বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর প্রথম দফার ভোট ৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে, এবং তার আগে রাজ্যে নির্বাচনী উত্তাপ চরমে পৌঁছেছে। মিছিল, জনসভা এবং নেতাদের কড়া মন্তব্যে রাজনৈতিক পরিবেশ পুরোপুরি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
পাটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর প্রথম দফার ভোটের ঠিক আগে রাজ্যের রাজনীতিতে বাগ্যুদ্ধের পালা তীব্র হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং বরিষ্ঠ বিজেপি নেতা নিত্যানন্দ রায় রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদবকে নিশানা করে একটি বড় মন্তব্য করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, তেজস্বী যাদব এবার তাঁর ঐতিহ্যবাহী আসন রাঘোপুর থেকে নির্বাচনে হারতে চলেছেন।
নিত্যানন্দ রায় বলেছেন যে, তেজস্বী এখন আর নায়ক নন বরং খলনায়ক হয়ে উঠেছেন, কারণ তিনি জনগণের বিশ্বাস হারিয়েছেন। তিনি আরও যোগ করেছেন যে, এবার রাঘোপুরের জনগণ “উন্নয়ন ও সম্মান” চায়, বংশবাদ ও নৈরাজ্য নয়।
'তেজস্বী যাদব রাঘোপুর থেকে হারছেন' — নিত্যানন্দ রায়
বিহারের প্রথম দফার ভোট ৬ নভেম্বর ২০২৫-এ অনুষ্ঠিত হবে, এবং এরই মধ্যে নিত্যানন্দ রায়ের মন্তব্য নির্বাচনী পরিবেশকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। তিনি বলেছেন,
'এবার রাঘোপুর থেকে তেজস্বী যাদব হারছেন। ৬ নভেম্বর এবং ১১ নভেম্বরের ভোটের পর তাঁর ভরাডুবি হবে। ২০২০ সালেও তিনি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, কিন্তু সেই স্বপ্ন তখনও অপূর্ণ ছিল এবং এবারও অপূর্ণই থাকবে। '
রায় তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে বিহারকে কেবল হিংসা, ভয় এবং দুর্নীতির রাজনীতিই দিয়েছেন।
‘তেজস্বী নায়ক নন, খলনায়ক’

বিজেপি নেতা তীব্র আক্রমণ করে বলেছেন, তেজস্বী যাদব বিহারের নায়ক নন, বরং খলনায়ক। তিনি তাঁর বাবা লালু যাদবের মতোই কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এমন মানুষ যদি নিজেকে নায়ক বলে, তাহলে বিহারের জনগণ হাসে। তিনি আরও বলেছেন যে, তেজস্বীর নেতৃত্বে বিহারের রাজনীতি পিছিয়ে পড়বে, যখন জনগণ এখন পরিবর্তন ও উন্নয়ন চায়।
নিত্যানন্দ রায় বলেছেন যে, রাঘোপুরের জনগণ এবার উন্নয়নের রাজনীতিতে ভোট দেবে। তাঁর মতে, বিগত বছরগুলিতে তেজস্বী যাদব তাঁর এলাকার জনগণকে হতাশ করেছেন এবং সেখানে কোনো সুনির্দিষ্ট উন্নয়নমূলক কাজ করাননি। তিনি বলেছেন, যখন রাঘোপুরের জনগণ তেজস্বী যাদবের সাথে দেখা করতে যেত, তখন তাঁর গুন্ডা ও সমর্থকরা লাঠি দিয়ে মানুষকে মারধর করত। প্রবীণদের অপমান করা হয়েছে, যুবকদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে। এখন জনগণ এবার উন্নয়ন, সম্মান ও সেবা চায়, ভয় ও অপমান নয়।
রায় দাবি করেছেন যে, বিজেপি এবং এনডিএ-র সরকার গ্রামগুলিতে সড়ক, বিদ্যুৎ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলিতে অগ্রাধিকার দিয়েছে, যেখানে আরজেডি শাসনে কেবল জাতিবাদ ও দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২০-র কথা মনে করিয়ে দিলেন — ‘দু'দিনের তাণ্ডব ব্যয়বহুল হবে’
নিত্যানন্দ রায় ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে, তেজস্বী যাদব তখনও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, কিন্তু জনগণ তাঁর অহংকার প্রত্যাখ্যান করেছিল। তিনি বলেছেন, ২০২০ সালে তেজস্বী যাদব এবং তাঁর গুণ্ডারা যে তাণ্ডব চালিয়েছিল, বিহার আজও তা মনে রাখে। ৭ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে যে ভয় ও হিংসা ছড়ানো হয়েছিল, তার জবাব জনগণ এখন ২০২৫ সালের নির্বাচনে দেবে।
বিহারের এবারের নির্বাচনে বিজেপি, জনতা দল (ইউ), হাম (হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা) এবং এলজেপি (রামবিলাস) জোট বনাম আরজেডি-কংগ্রেস-বামফ্রন্টের সরাসরি মোকাবিলা। রাঘোপুর আসন, যা ঐতিহ্যগতভাবে যাদব পরিবারের দুর্গ বলে পরিচিত, আবারও রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তেজস্বী যাদব ২০২০ সালের নির্বাচনে রাঘোপুর থেকে জয়ী হয়েছিলেন, কিন্তু এবার তাঁর সামনে বিজেপি এবং জেডিইউ জোট স্থানীয় বিষয় এবং উন্নয়নমূলক কাজগুলিকে কেন্দ্রে রেখে কৌশল তৈরি করেছে।













