দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ছাদ থেকে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করলেন ৮৫ বছর বয়সি রোগী নেপালচন্দ্র দাস। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। খবর পেয়ে নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ইতিমধ্যে পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।
চিকিৎসাধীন ছিলেন মহকুমা হাসপাতালে, ভর্তি ছিলেন জ্বর ও পেট ব্যথা নিয়ে
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নেপালচন্দ্র দাস দুর্গাপুর পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লির বাসিন্দা। গত সোমবার তাঁকে জ্বর ও পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছিলেন বলেই জানাচ্ছে পরিবার।
হাসপাতালের ছাদ পরিদর্শনে পূর্ত দফতর, আচমকাই ছাদে চলে যান বৃদ্ধ
ঘটনার সময় পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা ছাদের অবস্থা পরিদর্শনে ছিলেন। হাসপাতালের ছাদের কিছু জায়গা থেকে গত কয়েকদিন ধরে জল চুঁইয়ে পড়ছিল, তারই পরিপ্রেক্ষিতে ওই পরিদর্শন। এই ফাঁকে সকলের অগোচরে ছাদে উঠে পড়েন নেপালবাবু।
সকলের চোখ এড়িয়ে ঝাঁপ, মুহূর্তে শেষ হয়ে যায় জীবন
ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা কর্মীরা বৃদ্ধকে দেখে চিৎকার করে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু বোঝার আগেই বৃদ্ধ নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হয় তাঁর। চক্ষু চড়কগাছ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের।
পরিবার স্তব্ধ, আত্মহত্যার কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা
রোগীর বৌমা অপু দাস বলেন, বুধবার দুপুরেও আমরা ওঁকে দেখে গিয়েছি। অনেকটাই সুস্থ লাগছিল। কথা বলেছেন আমাদের সঙ্গে। রাতে পুলিশ ফোন করে বলে আত্মহত্যার খবর। আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না, উনি কেন এমন করলেন।
সিঁড়ির দরজা খুলেই বিপত্তি, খোদ স্বীকারোক্তি হাসপাতাল সুপারের
হাসপাতালের সুপার ধীমান মণ্ডল জানিয়েছেন, তিনতলার ছাদে ওঠার দরজা সাধারণত তালাবন্ধ থাকে। তবে পূর্ত দফতরের কাজের জন্য বুধবার দরজা খোলা হয়েছিল। সেই সুযোগেই বৃদ্ধ উপরে উঠে পড়েন। আমরা বুঝে ওঠার আগেই ঝাঁপ দেন তিনি।
প্রহরায় গাফিলতি? উঠছে প্রশ্ন, তদন্তে নামল পুলিশ
একদিকে যেমন পূর্ত দফতরের পরিদর্শনের সময় বৃদ্ধের ছাদে ওঠা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন, তেমনই হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও তৈরি হয়েছে চাপানউতোর। পুলিশ ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে বলে জানানো হয়েছে।
মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে, রিপোর্টের অপেক্ষায় হাসপাতাল
ঘটনার পর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানাচ্ছে পুলিশ। যদিও প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যাই মনে করা হচ্ছে। ঘটনার জেরে হাসপাতাল চত্বরে তৈরি হয়েছে চরম চাঞ্চল্য।