কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আক্রমণে বড় বিপদের সংকেত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আক্রমণে বড় বিপদের সংকেত
সর্বশেষ আপডেট: 30-11--0001

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি শেষ করে দেবে চাকরির সংজ্ঞা? বিজ্ঞান যত উন্নত হচ্ছে, ততই আতঙ্ক বাড়ছে মানুষের মনে। বিশেষত এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে বিশ্বজুড়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। এখন যেসব কাজ মানুষের শ্রমে হয়, তা ভবিষ্যতে মেশিন বা এআই সহজেই করে ফেলবে – এমন আশঙ্কা বেশ স্পষ্ট। এক গবেষক তো দাবি করে বসেছেন, ২০৪৫ সালের মধ্যে মানুষের অধিকাংশ চাকরি থাকবে না বললেই চলে!

‘চাকরি থাকবে না’, স্পষ্ট বার্তা গবেষকের – থরথর কাঁপছে বিশ্ব অর্থনীতি

‘মানুষের কাজ কেড়ে নেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’— এই দাবি করেছেন গবেষক অ্যাডাম ডর। তিনি ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আগামী দুই দশকে বহু পেশার অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। বিশেষত যেসব কাজ নিয়ম মেনে, বিশ্লেষণ ও ডেটা প্রসেসিংয়ের ওপর নির্ভর করে, তা সবই করে ফেলবে AI। ফলে বিশাল সংখ্যায় কর্মহীন হয়ে পড়তে পারেন বর্তমান প্রজন্ম।

তিনটি পেশা নিরাপদ, বলছেন গবেষক – বেঁচে যাবে কে কে?

সবই কি শেষ? না, কিছু পেশা এখনও এআই-এর ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে। অ্যাডাম ডর মনে করেন, মানবিক যুক্তি, নৈতিকতার জটিলতা, অনুভূতির মূল্যায়ন— এই তিন দিকেই মানুষ এখনও মেশিনের চেয়ে এগিয়ে। তাই রাজনীতিবিদ, যৌনকর্মী ও বিচারক – এই তিন ধরনের পেশায় মানুষের বিকল্প পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ সেখানে কৃত্রিমতা কাজ করবে না।

ডাক্তারিও বিপদের মুখে, তবে খুলছে নতুন সুযোগের দরজা

ডাক্তার-পেশাও রেহাই পাবে না, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। AI রোগ নির্ণয়, ওষুধ প্রস্তাব, অপারেশন গাইডেন্স এমনকি মানসিক চিকিৎসা পর্যন্ত করতে সক্ষম হচ্ছে। কিন্তু এতে চাকরি হারানোর পাশাপাশি সৃষ্টি হচ্ছে নতুন ভূমিকাও। রোবোটিক সার্জারি, মেডিক্যাল এআই ট্রেনিং, ডেটা অ্যানালাইসিস— এ সবই তৈরি করছে নতুন কর্মক্ষেত্র।

‘AI-কে ভয় নয়, বন্ধু করে নিন’, বার্তা ‘AI-এর ঠাকুরদা’ হিন্টনের

এই ভয় কাটাতে চেষ্টায় রয়েছেন খোদ জিওফ্রে হিন্টন, যাঁকে ‘এআইয়ের ঠাকুরদা’ বলা হয়। তাঁর কথায়, এআই চাকরি কেড়ে নেবে ঠিকই, কিন্তু তা আটকানো যাবে না। বরং আমাদেরই চাই, এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে আরও দক্ষ করে তোলা। হিন্টনের মতে, পেশাদারদের উচিত এখন থেকেই AI-এর সঙ্গে সহাবস্থানে অভ্যস্ত হওয়া।

চাকরি যাবে, কিন্তু ফিরেও আসবে অন্য রূপে— আশার আলো দেখালেন বিশেষজ্ঞরা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাকরির এক দরজা বন্ধ হলে আরেক দরজা খুলবেই। যেমন প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং, এআই ডেটা টেস্টিং, রোবোটিক সিস্টেম ডিজাইন, মেশিন লার্নিং কোচিং— এই ধরনের কাজের চাহিদা আগত দশকে আকাশছোঁয়া হবে। এ কারণেই বর্তমান প্রজন্মকে এখনই AI ভিত্তিক দক্ষতা আয়ত্তে আনার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

শেষ কথা: ভয় নয়, প্রস্তুতি চাই!

যে যুগ আসছে, তা শুধু চাকরি কেড়ে নেওয়ার নয় – নতুন এক শ্রমজগতের সূচনা। এআই যদি চাকরি কেড়ে নেয়, তা হলে তাকে কাজে লাগিয়েই চাকরির নতুন সংজ্ঞা তৈরি করা যেতে পারে। শুধু চাই সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতা এবং প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের ইচ্ছা।

Leave a comment