এশিয়া কাপ সুপার-৪: শ্রীলঙ্কার অদম্য জয়ের ধারা ভাঙতে পারবে কি বাংলাদেশ?

এশিয়া কাপ সুপার-৪: শ্রীলঙ্কার অদম্য জয়ের ধারা ভাঙতে পারবে কি বাংলাদেশ?

এশিয়া কাপ ২০২৫-এর প্রথম সুপার-৪ ম্যাচটি শনিবার শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের মধ্যে খেলা হবে। শ্রীলঙ্কা এখনও পর্যন্ত অপরাজিত রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে এখানে পৌঁছেছে। উভয় দলই জয় দিয়ে দুর্দান্ত সূচনা করতে চাইবে।

SL vs BAN: এশিয়া কাপ ২০২৫-এর প্রথম সুপার-৪ ম্যাচটি শনিবার বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে খেলা হবে। উভয় দলই গ্রুপ পর্ব থেকে সুপার-৪-এ উঠেছে। যেখানে শ্রীলঙ্কা গ্রুপ-বি-তে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে সমস্ত ম্যাচ জিতেছে, সেখানে বাংলাদেশ উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে পরবর্তী রাউন্ডে উঠেছে। এই ম্যাচে জয় লাভ করে উভয় দলই সুপার-৪-এর শুরুটা শক্তিশালীভাবে করতে চাইবে।

শ্রীলঙ্কার এখনও পর্যন্ত অভিযান অত্যন্ত শক্তিশালী

শ্রীলঙ্কা দল গ্রুপ পর্বে তাদের ছন্দ এবং আত্মবিশ্বাস উভয় দিয়েই মুগ্ধ করেছে। চরিত আসালাঙ্কার নেতৃত্বে দলটি টানা তিনটি ম্যাচ জিতে গ্রুপ-বি-তে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। বাংলাদেশকে ছয় উইকেটে হারানোর পর শ্রীলঙ্কা হংকং এবং আফগানিস্তানকে যথাক্রমে চার এবং ছয় উইকেটে পরাজিত করেছে।

তবে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ে কখনও কখনও দুর্বলতাও দেখা গেছে। হংকংয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে পাথুম নিসাঙ্কার দুর্দান্ত ফিফটির পরেও দলটি এক সময় হারের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। কিন্তু বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের জোরে শ্রীলঙ্কা ফিরে আসে এবং জয় ছিনিয়ে নেয়।

শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডার উদ্বেগের কারণ

শ্রীলঙ্কার জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো তাদের দুর্বল মিডল অর্ডার। পাথুম নিসাঙ্কা ধারাবাহিকভাবে ভালো শুরু দিয়েছেন এবং তিন ম্যাচে ১২৪ রান করে দলের ব্যাটিংকে সামলেছেন। তিনি দুটি অর্ধশতকও করেছেন। তার কাছ থেকে আরও একবার দায়িত্বশীল ইনিংস আশা করা হচ্ছে।

কুশল মেন্ডিস প্রথম দুই ম্যাচে হতাশ করলেও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে তিনি ছন্দ ফিরে পেয়েছেন। কামিল মিশারাও ভালো ফর্মে আছেন। এর সত্ত্বেও অধিনায়ক আসালাঙ্কা, কুশল পেরেরা এবং দাসুন শানাকাকে নিয়মিত অবদান রাখতে হবে।

শ্রীলঙ্কার কৌশল স্পষ্ট যে তারা লক্ষ্য তাড়া করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তিনটি গ্রুপ ম্যাচেই দলটি রান তাড়া করে জয়লাভ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে টস জিতলে শ্রীলঙ্কা আরও একবার এই পথ অবলম্বন করার চেষ্টা করবে।

বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ে ভারসাম্য শক্তিশালী

যদি শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ে কিছুটা দুর্বলতা থাকে, তবে তার ক্ষতিপূরণ করে দলের বোলিং এবং ফিল্ডিং। নুয়ান থুশারা-এর মতো ফাস্ট বোলার এখনও পর্যন্ত পাঁচটি উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের শীর্ষ বোলারদের মধ্যে স্থান পেয়েছেন। ফাস্ট বোলারদের পাশাপাশি স্পিন বিভাগও ভালো করছে।

ফিল্ডিংয়ে শ্রীলঙ্কা শক্তি এবং শৃঙ্খলা উভয়ই দেখিয়েছে। হংকং এবং আফগানিস্তানের মতো ম্যাচে যখন ব্যাটসম্যানরা দ্বিধান্বিত হয়েছিলেন, তখন ফিল্ডিং এবং বোলিং ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এই কারণেই শ্রীলঙ্কাকে সুপার-৪-এর সবচেয়ে শক্তিশালী দাবিদারদের মধ্যে গণ্য করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা

বাংলাদেশের যাত্রা এত সহজ ছিল না। দলটি হংকংয়ের বিরুদ্ধে সাত উইকেটের সহজ জয় দিয়ে শুরু করেছিল। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হেরে তাদের আত্মবিশ্বাস নড়ে যায়। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আট রানের জয় তাদের সুপার-৪-এর টিকিট নিশ্চিত করেছে।

আসলে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার সৌজন্যেই সুপার-৪-এ পৌঁছেছে। যদি শ্রীলঙ্কা আফগানিস্তানের কাছে হেরে যেত, তাহলে বাংলাদেশ টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে যেত। এমন পরিস্থিতিতে, এখন বাংলাদেশের কাছে তাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত করার সুযোগ রয়েছে।

ব্যাটিং বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ

বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্বল দিক হলো তাদের ব্যাটিং। দলের শুরুতে লিটন দাস, সাইফ হাসান এবং তানজিদ হাসানের মতো খেলোয়াড়দের কাছ থেকে শক্তিশালী শুরু দরকার। মিডল অর্ডারে তৌহিদ হৃদয়-এর কাছ থেকে দায়িত্বশীল ইনিংস আশা করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ব্যাটিং ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেনি। হংকংয়ের বিরুদ্ধে জয়ে ব্যাটসম্যানরা ভালো অবদান রাখলেও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দলটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে, সুপার-৪-এর মতো বড় ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিতেই হবে।

বাংলাদেশের বোলিং গড়পরতা মানের ছিল। ফাস্ট বোলাররা শুরুতে উইকেট নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। স্পিন বিভাগ থেকে প্রত্যাশা থাকলেও তারাও নিয়মিত সাফল্য পায়নি। ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ ফেলা এবং রান আউটের সুযোগ নষ্ট করাও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হিসেবে দেখা গেছে।

লিটন দাসের অধিনায়কত্ব এখন সুপার-৪-এ সবচেয়ে বড় পরীক্ষার মুখে পড়বে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাকে সঠিক দলীয় কম্বিনেশন এবং সঠিক সময়ে বোলিং পরিবর্তন করতে হবে। টিম ম্যানেজমেন্টের সামনেও প্লেয়িং-১১ নিয়ে চ্যালেঞ্জ থাকবে। যদি ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনা হয়, তবে তার প্রভাব ম্যাচের ফলাফলের ওপর পড়বে।

Leave a comment