জোহারান মামদানি নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম এবং সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র হয়েছেন। তার জয়ের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে এই ফলাফল আমেরিকার সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করতে পারে। এই বিবৃতির পর রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে।
নিউ ইয়র্ক: আমেরিকার বৃহত্তম শহর নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনের ফলাফল রাজনৈতিক পরিবেশকে একটি নতুন মোড় দিয়েছে। এই নির্বাচনে জোহারান মামদানি জয়ী হয়েছেন, যিনি শহরের প্রথম মুসলিম এবং এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র হতে চলেছেন। মামদানি ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য এবং তাকে একজন প্রগতিশীল নেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। তার এই জয় শহরের সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মামদানি আগেও সামাজিক ন্যায়বিচার, আবাসন উন্নয়ন এবং সম্প্রদায়-ভিত্তিক নীতি নিয়ে সক্রিয় ছিলেন। এই জয়ের পর শহরে এই আলোচনা তীব্র হয়েছে যে নিউইয়র্ক এখন কোন রাজনৈতিক ও উন্নয়ন মডেলের দিকে এগোবে।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
জোহারান মামদানির জয়ের পর প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেন যে মামদানির জয়ে আমেরিকার সার্বভৌমত্ব দুর্বল হয়েছে। ট্রাম্প আমেরিকার একটি ব্যবসায়িক ফোরামে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এই কথা বলেন। তার বক্তব্য ছিল যে নিউইয়র্কের রাজনীতি এমন এক মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে ডেমোক্রেটিক নেতৃত্ব দেশকে পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
সার্বভৌমত্ব নিয়ে ট্রাম্পের দাবি
তার বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন যে যখন মার্কিন জনগণ 2024 সালের নির্বাচনে তার সরকারকে নির্বাচিত করেছিল, তখন দেশ তার সার্বভৌমত্বকে শক্তিশালী করেছিল। কিন্তু নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এই নতুন মেয়র নির্বাচনে, ট্রাম্পের মতে, দেশ তার সার্বভৌমত্বের "একটি অংশ হারিয়েছে"। ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল যে নিউইয়র্কের এই রাজনৈতিক দিকের প্রভাব ব্যাপকভাবে দেখা যেতে পারে।

নিউইয়র্ক নিয়ে ট্রাম্পের বড় দাবি
তার বক্তৃতায় ট্রাম্প আরও বলেন যে মামদানির জয়ের পর নিউইয়র্ক কিউবা বা ভেনিজুয়েলার মতো অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মডেলে পরিবর্তিত হতে পারে। ট্রাম্প বলেন যে তিনি আগেও সতর্ক করেছিলেন যে ডেমোক্রেটিক নীতিগুলো আমেরিকাকে এমন একটি পথে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে দেশটি ধীরে ধীরে সমাজতান্ত্রিক বা কমিউনিস্ট কাঠামোতে চলে যেতে পারে। ট্রাম্পের মতে, যদি নিউইয়র্কে এই ধরনের নীতিগুলো প্রয়োগ করা হয়, তাহলে শহরের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, ব্যবসা, কর ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যাবে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ফ্লোরিডার দিকে অভিবাসনের দাবি
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও বলেন যে যদি নিউইয়র্কের নীতিগুলো মামদানির ধারণার সাথে সঙ্গতি রেখে পরিবর্তিত হয়, তাহলে শহরের মানুষ বড় আকারে ফ্লোরিডার দিকে পাড়ি জমাতে পারে। ট্রাম্প একে "পালিয়ে যাওয়া" বলে বর্ণনা করেছেন। তার বক্তব্য হলো যে ফ্লোরিডা বর্তমানে একটি কর-বান্ধব, কম বিধিনিষেধযুক্ত এবং অর্থনৈতিকভাবে উন্মুক্ত রাজ্য, যেখানে নিউইয়র্ক শীঘ্রই এমন নিয়মগুলির দিকে যেতে পারে যা ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী এবং মধ্যবিত্তদের উপর চাপ সৃষ্টি করবে।
নিউইয়র্কের প্রাক্তন মেয়র সম্পর্কে ট্রাম্পের মন্তব্য
ট্রাম্প তার ভাষণে নিউইয়র্কের প্রাক্তন মেয়র বিল ডি ব্লাসিওকেও নিশানা করেন। তিনি বলেন যে ডি ব্লাসিওর মেয়াদ শহরের জন্য "সবচেয়ে খারাপ" প্রমাণিত হয়েছে। ট্রাম্পের মতে, যখন তিনি হোয়াইট হাউসের জন্য নিউইয়র্ক ছেড়েছিলেন, তখন শহর ঠিক ছিল, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত এবং নেতৃত্বের অভাবে পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে একটি রাজনৈতিক আক্রমণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষত কারণ ডি ব্লাসিও ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য।













