আঁতা উপনির্বাচনের রাজনৈতিক মঞ্চ এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। ভোটের তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে, নির্বাচনী উত্তাপও ততই বাড়ছে। কংগ্রেস এবং বিজেপির বড় মুখগুলো ময়দানে নেমে পড়েছে এবং রাজনৈতিক কৌশল দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আঁতা: রাজস্থানের আঁতা বিধানসভা আসনে অনুষ্ঠিত হতে চলা উপনির্বাচন এখন কেবল একটি নির্বাচন নয়, বরং একটি রাজনৈতিক সংগ্রামে পরিণত হয়েছে। ভোটের তারিখ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমাগত বাড়ছে। কংগ্রেস এবং বিজেপির প্রবীণ নেতারা ময়দানে নেমেছেন, এর মধ্যে হনুমান বেনিওয়ালের (Hanuman Beniwal) প্রবেশ এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
বেনিওয়াল ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি নির্দলীয় প্রার্থী নরেশ মীনার (Naresh Meena) সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার চালাবেন। স্বয়ং নরেশ মীনা এটি নিশ্চিত করে বলেছেন যে, ৮ নভেম্বর হনুমান বেনিওয়াল আঁতায় পৌঁছে শক্তি প্রদর্শন করবেন। এর ফলে আঁতার রাজনীতিতে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, কারণ বেনিওয়ালের সমাবেশ থেকে সমীকরণ বদলের সম্ভাবনা রয়েছে।
আঁতায় রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে
আঁতা উপনির্বাচনে এবার একটি ত্রিমুখী লড়াই দেখা যাচ্ছে — কংগ্রেস, বিজেপি এবং নির্দলীয় প্রার্থী নরেশ মীনার মধ্যে। যেখানে কংগ্রেস তাদের শক্তিশালী সংগঠন এবং জাতিগত সমীকরণের জোরে ময়দানে রয়েছে, वहीं বিজেপি তাদের ঐতিহ্যবাহী ভোটব্যাঙ্ককে একত্রিত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এসবের মাঝে নরেশ মীনার প্রচার অভিযান ক্রমাগত গতি লাভ করছে। তিনি নিজেকে “জনতার প্রার্থী” হিসেবে দাবি করে ময়দানে রয়েছেন। এখন হনুমান বেনিওয়ালের সমর্থনে তিনি রাজপুত এবং যুব ভোটারদের ভোট থেকে সুবিধা পেতে পারেন।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গোবিন্দ সিং দোতাসরা জাট সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করার কৌশল গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি দলের বরিষ্ঠ নেতা প্রমোদ জৈন ‘ভায়া’ তাঁর আর্থিক এবং সাংগঠনিক শক্তির জোরে নির্বাচনী ময়দান সামলাচ্ছেন। ভায়ার নেটওয়ার্ক আঁতা এবং আশেপাশের এলাকায় শক্তিশালী বলে মনে করা হয়, এবং তিনি কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি বুথে কৌশলগত প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

অন্যদিকে বিজেপির পরিস্থিতি কিছুটা জটিল দেখা যাচ্ছে। দলের প্রার্থী মোরপাল সুমনের প্রচার উপরিভাগে ধীর মনে হচ্ছে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে বিজেপি সূক্ষ্ম জাতিগত সমীকরণ নিয়ে কাজ করছে। প্রদেশ সভাপতি মদন রাঠোরের এলাকায় সফরকে আনুষ্ঠানিক বলে মনে করা হয়েছিল, কিন্তু এখন দলের আসল ‘ট্রাম্প কার্ড’ অর্থাৎ বসুন্ধরা রাজে এবং মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মার যৌথ সমাবেশ ৮ নভেম্বর প্রস্তাবিত, যা বিজেপি কর্মীদের মধ্যে নতুন শক্তি সঞ্চার করতে পারে।
হনুমান বেনিওয়ালের প্রবেশ সমীকরণ পাল্টে দিয়েছে
রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (RLP)-এর প্রধান হনুমান বেনিওয়ালের নাম রাজস্থানের রাজনীতিতে বরাবরই ‘কিংমেকার’ হিসেবে নেওয়া হয়। তাঁর জনসভাগুলিতে ভিড় উপচে পড়ে, বিশেষ করে যুব সমাজের মধ্যে তাঁর বিশেষ প্রভাব রয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, বেনিওয়াল নরেশ মীনার সমর্থনে শক্তি প্রদর্শনী সমাবেশ করবেন এবং কংগ্রেস-বিজেপি উভয়ের ওপর একই সঙ্গে নিশানা সাধতে পারেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা যে বেনিওয়ালের প্রবেশের ফলে লড়াই সম্পূর্ণভাবে ত্রিমুখী এবং ভারসাম্যহীন হয়ে উঠতে পারে। যদি মীনা তাঁর সমাবেশ থেকে পর্যাপ্ত সমর্থন পান, তাহলে এটি কেবল কংগ্রেসের জন্যই নয়, বিজেপির জন্যও মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
আঁতা হবে রাজনৈতিক ‘লঙ্কা দহন’-এর ময়দান
আঁতায় বেনিওয়ালের সমাবেশকে শুধু নরেশ মীনার সমর্থন হিসেবেই নয়, রাজনৈতিক প্রতিশোধ এবং প্রভাব প্রদর্শনের রূপেও দেখা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেনিওয়াল অনেক পুরোনো রাজনৈতিক সমীকরণ ঠিক করতে এবং কিছু অসম্পূর্ণ হিসেব মেটাতে প্রস্তুত। তাঁর কৌশল এমনও হতে পারে যে, ভবিষ্যতে যদি রাজস্থানে কোনো জোটের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তবে তিনি নিজেকে আবারও একটি নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন।
আঁতা উপনির্বাচন মূলত একটি বিধানসভা আসনের নির্বাচন, কিন্তু এর প্রভাব সমগ্র হাড়োতী অঞ্চলের রাজনীতিতে পড়বে। কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়ই এই আসনটিকে “প্রেস্টিজ ব্যাটল” হিসেবে দেখছে। এখন হনুমান বেনিওয়ালের প্রবেশ এই যুদ্ধকে তৃতীয় ফ্রন্টের আগুনে রূপান্তরিত করেছে।













