরুণদের জন্য উদ্বেগজনক বার্তা
সর্বশেষ আপডেট: 5 ঘণ্টা আগে

অ্যামাজন ১৪,০০০ কর্মীকে ছাঁটাই করার পর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নিয়ে চাকরির নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ বেড়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, এই ঝুঁকি এখন শুধু প্রযুক্তি ও প্রোগ্রামিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, মার্কেটিং, ফিনান্স এবং এইচআর (HR)-এর মতো হোয়াইট-কলার চাকরি পর্যন্তও ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতের মতো যুব-প্রধান দেশের জন্য, এই ইঙ্গিতগুলি আরও গুরুতর বলে বিবেচিত হয়।

AI-এর চাকরির উপর প্রভাব: ই-কমার্স খাতের অন্যতম প্রধান সংস্থা অ্যামাজন বিশ্বব্যাপী ১৪,০০০ কর্পোরেট চাকরি কমানোর ঘোষণা করে কর্মসংস্থান বাজারে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কোম্পানির এই সিদ্ধান্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-এর ক্রমবর্ধমান ভূমিকা এবং মানব শ্রমশক্তির উপর এর প্রভাব সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে। এই ছাঁটাই শুধুমাত্র আমেরিকা বা ইউরোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং ভারতের মতো দেশেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে, যেখানে বিপুল সংখ্যক তরুণ কর্পোরেট খাতের উপর নির্ভরশীল। বিশেষজ্ঞদের মতে, AI প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির কারণে মার্কেটিং, ফিনান্স এবং অডিটিং-এর মতো ক্ষেত্রগুলিতেও চাকরি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

অ্যামাজনের ছাঁটাইয়ের কারণে AI উদ্বেগ বাড়িয়েছে

ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজনের ১৪,০০০ কর্পোরেট চাকরি বাতিল করার সিদ্ধান্তের ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-এর ক্রমবর্ধমান ভূমিকা এবং চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা তীব্র হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, এই ঝুঁকি এখন কোডিং বা এন্ট্রি-লেভেল টেক রোলসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, মার্কেটিং, ফিনান্স, অডিটিং এবং এইচআর (HR)-এর মতো হোয়াইট-কলার চাকরিগুলিকেও প্রভাবিত করতে পারে। ভারতের মতো যুব-প্রধান দেশের জন্য, এই ইঙ্গিতগুলি আরও গুরুতর, কারণ এখানে বিপুল সংখ্যক স্নাতক কর্পোরেট চাকরির উপর নির্ভরশীল।

ভারতে AI-এর প্রভাব দ্রুত স্পষ্ট হচ্ছে

অ্যামাজনের সাম্প্রতিক ছাঁটাইয়ের সরাসরি প্রভাব ভারতের উপর না পড়লেও, যে চাকরির ভূমিকাগুলিতে ছাঁটাই করা হয়েছে, সেগুলি ভারতীয় বাজারের প্রস্তুতির বিষয়ে প্রশ্ন তোলে। বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ এবং অন্যান্য টেক হাবের সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই AI-ভিত্তিক সরঞ্জামগুলির দিকে ঝুঁকছে। এর ফলে এমন পেশাদারদের উপর চাপ বাড়ছে, যারা এতদিন ডিজিটাল এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে তাদের কর্মজীবনের সুরক্ষা বলে মনে করতেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জেনারেটিভ AI-এর দ্রুত বর্ধনশীল ক্ষমতা ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ডেটা বিশ্লেষণ এবং কনটেন্ট তৈরি-এর মতো কাজগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকা ভূমিকাগুলিকেও প্রভাবিত করতে পারে। ম্যাককিনসেও তার AI সরঞ্জাম, লিলি (Lilly) গ্রহণ করেছে, যা ডেটা প্রেজেন্টেশন এবং বিশ্লেষণের মতো কাজ করতে পারে।

গবেষণা কী বলে

নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি (Northwestern University) এবং এমআইটি (MIT)-এর একটি যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভাষা-ভিত্তিক AI প্রথমে এমন চাকরিগুলিকে প্রভাবিত করবে যেখানে যোগাযোগ (communication) এবং ডেটা প্রক্রিয়াকরণ (data processing) প্রধান কাজ। এর আগে এমনটা মনে করা হত যে AI কম শিক্ষিত কর্মীদের স্থানচ্যুত করবে, কিন্তু নতুন ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে ব্যাংকিং এবং অডিটিং-এর মতো ক্ষেত্রগুলিতেও দ্রুত পরিবর্তন আসতে পারে।

এর অর্থ এই যে, এবার প্রভাব উল্টো হতে পারে, যেখানে উচ্চ শিক্ষা এবং বিশেষীকরণের প্রয়োজন এমন কিছু ভূমিকাও অটোমেশনের আওতায় আসবে। এই পরিবর্তন কর্পোরেট কর্মজীবনের প্রাথমিক স্তরগুলিকে সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

ভারতের তরুণদের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব

ভারতে ৩৭০ মিলিয়নেরও বেশি তরুণ রয়েছে, এবং শহুরে তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব ইতিমধ্যেই ১৮ শতাংশের বেশি। যদি সংস্থাগুলি এন্ট্রি-লেভেলের ভূমিকাগুলিকে AI দিয়ে প্রতিস্থাপন করা অব্যাহত রাখে, তাহলে লক্ষ লক্ষ নতুন স্নাতকের পক্ষে প্রাথমিক কর্মসংস্থান খুঁজে পাওয়া কঠিন হতে পারে। লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স (London School of Economics)-এর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, যখন এন্ট্রি-লেভেলের সুযোগ কমে যায়, তখন দক্ষতা বিকাশ এবং কর্মজীবনের উন্নতির পথগুলিও দুর্বল হয়ে পড়ে।

ভারতের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য এই পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জিং, কারণ একটি বিশাল জনসংখ্যা বেসরকারি সংস্থাগুলিতে তাদের কর্মজীবন শুরু করে, এবং AI-এর চাপ তাদের আয় এবং তাদের অগ্রগতি উভয়ের উপরই প্রভাব ফেলতে পারে।

Leave a comment